সাতক্ষীরার কলারোয়ায় দোকানে দোকানে ‘হালখাতা’ উৎসব

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে দোকানে দোকানে চলছে ‘হালখাতা’ উৎসব। এই উৎসবকে ঘিরে বেড়েছে ব্যবসায়ীদের ব্যস্ততা। তবে ‘হালখাতা’র এই সময়ে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে চাষি এবং স্বল্প আয়ের মানুষের।

জানা গেছে উপজেলা সদরের পাশাপাশি ১২টি ইউনিয়নের সকল বাজারের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চলছে হালখাতা। দোকানে দোকানে হালখাতার কর্মযজ্ঞতায় দোকানী ও ক্রেতারা। শীত মৌসুমের আমন ধান ঘরে উঠতেই দোকানীরা শুরু করেছেন তাদের ব্যবসার বাকীর টাকা উত্তোলনে। ফলে পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে হালখাতা।
কলারোয়া পৌরসদরের বাজারে সোমবার ও শুক্রবার এবং অন্যান্য বাজার গুলোতে সপ্তাহের বিভিন্ন দিনে হালখাতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে একাধিক দিনও অনুষ্ঠিত হচ্ছে হালখাতা।

হালখাতার দিন এলেই দেখা যাচ্ছে দোকানে দোকানে ফুল দিয়ে সাজানো। দোকানীরা তাদের দোকানকে হালখাতার দিন বিশেষভাবে সাজিয়ে রাখেন এবং পাওনাদারদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার জন্য আলাদা সাজসজ্জা করে থাকেন। হালখাতার জন্য যেসব পাওনাদারের দাওয়াতপত্র দেয়া হয়, তারা এসে খাতায় নাম লিখিয়ে টাকা জমা দিয়ে মিষ্টি নিয়ে চলে যান। অনেক দোকানী আবার সাউন্ড বাজিয়ে এই উৎসব উদযাপন করেন। এমনকি গ্রামাঞ্চলের বাজারগুলোতে রীতিমতো ভ্যান বা ইজিবাইজ যোগে মাইকিং-এর প্রচারণা করে হালখাতা স্মরণ করিয়ে দিতে দেখা যাচ্ছে।

কয়েকজন ক্রেতা জানান, হালখাতায় গেলে দোকানীরা আগের মতো এখন আর মিষ্টি দেন না, বসিয়ে খাওয়া-দাওয়ার আপ্যায়ন করেন না।
তারা জানালেন, এক সময় ছিলো দোকানীরা শুধু বৈশাখ মাসে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হালখাতা দিতো বছরে একবার। তখন বসিয়ে ভাত-মাংস খেতে দিতো। আর এখন বছরে কমপক্ষে দুইবার হালখাতা দেয়া হয়, আর হাতে ধরিয়ে দেয়া হয় লুচি-মিষ্টি। আগে হালখাতার সামাজিক গুরুত্ব ও আনন্দের আমেজ ছিলো।

কয়েকজন দোকানি জানান, আগে বাকী নেয়া ক্রেতারা হালখাতায় স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণ করে বাকীর টাকা পরিশোধ করতেন, আর এখন হালখাতায় অংশ নেয়াও কমে গেছে এবং বাকীর টাকা সম্পূর্ণ পরিশোধ করতে চান না।

বর্তমানে আনন্দ আমেজ কিছুটা কমে গেলেও দোকানে দোকানে হালখাতার পরিসর আরো বেড়েছে।