সাতক্ষীরার কলারোয়ায় অসহায় শিশুর মুখে হাসি ফোটালেন ডিসি-ইউএনও

ময়লা ও ছেঁড়া টি-শার্ট, পরনে ছেঁড়া হাফ প্যান্ট, পায়ে জুতা নেই। মাথার চুলগুলো রুক্ষ, শরীরে দীর্ঘদিনের ক্লান্তির ছাপ। তাকে দেখলে প্রথমেই বুঝা যায়- জীবন ও জীবিকার চাপে কেমন অসহায়ভাবে বড় হচ্ছে সে। নাম তার আরাফাত হোসেন, বয়স মাত্র ১০। বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া কেরেলকাতা ইউনিয়নে। অসুস্থ বাবা কামরুল ইসলাম ও তার মা দিন পার করেন ভিক্ষা করে। ছোট বোনটি আরেকটি মুখ, যার জন্য কিছুই করার সামর্থ্য নেই পরিবারের।

কলারোয়া উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে ক্লাইমেট স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন করতে এসে জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদের সামনে হঠাৎ চলে আসে আরাফাত নামের সেই ছোট্ট অসহায় ছেলেটি। চোখ পড়ে ছেলেটির পায়ে জুতা নেই,
নোংরা পোশাক তাও ছেঁড়া। অনেক পরিপাটি পোশাকে ঘেরা ভিড়ে ছেঁড়া জামা-প্যান্টে আরাফাত যেন কষ্টের এক প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়। যথারীতি ছেলেটির দিকে চোখ পড়ে জেলা প্রশাসকের। তিনি ছেলেটিকে কাছে ডেকে নাম-পরিচয়-ঠিকানা জিজ্ঞাসা করলেন, জানতে পারলেন ছেলেটির চরম অসহায়ত্বের কথা। তাৎক্ষনিক তিনি পাশে থাকা কলারোয়ার ইউএনও জহুরুল ইসলামকে ছেলেটার জন্য জামা-প্যান্ট-জুতা কিনে দেয়ার নির্দেশনা দিলেন।

দ্রুত সেই নির্দেশ বাস্তবায়ন করলেন কলারোয়ার ইউএনও। নতুন জামা-প্যান্ট-জুতা পড়িয়ে দিলেন সেই ছোট্ট অসহায় শিশু আরাফাতকে। তখন তার মুখে দেখা যায় প্রাণখোলা হাসি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহুরুল ইসলাম জানান, ‘সকল আরাফাতদের মুখে যদি আমরা এভাবে হাসি ফোটাতে পারি, তাহলে আমাদের কাজ সফল হবে। আমরা চাই সকল আরাফাতই ভালো থাকুক।’

আসন্ন ঈদে হয়তো আরাফাতের মতো অনেকের মুখে হাসি নেই, নতুন জামার গন্ধ নেই, পায়ে জুতাও নেই। সমাজের সামর্থ্যবানরা যদি একটু হাত বাড়িয়ে দেয়, তাহলে হাজারো শিশুর জীবন বদলে যেতে পারে।