সাজিদ’র বিদেহী আত্মার প্রতি সমবেদনা জানিয়ে ইবিতে শোক র‍্যালি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী হাফেজ সাজিদ আব্দুল্লাহ’র বিদেহী আত্মার প্রতি সমবেদনা জানিয়ে শোক র‍্যালি করেছে আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ।

এসময় তারা গতদিনের আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের দেওয়া ১৫ দফা বাস্তবায়নে জোর দাবি জানান।

রবিবার (২০ জুলাই) সকাল ১০ টায় প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে র‍্যালি শুরু হয়।

র‍্যালি নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শুরুর স্থানে এসে সমাবেত। পরে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।

বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাছির উদ্দিন মিঝির নেতৃত্বে বিভাগের শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী র‍্যালিতে অংশ নেয়।

এছাড়াও থিওলজি অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. এইচ.এ.এন.এম. এরশাদ উল্লাহ, উম্মুল মুমিনীন আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. এ.কে.এম. রাশেদুজ্জামান ও বিভাগের অধ্যাপক ড. লোকমান হোসেন সহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাছির উদ্দিন মিঝি বলেন, আল-কোরআন বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী সাদিক আব্দুল্লাহর অকাল মৃত্যুতে এবং তার রহস্যজনক মৃত্যুর প্রতিবাদে শোক র‍্যালিতে আমি প্রথমত ধন্যবাদ জানাতে চাই যারা সাজিদ আব্দুল্লাহর জন্য বিভিন্ন স্তরের সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। আল কোরআন বিভাগের সকল শিক্ষক এবং ছাত্রদের ধন্যবাদ জানাতে চাই তারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। সাজেদ আবদুল্লাহ আকস্মিক মৃত্যু যাতে অন্ধকারে মিলিয়ে না যায় এইজন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরের তদন্ত কমিটির কাজ শুরু করে দিয়েছে।

এসময় তিনি আরো বলেন, সাজিদ আব্দুল্লাহ এলাকাবাসীর কাছে আমরা কমিটমেন্ট দিয়ে এসেছি, যতদিন পর্যন্ত সাজিদের মৃত্যুর রহস্য আমাদের কাছে উন্মোচিত না হবে ততদিন আল-কোরআন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষকমন্ডলী থেমে থাকবে না। সাজিদ আব্দুল্লাহ আমার সন্তান, আমার সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। এখানে যে কোন লোকের চাইতে আমার রক্তক্ষরণ সবচাইতে বেশি। আমার রক্তক্ষরণকে সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করে ছাড়বো। সত্য এবং সত্যকে উন্মোচন করার জন্য সব ধরনের সাহায্য আল-কোরআনের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক মন্ডলীরা করবে ইনশাল্লাহ।

এবিষয়ে বিভাগটির শিক্ষক ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, আমার প্রিয় ছাত্র সাজিদ আব্দুল্লাহ’র মৃত্যতে আমিসহ পুরো ক্যাম্পাস শোকাহত। আমি চাই আর কোন শিক্ষার্থীর সাথে যেন সাজিদের মত ঘটনা না ঘটে। গতকাল শিক্ষার্থীদের দেওয়া দাবিগুলো আমরা মেনে নেয়েছি এবং ধাপে ধাপে কাজগুলো সম্পন্ন করবো। সাজিদের ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত কাজে যদি কেউ বাধা দেয় তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। এরকম কোন ঘটনা ঘটলে আমাকে জানাবেন।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ জুলাই (বৃহস্পতিবার) বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শাহ আজিজুর রহমান হল সংলগ্ন পুকুরে সাজিদ আব্দুল্লাহর মরদেহ ভেসে থাকতে দেখে শিক্ষার্থীরা। পরে বিকেল সাড়ে ৬ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও ইবি থানা পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। সাজিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শহীদ জিয়াউর রহমান হলের ১০৯ নং রুমে থাকতেন। তার বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলায়।