সাতক্ষীরায় শিক্ষার্থী পরিচয়ে বিভিন্ন অফিসে গিয়ে অসদাচরণের অভিযোগ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হন। সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলন করতে নেমে শেষ পর্যন্ত সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে প্রাণ হারান বহু ছাত্র-জনতা।

এরই মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনে অংশগ্রহণকারী পরিচয় দিয়ে কিছু অছাত্র অবৈধ সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের জন্য সাতক্ষীরার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি অফিসে গিয়ে অসদাচরণ করায় ভামূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের।

সাতক্ষীরা সদরের বাটকেখালি এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, শিক্ষার্থীদের নাম ভাঙিয়ে কিছু অছাত্র জেলা শহর ও বাইরে বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি অফিসে গিয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করছেন। অফিসের দুর্নীতি ও অনিয়মের কথা বলে কর্মকর্তাদের নানাভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে।

সাতক্ষীরা সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) অতীশ সরকার বলেন, কয়েক দিন আগে কয়েকজন শিক্ষার্থী আমার অফিসে এসেছিলেন। তারা অফিসের বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন। আমি তাদের বিভিন্ন বিষয়ে বুঝিয়ে বলি।

মৌলভীবাজারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক কমিটি বাতিল সাতক্ষীরা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, কয়েকজন শিক্ষার্থী আমার অফিসে এসে বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছিলেন। অফিসে এসে তারা আমার সঙ্গে দেখা না করেই পাসপোর্ট করতে আসা বিভিন্ন ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে সুবিধা-অসুবিধার বিষয়ে জানার চেষ্টা করেন। পরে তারা চলে যান। আমিও তাদের এই কর্মকাণ্ডকে স্বাগত জানাই।

তিনি বলেন, আমি এখানে যোগদানের পর থেকে অফিসের সবাইকে তাদের কাজের জবাবদিহিতার বিষিয়টি নিশ্চিত করতে বলেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় গত ১৩ আগস্ট বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে শিক্ষার্থী পরিচয়ে কয়েকজন আমার অফিসে এসে এক অফিস সহকারীকে ধরে সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যায়। তারা কেউ ছাত্র ছিল না। সেখান থেকে খবর পেয়ে আমি নিজে সেনা ক্যাম্পে গিয়ে অফিস সহকারীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসি।

মেহেদী হাসান আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা একটি সফল গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছে। তাদের অর্জিত এ সাফল্য ধরে রাখতে হলে স্থানীয় সমন্বয়কদের আরও সজাগ থাকতে হবে। যেন অতি উৎসাহী হয়ে কোনো অছাত্র তাদের অর্জনকে ম্লান করতে না পারে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাতক্ষীরার সমন্বয়ক মো. নাজমুল হোসেন রনি কালবেলাকে বলেন, আমিও এমন খবর শুনেছি। শিক্ষার্থী পরিচয়ে বেশ কয়েকজন সাতক্ষীরা সদর ভূমি অফিস ও আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসসহ বেশ কয়েক জায়গায় গিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে অসদাচরণ করেছে।

তিনি বলেন, আমি দ্বিধাহীনভাবে বলছি, এসব যারা করছে তাদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের কোনো সম্পর্ক নেই। পুনরায় এমনটি কোথাও হলে তাদের ধরে সেনা ক্যাম্পে অথবা নিকটস্থ থানায় হস্তান্তর করার জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে অনুরোধ করা হলো।