সাতক্ষীরায় এনসিপির পথসভায় হিট স্ট্রোকে ১৫ সাংবাদিক-শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি

সাতক্ষীরায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মসূচিকে ঘিরে চরম অব্যবস্থা, তীব্র গরম ও ঠেলাঠেলির মধ্যে পড়ে অন্তত ১৫ জন সাংবাদিক ও শিক্ষার্থী হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছেন।
শনিবার (১২ জুলাই) দুপুরে শহরের শহীদ আসিফ চত্বরে আয়োজিত প্রধান পথসভায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ঘটনার পর সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। তাদের অভিযোগ, এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সফরের মতো বড় কর্মসূচির জন্য পূর্বপ্রস্তুতি ও পর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনা ছিল না।
সাংবাদিকরা জানান, তারা সকাল ৮টায় খুলনা রোড মোড়ে এসে উপস্থিত হন। পরে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা তালা উপজেলার কুমিরা ফুটবল মাঠে পৌঁছেছেন এবং সেখানে সংক্ষিপ্ত পথসভা হওয়ার কথা রয়েছে।
ফলে উপস্থিত সাংবাদিকদের মধ্যে সেখানে রওনা হন। কিন্তু প্রায় দুই ঘণ্টা অপেক্ষার পর সেখানে কোনো সভা না করেই নেতারা আবার সরাসরি সাতক্ষীরা শহরে ফিরে আসেন। এতে সাংবাদিকরা একদিকে সময় ও শক্তি নষ্ট করেছেন, অন্যদিকে দুই জায়গায় দৌড়ঝাঁপ ও প্রচণ্ড গরমে তারা শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন।
পথসভা শুরুর আগেই শুরু হয় বিশৃঙ্খলা। তীব্র রোদে ক্লান্ত হয়ে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন থেকে ঠেলাঠেলি, গরম, বিশৃঙ্খলার মধ্যে একে একে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সংবাদকর্মীরা।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা পোস্টের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ইব্রাহিম খলিল, যমুনা টেলিভিশনের আকরামুল ইসলাম, এখন টিভির আহসান রাজীব, এটিএন বাংলার ক্যামেরা পারসন ইয়ারুল ইসলাম, এখন টিভির মাসুদ রানা মনা, সাংবাদিক জাহাঙ্গীর সরদার, গাজী হাবিব, ইদ্রিস আলী, রিজাউল করিম, এসএম বিপ্লব হোসেন, হাবিবুর রহমান সোহাগ, তাইজুল ইসলাম, আবু জাফরসহ আরও অনেকে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মীর মাহফুজ বলেন, “তীব্র গরমে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে একের পর এক মানুষ অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছিলেন। অনেককে সম্পূর্ণ ক্লান্ত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ৭-৮ জনকে ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা কিছুটা সুস্থ হলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
সাংবাদিকরা অভিযোগ করেন, এত বড় একটি কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেবেন তা আগে থেকেই জানা ছিল। কিন্তু এনসিপির স্থানীয় আয়োজকরা যথাযথ প্রস্তুতি না নেওয়ায় বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। ছিল না কোনো নিরাপত্তা বলয়, পর্যাপ্ত ছায়া, পানির ব্যবস্থা বা সাংবাদিকদের জন্য আলাদা জায়গা। এসব কারণেই একের পর এক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন।
তারা আরও বলেন, আজকের দিনটি ছিল প্রচণ্ড তাপদাহপূর্ণ। তার ওপর খুলনা রোড মোড় এবং কুমিরা—দুই জায়গায় ঘুরে আবার মূল স্থানে ফিরে আসা, দীর্ঘ সময় রোদে দাঁড়িয়ে থাকা সব মিলিয়ে তারা ক্লান্ত হয়ে পড়েন। এর দায় আয়োজকদের অব্যবস্থাপনাকেই দিচ্ছেন তারা।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন