সর্বশেষ ১০ বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জেতার রেকর্ড ব্রাজিলের

বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ মানেই যেনো একটু ভিন্ন কিছু। বড় আর কঠিন অভিযানের শুরু হয় এখান থেকেই। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো ১৯৮২ থেকে শুরু করে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মোট ১০ বিশ্বকাপের কোনটিতেই নিজেদের প্রথম ম্যাচে হারেনি ব্রাজিল।

১৯৮২, স্পেন বিশ্বকাপ

সেভিয়াতের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ব্রাজিল জিতেছিল ২-১ গোলে।

৭৫ মিনিটে সক্রেটিস আর ৮৮ মিনিটে এদের ব্রাজিলের হয়ে গোল দুটি করেছিলেন। ইতালির বিপক্ষে ৩-১ গোলে হেরে ১৯৮২ বিশ্বকাপে সেকেন্ড গ্রুপ স্টেজ থেকে বিদায় নিয়েছিল ব্রাজিল।

১৯৮৬, মেক্সিকো বিশ্বকাপ

১৯৮৬ সালে ব্রাজিল নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলেছিল স্পেনের বিপক্ষে। মেক্সিকোর গুয়াদালাহারায় সে ম্যাচে ব্রাজিল জিতেছিল ১-০ গোলে। ৬২ মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেছিলেন সক্রেটিস।

১৯৯০, ইতালি বিশ্বকাপ

ইতালির তুরিনে সেবার ব্রাজিল প্রথম ম্যাচ খেলেছিল সুইডেনের বিপক্ষে। কারেকার জোড়া গোলে জয় ২-১ ব্যবধানে। ম্যাচের ৪০ ও ৬৩ মিনিটে গোল দুটি করেছিলেন তিনি।

সেবারের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার কাছে হেরে দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছিল ব্রাজিল।

১৯৯৪, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপ

১৯৯৪ বিশ্বকাপে রোমারিও, বেবেতো, ব্লাঙ্কো, দুঙ্গা, তাফারেলদের ব্রাজিল প্রথম ম্যাচ খেলেছিল রাশিয়ার সঙ্গে। পালো আলতোতে ব্রাজিল জিতেছিল ২-০ গোলে।

২৬ মিনিটে রোমারিওর গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর সেলেসাওরা দ্বিতীয় গোল পেয়েছিল ৫২ মিনিটের পেনাল্টি থেকে। গোল করেছিলেন রাই (সেবার রাইয়ের নেতৃত্বে ব্রাজিল যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপে গেলেও মাঝপথে রাই বাজে পারফরম্যান্সের কারণে একাদশে জায়গা হারিয়েছিলেন)। এরপর অধিনায়ক করা হয় দুঙ্গাকে। ফাইনালে রবার্তো বাজ্জো, ফ্রাঙ্কো বারেসি, পাওলো মালদিনিদের ইতালিকে টাইব্রেকারে হারিয়েছিল ব্রাজিল।

১৯৯৮, ফ্রান্স বিশ্বকাপ

ব্রাজিলকে অনেক কষ্ট করেই সেবারের প্রথম ম্যাচটা জিততে হয়েছিল। ৪ মিনিটে সিজার সাম্পাইওর গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর স্কটল্যান্ড গোল শোধ করে দিয়েছিল।

ব্রাজিল ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত জেতে ৭৩ মিনিটে স্কটল্যান্ডের বয়ডের আত্মঘাতী গোলে। টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে উঠে ব্রাজিল হারে স্বাগতিক ফ্রান্সের কাছে ৩-০ গোলে।

২০০২, জাপান-কোরিয়া বিশ্বকাপ

ব্রাজিলের পঞ্চম বিশ্বকাপ শিরোপাটা এসেছিল সেবারই। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার উলসানে নিজেদের প্রথম ম্যাচটাতে সমর্থকদের হতাশ করেছিল রোনালদো-কাফু-রোনালদিনিও-রিভালদো-রবার্তো কার্লোসরা। তুরস্কের বিপক্ষে কষ্টেসৃষ্টে এসেছিল প্রথম জয়টি।

ম্যাচের ৪৫ মিনিটে হাসান সাসের গোলে ১-০–তে এগিয়ে গিয়েছিল তুরস্ক। ব্রাজিল গোল শোধ করে ৫০ মিনিটে এসে। এরপর ৮৭ মিনিটে রিভালদো পেনাল্টি থেকে ব্রাজিলের জয়সূচক গোলটি করেছিলেন। এই ম্যাচটি রিভালদোর ফাউল পাওয়ার জন্য সেই অতি দুর্বল অভিনয়ের জন্য বিখ্যাত।

২০০৬, জার্মানি বিশ্বকাপ

ব্রাজিল সেবারের বিশ্বকাপে অচেনা প্রতিপক্ষের গ্রুপে পড়েছিল। ক্রোয়েশিয়া, জাপান আর অস্ট্রেলিয়া ছিল ব্রাজিলের গ্রুপসঙ্গী।

প্রথম ম্যাচ ছিল ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে বার্লিনে। ৪৪ মিনিটে কাকার দেওয়া গোলেই জিতেছিল ২০০২ সালের শিরোপাজয়ীরা।

দারুণ দল নিয়েও ব্রাজিল জার্মানি বিশ্বকাপে সেবার বিদায় নিয়েছিল কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে, জিনেদিন জিদানের জাদুতে ফ্রান্সের কাছে হেরে।

২০১০, দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপ

দুর্বল উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে কিছুটা ঘাম ঝরিয়েই জিততে হয়েছিল ব্রাজিলকে, ২-১ গোলে।

৫৫ মিনিটে ব্রাজিল পায় প্রথম গোল, মাইকন ছিলেন গোলদাতা। ৭২ মিনিটে দ্বিতীয় গোল করেছিলেন এলানো।

২০১৪, ব্রাজিল বিশ্বকাপ

ঘরের মাঠে বিশ্বকাপে ব্রাজিল সাও পাওলোতে প্রথম ম্যাচ খেলেছিল ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে। ম্যাচের ১১ মিনিটে স্টেডিয়াম স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল মার্সেলোার আত্মঘাতী গোলে। ২৯ মিনিটে নেইমারের গোলে খেলায় ফেরে ব্রাজিল। এরপর সেই নেইমারই নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন ৭১ মিনিটে। খেলার যোগ করা সময়ে ব্রাজিলকে ৩-১ গোলে জয় এনে দেন অস্কার।

স্বাগতিক ব্রাজিল সেবার সেমিফাইনালে উঠলেও বেলো হরিজন্তের মাঠ সেদিন দেখেছিল অভাবনীয় এক বিপর্যয়। জার্মানির কাছে ব্রাজিল হেরেছিল ৭-১ গোলে!

২০১৮, রাশিয়া বিশ্বকাপ

রাশিয়া বিশ্বকাপে রোস্তভে ব্রাজিল নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলেছিল সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে। কুতিনিওর গোলে এগিয়ে গেলেও সুইসরা শেষ পর্যন্ত ব্রাজিলকে জিততে দেয়নি। বহু বছর পর ব্রাজিল সেবারই বিশ্বকাপের সূচনায় ড্র করে বসে।

চার বছর আগে ব্রাজিলকে কোয়ার্টার ফাইনালে বিদায় করে দিয়েছিল বেলজিয়াম।