সাক্ষী না আসায় ঝুলে রয়েছে শ্লীলতাহানির মামলা

বাংলা নববর্ষের উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি এলাকায় নারীর শ্লীলতাহানির মামলায় ৯ মাসেও একজন সাক্ষী আদালতে হাজির করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। নির্ধারিত তিন ধার্য তারিখে রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষী হাজির করতে না পারায় সময়ের আবেদন করেন। ফলে আলোচিত এ মামলাটির সাক্ষী না আসায় ঝুলে রয়েছে বিচার কার্যক্রম।

তিন বছর আগে বাংলা নববর্ষের উৎসবে ঢাবির টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটকে নারীদের উপর নিপীড়ন চালায় একদল যুবক। ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ৮ লাঞ্ছনাকারীকে শনাক্ত করলেও প্রায় দেড় বছর আগে একজনকে আসামি করে চার্জশিট দেয় পিবিআই।

২০১৫ সালের ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় ওই ঘটনায় শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ বাদি হয়ে একটি মামলা করেন। নারীদের লাঞ্ছনার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ৮ জনকে শনাক্তের পর গণমাধ্যমে ছবি প্রকাশ করে পুলিশ। তাদের ধরিয়ে দিতে লাখ টাকা পুরষ্কারও ঘোষণা করা হয়।

২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বর এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক দীপক কুমার দাস। প্রতিবেদনে আসামি খুঁজে না পাওয়ার কথা বলা হয়। তবে ওই প্রতিবেদন গ্রহণ না করে মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার।

২০১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর পিবিআই-এর পুলিশ পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক একমাত্র কামালকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, তদন্তে আট লাঞ্ছনাকারীদের মধ্যে একজন আসামিকে খুঁজে পাওয়া গেছে। অপর সাত আসামিকে খুঁজে না পাওয়ায় তাদের চার্জশিটে নাম অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাদের খুঁজে পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে সম্পুরক চার্জশিট দেয়া হবে। মামলায় সাক্ষী করা হয় ৩৪ জনকে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১৯ জুন কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার। এরপর গত বছরের ৩১ আগস্ট, চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি ও ১২ ফেব্রুয়ারি মামলাটির সাক্ষীর জন্য থাকলেও কোন সাক্ষী আদালতে হাজির হননি। আগামী ৩ জুন মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। আলোচিত এ মামলার একমাত্র আসামি কামাল জামিনে রয়েছেন।

ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু এ বিষয়ে বলেন, মামলাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মামলার সাক্ষীরা কেন আদালতে হাজির হচ্ছেন না সে বিষয় আমরা দেখব। আমরা চেষ্টা করব যেন মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি হয়।

মানবাধিকার আইনজীবী সালমা আলী বলেন, এ ধরনের মামলায় দৃষ্টান্তমূলক শান্তি না হওয়ায় অপরাধ দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রের উচিত এ ধরনের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করার।