সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ৪ কি.মি’র রাস্তার ভোগান্তি ২০বছর ধরে, পরিপূর্ণ সংষ্কারের দাবি

ন’কাটি বিলে রাস্তার পাশে পাট ধুচ্ছিলেন (পাটের আশ ছাড়ানো ও ধৌত) পঞ্চাশোর্ধ এক ব্যক্তি। সংবাদকর্মীদের দেখে পাট ধোয়া বাদ রেখে ছুটে আসলেন তিনি। জানালেন, ‘অনেকদিন ধরে এই রাস্তা খারাপ। সংষ্কার করা হয় না। আমরা রাস্তাঘাটে চলাফেরা করতেও পারি না। আপনারা ভালো করে লেখেন-ছবি দেখান যাতে দ্রুত রাস্তা মেরামত করে দেয়।’

ঘটনাটি সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের রামভদ্রপুর ন’কাটি বিল এলাকায় রাস্তার ব্যাপক খারাপ অবস্থার সচিত্র প্রতিবেদন তৈরির সময়।

এমনই আক্ষেপ আর দাবির কথা জানালেন আরো অনেকেই।

জানা গেছে, বেহাল দশা আর চলাচলের অনুপযোগী কলারোয়া উপজেলার গয়ড়া বাজার থেকে রামভদ্রপুর হয়ে সাতপোতা পাঁকা রাস্তাটি। রাস্তাটির প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটারের অংশে পিচ-খোয়া উঠে গেছে, তৈরি হয়েছে ছোট-বড় গর্তের-খানাখন্দের। কয়েকটি কার্লভার্ট থেকেও রাস্তাটি নিচু হয়ে পড়েছে। রাস্তাটির দৈন্যদশায় নাজেহাল স্থানীয় জনসাধারণ, ভোগান্তিতে পথচারীরা। প্রায় ২০ বছর আগে রাস্তাটি পাঁকা করার পর আর কোন সংস্কারই করা হয় নি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গয়ড়া বাজার থেকে রামভদ্রপুরমুখি রাস্তার প্রথম থেকেই খারাপ। রাস্তা গর্ত হয়ে যাওয়ায় পানি জমে থাকছে। গয়ড়া ও রামভদ্রপুর অংশে রাস্তাটি গর্ত-খানাখন্দে ভরপুর। রামভদ্রপুর পেরিয়ে ন’কাটি বিলের মধ্যের অংশের ব্যাপক খারাপ অবস্থায় রাস্তার নমুনা পাওয়া দুষকর। যেকোন যানবাহন নিয়ে যাওয়া তো দূরের কথা, হেটে গেলেও যেনো পড়ে যাওয়ার উপক্রম। ন’কাটির বিল পেরিয়ে মদনপুরের অংশ ও সাতপোতার মুখ পর্যন্ত রাস্তার অবস্থাও নাজুক।

এদিকে, দীর্ঘদিনের দাবি আর দেনদরবারের পর অবশেষে ওই রাস্তাটি সংস্কারের হতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা এলজিইডি’র প্রকৌশলী নাজিমুল হক জানান, ‘২/১ দিনের মধ্যে খুলনা বিভাগীয় অফিসে এই রাস্তাটির স্কিম অনুমোদনের সম্ভাবনা রয়েছে। যদি স্কিমটি অনুমোদিত হয় তবে দুই ধাপে ওই রাস্তাটির প্রায় পৌনে ৩ কিলোমিটার সংষ্কার করা হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘স্কিম পাশ সাপেক্ষে ১ম ধাপে সাতপোতার অংশ থেকে শুরু হয়ে ১ কিলোমিটার ও ২য় ধাপে তারপরের অংশ থেকে পৌনে ২ কিলোমিটার রাস্তা সংষ্কার করা হবে। সব ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরের নভেম্বর মাস থেকে আগামি বছরের জুনের মধ্যে ওই রাস্তার প্রায় পৌনে ৩ কিমি সংষ্কার করার আশা করছি।’

এলজিইডি’র প্রকৌশলী নাজিমুল হক বলেন, ‘প্রথমে ৫৮০০ থেকে ৬৮০০ কেডিআরআইডিপি’র ১ কিমি ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ৬৮০০ থেকে ৮৫৫৫ জিওবি’র ১ দশমিক ৭৫৫ কিমি তথা পৌনে ২কিমি রাস্তা মেরামত করা হবে।’

এদিকে, গয়ড়া বাজার থেকে সাতপোতার পর্যন্ত রাস্তা খারাপ অংশের দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার। মেরামতের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত স্কিম প্রায় পৌনে ৩ কিলোমিটারের। সেই স্কিম অনুমোদন হলেও ওই রাস্তার বাকি অংশ গর্ত-খানাখন্দ তথা খারাপ অবস্থায় পড়ে থাকবে। এ প্রেক্ষিতে বাকী অংশটুকুও অর্থাৎ গয়ড়া বাজার পর্যন্ত রাস্তা পরিপূর্ণ সংষ্কারের জোর দাবি জানিয়েছেন ওই এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণ ও ভুক্তভোগিরা।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।