সাতক্ষীরার কলারোয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শুধু নেই আর নেই, জোড়াতালি দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা
সাতক্ষীরার কলাররোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে শুধু নেই আর নেই এ পরিনত হয়েছে। এখানে মেডিক্যাল অফিসার পদে ডাক্তার নেই ২৬ জন,জুনিয়র কনসালন্টেন ১০টি মধ্যে ১ জন ও নেই।সহকারি সার্জন পদে ডাক্তার নেই ৭ জন। গাইনি সার্জারীসহ ১০ টি বিভাগে কোন ডাক্তার নেই। ইনডোর মেডিক্যাল, ইমারজেন্সী মেডিক্যাল অফিসার,হোমিও ইউনানী আর্য়ূবেদী ,প্যাথলজী, রেডিওলজিষ্ট,এ্যানেসথেটিক কেউ নেই। অর্থাৎ করারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এখন নেই আর নেই এর সমাহারে পরিনত হয়েছে।
কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাহবুবর রহমান জানান, কলারোয়া উপজেলাতে মোট জনসংখ্যা ২ লক্ষ ৬৩ হাজার ৮৩৫ জন। সে অনুপাতে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জুনিয়র কনসালটেন্ট পদ রয়েছে ১০ টি। সহকারী সার্জন পদ রয়েছে ১২ টি, মেডিক্যাল অফিসার পদ ৩ টি, ইমারজেন্সী মেডিক্যাল পদ ১টি, ইনডোর মেডিক্যাল অফিসার পদ ১টি, হোমিও ইউনানী আর্য়ূবেদী পদ ১টি, প্যাথলজী পদ ১টি,এ্যানেন্সথেটিক পদে ১ টি।
ইউনিয়ন পর্যায়ে মেডিক্যাল অফিসারের পদ রয়েছে ১৪ টি। হাসপাতালের অফিসের একটি সূত্র থেকে জানা যায়, জুনিয়র কনসালটন্ট ১০জনের মধ্যে একজন ডাক্তার ও নেই। সহকরী সার্জন ১২ জনের মধ্যে ৭ জন নেই, মেডিক্যাল অফিসারের ৩ জনের মধ্যে ১ জন ও নেই, ইমারজেন্সী, ইনডোর মেডিক্যাল অফিসার,হোমিও ইউনানী আর্য়ুবেদী প্যাথলজিষ্ট এ্যানেসথেটিক পদে কেউ নেই।
এ ছাড়া মঞ্জুরীকৃত গাইনি,ই,এন,টি, আর্থো সার্জারী, কার্ডিওলজী, চক্ষু, শিশু, চর্ম ও যৌন, মেডিক্যাল অফিসার ও আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার পদে কোন ডাক্তার নেই। একজন মেডিকেল অফিসারকে প্রেসনে আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা গেছে, ৫০ শষ্যা বিশিষ্ট কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রতিদিন শত শত রোগী ডাক্তার না পেয়ে সরকারী চিকিৎসা সেবা থেকে বি ত হচ্ছেন। আগে হাসপাতালটিতে প্রতিদিন গড়ে ৫’শ থেকে ৭’শ জন রোগী আসতেন। এখন আসেন মাত্র ১৩০ থেকে ১৫০ জন। জরুরী বিভাগে আসেন ২৫ থেকে ৩০ জন।
এ থেকে ভর্তি হন ১০ থেকে ১২ জন।হাসপাতালে একটি অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার আছে। সার্জারী এবং এ্যানেসথেসিয়া ডাক্তার না থাকার কারনে দীর্ঘদিন ধরে কোন প্রকার অপারেশন করা হয় না। এর ফলে অপারেশন থিয়েটারের মহামূল্যবান মেশিন পত্র অকেজো হয়ে পড়েছে। প্যাথলজিষ্ট, রেডিওলজিস্ট না থাকার কারনে এক্সরে মেশিন ও প্যাথলজির ইনস্্টুমেন্টে মরিচা ধরেছে।
হাসপাতালের ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে প্রতিটি বেডে রোগী আছেন। অনেকে বেড না পেয়ে বারান্দাতে অবস্থান করছেন। ভর্তি রোগীরা অভিযোগ করেন,হাসপাতাল থেকে তেমন কোন ঔষধ দেওয়া হয় না। অধিকাংশ ঔষধ বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়। হাসপাতালের খাবার অত্যান্ত নি¤œ মানের,ঠিক মত বেড,মশারী,বালিশ দেওয়া হয়না।
যে গুলো দেওয়া সেগুলো ময়লা এবং দূর্গন্ধযুক্ত থাকে। টয়লেট বাথরুম অত্যান্ত নোংরা,ঠিক মত পরিস্কার পরিছন্ন করা হয় না। হাসপাতালে ভর্তি একাধিক রোগির স্বজনেরা জানান, এখানে একটা রোগ সারতে আসলে আরো দু তিনটি রোগ সাথে নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়।
জরুরী বিভাগে হাত পা ব্যান্ডেজ করা রোগীর ব্যান্ডেজ খোলার জন্য হাসপাতেলের পুকুর ব্যবহার করা হয়।
জরুরী বিভাগে কর্মরত উপ সহকারী কমিউনিটি ডাক্তার এবং তাদের সহকারীগণ ব্যান্ডেজ না কেটে পুকুরের পানিতে ভিজিয়ে বসে থাকার পরামর্শ দেন। ফলে রোগীরা অনেকটা নিরুপায় হয়ে পুকুরের ঘাটে ব্যান্ডেজ করা হাত বা পা পানিতে ভিজিয়ে বসে থাকেন। পানিতে ব্যান্ডেজ নরম হয়ে গেলে নিজেরাই খুলে ফেলে ঘাটের আশে পাশে ফেলে দেন। এর ফলে ঐ পুকুরটি এখন গোসল করার অনুউপযোগী হয়ে পড়েছে।
এ ছাড়া হাসপাতালের সামনে অনেক গুলো মরা গাছের শুখনো কাঠ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। যেখানে সেখানে বিভিন্ন প্রকার যানবাহন রাখা হয়েছে। আর এ কারনে হাসপাতালের স্বাভাবিক পরিবেশ মারাত্বক ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জানান, হাসাতালের বিরাজমন সমস্যাগুলো অচিরেই সমধান করা হবে এবং শূন্য পদে গুলোর বিপরীতে ডাক্তার নিয়োগ দেওয়ার জন্য গত ১৬ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসনের নিকট আবেদন করা হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন