সাতক্ষীরার আলীপুরে এক নারী সোনার গহনা দিয়ে পেল তামার মুদ্রা!

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আলিপুর ইউনিয়নের তালবাড়িয়া গ্রামের আফছার মোড়লের স্ত্রী তহমিনা খাতুন কাজল প্রতারণার শিকার হয়ে হারিয়েছেন স্বর্ণালংকার।

এই প্রতারক থেকে সাবধান! ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় সাতক্ষীরা সঙ্গীতা মোড় সংলগ্ন এলাকা থেকে। প্রতারণার শিকার তহমিনা খাতুন কাজল জানান, আমার এক আত্মীয় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি আছে।

সেকারণে আমি ও আমার চাচী সদর হাসপাতালে রোগী দেখতে যাই। বাড়ি ফেরার জন্য খুলনা রোড মোড় হতে একটি ইজিবাইকে উঠি এবং চালককে আলিপুর হাটখোলায় নামার কথা বলি। তখন অল্প বৃষ্টি হচ্ছিল। ইজিবাইক চালক আমাদের নিয়ে সংগ্রাম হাসপাতালের একটু আগে নির্জন স্থানে রেখে গাড়ির সামনের গ্লাসে থাকা পানি মুছতে গাড়ি থামায়। গাড়ি মোছার সময় চালক বলেন, আপা রাস্তায় আমি একটা জিনিস পেয়েছি কাগজে মোড়ানো আছে। খুলে দেখেন তো। আমি কাগজটি খুলে দেখি স্বর্ণের কয়েনের মতো দেখতে একটা পয়সা, সঙ্গে একটি মেমো আছে। চালক গাড়ি চালাতে চালাতে বলেন, আপা মেমোটা পড়েন তো, আমি তখন মেমোটা পড়ি মেমোয় লেখা আছে, শ্রী জুলেলার্স, নিপন বাবু স্বর্ণকার আমার নমস্কার নিবেন, আমি না যেতে পেরে আমার ভাতিজার কাছে দুই (২) ভরি থান সোনার পয়সা পাঠাইয়া দিলাম সুন্দর করিয়া দুইখানা চেইন মালা বানাইয়া দিবেন, ইতি আপনার বন্ধু যতীন বাবু সাহা, ২৬নং রবিন্দ্র রোড কলিকাতা ভারত।

পড়া শোনার পরে চালক বলেন, আপা আমার মনে হচ্ছে এইটা স্বর্ণের কয়েন। এর অনেক মূল্য। বলতে বলতে সঙ্গীতা মোড় পার হওয়ার একটু পরেই নির্জন স্থানে গাড়ি থামায়। সেখানে রাস্তার পাশে অচেনা ৪জন লোক দাঁড়িয়ে ছিল। তখন চালক ঐ ৪জন লোকদের জিনিসটা দেখান তারাও বলেন, এটা স্বর্ণের কয়েন। কয়েক লক্ষ টাকা দাম হবে। ৪জন লোকের মধ্যে ১জন লোক চালককে বলেন, ভাই পয়সাটি যদি আমাকে দেন তাহলে আমি আপনাকে একখানা স্বর্ণের চেইন ও একজোড়া কানের দুল দিব। তখন লোকটা বাড়ি থেকে এসে দিচ্ছি বলে চলে যায়। তারপর বাকি ৩জন লোকের মধ্যে সকলেই বলেন, প্রকৃত হকদার হলো আপা, আপা আপনি এটা নিন মূল্য অনেক টাকা ঐ লোকটাকে দিব কেন? আমি তাদের অভিনব কায়দার কথা বুঝতে না পেরে আমার নিজের গলায় থাকা ১ভরি ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন ও ৬আনা ওজনের একজোড়া কানের দুল চালককে দিয়ে স্বর্ণের কয়েনটি নিয়ে নেই। চালক আমার কানে কানে বলেন, আপা অনেক মূল্যের জিনিস বলা যায়না আপনি চুপি চুপি অন্য ইজিবাইকে চলে যান। তখন আমি অন্য গাড়িতে বাড়ি এসে আমার স্বামীকে বলিলে তখন জানাজানি হলে দেখা যায় স্বর্ণের কয়েনটি স্বর্র্ণ নয় তামা। তিনি আরও জানান, আমি যে ভুল করেছি অন্যরা যেন এই প্রতারক চক্রের খপ্পরে না পড়ে। প্রতারক হতে সাবধান!

প্রসঙ্গত: কিছুদিন আগে শহরের কাটিয়া এলাকায় ব্রহ্মরাজপুরের এক বৃদ্ধার নিকট থেকে একই স্টাইলে সোনার গহনা হাতিয়ে নিয়েছিল এক ছদ্মবেশী প্রতারক ভ্যানচালক।