সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে বজ্রপাত সহিষ্ণু ২ শতাধিক তালের চারা রোপন

তালগাছ এক পায়ে দাড়িয়ে, সব গাছ ছাড়িয়ে, উঁকি মারে আকাশে। বাঙালি দর্শনে অনেক গাছ থাকলেও তালগাছের কথা উঠে এসেছে বারবার। বজ্রপাতের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধে দেশব্যাপী ১০ লাখ তালগাছ রোপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

এরই অংশ হিসেবে বজ্রপাত প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ এবং আহ্বানে সাড়া দিয়ে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মৌতলা থেকে পাওখালি রাস্তার দুই পাশে ২ শতাধিক তালগাছের চারা রোপণ এবং বীজ বপণ করা হয়েছে।

কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খন্দকার রবিউল ইসলাম, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিরাজ হোসেন খান, কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইকবাল আহমেদ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে এ তালের চারা রোপণ করেন।

উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী বলেন, বজ্রপাতে বাংলাদেশে প্রাণহানির ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। তালগাছ বজ্রপাত প্রতিরোধসহ প্রাণহানি কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

এছাড়া তালগাছ দীর্ঘদিন জীবিত থেকে মানুষের উপকার করে। তালগাছ থেকে ঘর নির্মাণের মূল্যবান কাঠ ও জ্বালানি পাওয়া যায়। এ গাছ রস ছাড়াও কাঁচা ও পাকা সুস্বাদু ফল দিয়ে থাকে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খন্দকার রবিউল ইসলাম জানান, বজ্রপাত প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ এবং আহ্বানে সাড়া দেশব্যাপী ১০ লাখ তালগাছ রোপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে কালিগঞ্জে তালগাছের চারা রোপণ এবং বীজ বপণ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, কালিগঞ্জ একটি বৃষ্টিপ্রবণ এলাকা। বৃষ্টিপাতের সময় এ এলাকায় বজ্রপাতও হয় প্রচুর। বজ্রপাতে মানুষসহ অনেক পশু-পাখি মারা যায়। ক্ষতি হয় মূল্যবান গাছ-পালারও।

বিশেষজ্ঞদের মতে, উঁচু গাছেই বেশি বজ্রপাত হয়। উঁচু গাছ থাকলে এলাকায় বজ্রপাতে প্রাণহানি লাঘব হয়। বজ্রপাতে মৃত্যু ঠেকানোর জন্য উঁচু তালগাছই সবচেয়ে কার্যকর।

উপজেলার মৌতলা থেকে পাওখালি পর্যন্ত রাস্তার দুই ধারে, গ্রামীণ মেঠোপথে তালগাছ লাগানোর কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, এর ফলে শুধু প্রাণহানিরোধই নয়, পরিবেশের ভারসাম্যও রক্ষা হবে। এ কর্মসূচি স্থানীয় ভাবে চলমান থাকবে। এখন থেকে নতুন কোন রাস্তা নির্মাণ হলে, সঙ্গে তালের চারা রোপন করা হবে বলেও জানান তিনি।