সাতক্ষীরায় শহীদ আসিফের কবর জিয়ারতে নবাগত ডিসি, এসপি

টানা বৃষ্টি উপেক্ষা করে কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঢাকায় নিহত শিক্ষার্থী আসিফ হাসানের কবর জিয়ারত করলেন সাতক্ষীরা নবাগত জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ ও মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম মুনীর।

রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে নিহত শিক্ষার্থীর কবর জিয়ারত ও পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করেন এ দুই কর্মকর্তা।

এসময় দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান, দেবহাটা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ইলিয়াসুর রহমান, নওয়াপাড়া ইউপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোনায়েম হোসেন, শহীদ আসিফের পরিবারের সদস্যরা, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারী মোজাহিদ বিন ফিরোজসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহত আসিফ হাসানের আত্নার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মোনাজাত করা হয়।

পরে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ ও মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম মুনীর শিক্ষার্থী আসিফ হাসানের কবর জিয়ারত করে তার পরিবারের সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ করেন।

এসময় নবাগত জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার আসিফের পরিবারকে বলেন, আপনার ছেলে দেশের জন্য মারা গেছে। তার রক্ত বৃথা যায়নি। আমরা আসিফকে ভুলে যায়নি। সেজন্য বৃষ্টি উপেক্ষা করে আপনাদের পাশে এসেছি। আমরাদের আসিব হারাবে না। যতদিন দেশ থাকবে আসিফ সহ বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহত সকলকে স্মরণ রাখবে বাংলাদেশ। যেকোন সমস্যায় আপনারা আমাদের কাছে যাবেন আমরা আপনার ছেলে মত পাশে থাকবো।

উল্লেখ্য যে, আসিফ হাসান ঢাকার উত্তরার নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত ১৮ জুলাই দুপুর ১২টার দিকে ছাত্রদের পানি খাওয়ানোর সময় গুলি লেগে আহত হয়। পরে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। ওই দিন রাতে আসিফের মরদেহ বাড়িতে আনা হয়। ওই সময় স্থানীয় এমপি, সরকারি ভাবে ও আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাকর্মীদের প্রবল চাপের মুখে ১৯ জুলাই শুক্রবার বাদ জুমা দাফন করার কথা থাকলেও ভোরে ফজরের নামাজের পর স্বল্প সংখ্যক মানুষের উস্থিতিতে জানাযা নামাজ শেষে পারিবারিক করবস্থানে দাফন করা হয়। এমনকি ওই এলাকায় কোন রকম মিছিল, প্রতিবাদ করতে দেওয়া হয়নি স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও ইউপি চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে। কবর জিয়ারত কিংবা আসিফের পরিবারকে নজরদারিতে রাখা হয়।
এছাড়া আসিফের জমজ ভাই সহ পরিবারের সদস্যদের মিডিয়ার সামনে কথা বলার নিধেষ ছিল তৎকালিন ওসিসহ আওয়ামী নেতাদের।
পরবর্তীতে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন মানুষের ঢল নামে আসিফের বাড়িতে। প্রতিদিন বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এসে আসিফের কবর জিয়ারত করে। এখন আর কোন স্বৈরাচারী বা প্রভাবশালী নেতার চিহ্ন নেই গোটা এলাকায়। স্বজন হারানো পরিবারটিতে শুধু আসিফের শুন্যতা।