সাগরে তলিয়ে যাচ্ছে শাহপরীর দ্বীপের ঘরবাড়ি
ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’র প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে দেশের সর্ব দক্ষিণে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপের কয়েকটি গ্রাম। দ্বীপের পশ্চিম পাড়ার বেড়িবাঁধ না থাকায় গত দুই দিনে সাগরের অস্বাভাবিক জোয়ারে মসজিদসহ শতাধিক ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে।
এর মধ্যে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রায় অর্ধশতাধিক ঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব ঘরের লোকজন টেকনাফসহ অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। সাবরাং ইউনিয়নের ঘোলাপাড়া, পশ্চিমপাড়া, দক্ষিণপাড়া, মাঝরপাড়া ও জালিয়াপাড়ার ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, সমস্যা সংকটে এভাবে প্রায় বিচ্ছিন্ন জনপদে পরিণত হতে যাচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর শাহপরীর দ্বীপ। টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপে প্রায় ৪০ হাজার লোকের বসবাস। পর্যটকদের জন্য অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হয়ে উঠতে পারে যে দ্বীপ, সেটির সংকট সমাধানে যথাযথ নজর নেই কর্তৃপক্ষের।
বৃহস্পতিবার সরেজমিন দেখা যায়, দ্বীপের পশ্চিমাংশে মাঝরপাড়া, দক্ষিণপাড়া ও পশ্চিমপাড়ার ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে এসব এলাকার প্রায় হাজারো মানুষ আশ্রয় নিয়েছে দ্বীপের পূর্ব অংশে থাকা লোকজনের ঘরবাড়িতে।
তবে গত পাঁচ বছরে দ্বীপ সাগরে বিলীন হওয়ায় সেখান থেকে অন্যত্র আশ্রয়ে চলে গেছে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ। খবর পেয়ে বিকেল ৪টার সময় ওই এলাকা পরিদর্শনে গেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল হাসান ও সহকারী কমিশনার ভূমি প্রণয় চাকমা।
৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নুরুল আমিন বলেন, জোয়ারের পানি বেড়ে গত দুই দিনে প্রায় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি সাগরে বিলীন হয়ে গেছে। সাগরে বিলীন হয়ে গেছে শাহপরীর দ্বীপের একাংশ। আরও কয়েকটি গ্রামের মানুষ ভাঙনের আতঙ্ক নিয়ে দিন কাটাচ্ছে। যে সব স্থান দিয়ে পানি ঢুকছে সে সব স্থানে বালির জিও ব্যাগ ও বস্তা দিয়ে এলাকা রক্ষা করতে হবে বলে জানান তিনি।
কক্সবাজার পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান বলেন, ১০৬ কোটি টাকার বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ চলছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে। শাহপরীর দ্বীপের প্রায় ৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে ৫৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজও দ্রুত সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কাজ চলছে।
এর মধ্যে বৃহস্পতিবার জোয়ারের প্রভাবে ওই এলাকার কিছু বসতঘর সাগরে বিলীন হয়েছে বলে শুনেছি। তবে যে খোলা বাঁধ থেকে সাগরের পানি ঢুকছে সেখানে জিও ব্যাগ বসানো হয়েছিল। যে স্থান দিয়ে পানি ঢুকছে সেখানে আবারও বালির জিও ব্যাগ ও বস্তা বসানো হবে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিউল হাসান বলেন, শাহপরীর দ্বীপে সাগরে জোয়ারের পানিতে বিলীন হওয়া সমজিদসহ ঘরবাড়ি পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সহায়তার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে তালিকা পাঠানো হবে এবং যাতে আর কোনো ঘরবাড়ি সাগরে বিলীন হয়, সে ব্যবস্থা করা হবে। হুমকিতে রয়েছে ওই এলাকার আরও কয়েক শতাধিক পরিবার।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন