সাগর থেকে সেই সাংবাদিকের কাটা মাথা উদ্ধার

ডেনমার্কের এক ‘আবিষ্কারকের’ নিজের তৈরি সাবমেরিনে বেড়াতে গিয়ে নিখোঁজ সুইডিশ নারী সাংবাদিকের কাটা মাথা উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর আগে তার দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল।

কোপেনহাগেনের দক্ষিণে কোগ বে থেকে ডুবুরিরা সাংবাদিক কিম ওয়ালের মাথা, পা এবং কাপড়চোপড় উদ্ধার করে। খবর: বিবিসি বাংলা।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, এর কাছেই গত ২১ আগস্ট কিম ওয়ালের দেহ পাওয়া যায়। কাটা মাথাটি কিম ওয়ালেরই এবং তাতে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না।

জানা গেছে, সৌখিন আবিষ্কারক পিটার ম্যাডসেনের সাবমেরিনে বেড়াতে গিয়েছিলেন সাংবাদিক কিম ওয়াল। এ নিয়ে একটি রিপোর্ট লেখার ইচ্ছে ছিল তার। সেদিনই তাকে সবশেষ জীবিত দেখা গিয়েছিল। এর পর থেকে কিম ওয়ালের কোনো খোঁজ না পাওয়ায় তার ছেলেবন্ধু পুলিশে খবর দেন।

পিটার ম্যাডসেনের বিরুদ্ধে কিম ওয়ালকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে তাকে খুন করা এবং তার মৃতদেহ টুকরো টুকরো করার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন তিনি।

একজন সৌখিন ইঞ্জিনিয়ার পিটার ম্যাডসেন। তিনি সাবমেরিন এবং মহাশূন্যগামী রকেট নির্মাতা। তার একটি নিজস্ব ল্যাবরেটরিও আছে। পিটার ম্যাডসেন নিজেই ইউসি-থ্রি ধরনের একটি নটিলাস সাবমেরিন বানিয়েছেন যা গত শুক্রবার ডেনমার্কের উপকূলে ডুবে যায়।

পুলিশ কর্মকর্তা মোলার জেনসেন বলেন, ‘আমরা যে ব্যাগগুলো পেয়েছি তার একটিতে কিম ওয়ালের কাপড়চোপড়, অন্তর্বাস, মোজা এবং জুতো ছিল। তাছাড়া ছিল একটি ছুরি। ব্যাগগুলোতে গাড়ির পাইপ ভরে তা ভারি করা হয়েছিল যাতে তা ভেসে না ওঠে।’

কিম নিখোঁজ হওয়ার পর প্রথমে সাবমেরিনটির নির্মাতা ম্যাডসেন বলেছিলেন, তিনি তাকে নিরাপদে কোপেনহাগেনে নামিয়ে দিয়েছিলেন। পরে তিনি আবার তার গল্প পরিবর্তন করে বলেন, সেখানে একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা হয়েছিল এবং তিনি কিম ওয়ালকে সাগরে কবর দিয়েছিলেন।
ম্যাডসেন আরো দাবি করেন, এর পর তিনি তার সাবমেরিনটি ডুবিয়ে দিয়ে নিজে আত্মহত্যা করার পরিকল্পনাও করেছিলেন।

এছাড়া ম্যাডসেনের দাবি অনুযায়ী সাবমেরিনের গোল দরজায় মাথা ঠুকে যাওয়ায় কিম ওয়াল মারা গিয়েছিলেন। অথচ কাটা মাথাটিতে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাননি তদন্তকারীরা।

কিম ওয়ালের মরদেহ পাওয়ার পর ময়নাতদন্ত করে দেখা যায়, তার যৌনাঙ্গ এবং পাঁজরে ছুরির আঘাত রয়েছে যা হয়তো মৃত্যুর সময় বা তার পরই করা হয়েছিল।

সরকারি কৌঁসুলি আদালতে বলেছেন, ম্যাডসেনের একটি কম্পিউটারের হার্ডড্রাইভে একজন নারীকে জীবন্ত অবস্থায় মাথা কাটা হচ্ছে এমন একটি দৃশ্যের ভিডিও পাওয়া গেছে। তবে ওই হার্ডড্রাইভ তার নয় বলে দাবি করেছেন ম্যাডসেন।

পিটার ম্যাডসেনকে চার সপ্তাহের জন্য আটক করা হয়েছে। নৃশংস ওই ঘটনার তদন্ত চলছে।