শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ আমান্য

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে ভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগ

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ভিন্ন ভাবে প্রশ্নপত্র তৈরি করে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক মূল্যায়ন বা সমাপনী পরীক্ষা চালালেও দেখার কেউ নাই।

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের বাগবসন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক অনুপ কুমার ঘোষের বিরুদ্ধে নিজের মনগড়া তৈরি প্রশ্ন পত্র দিয়ে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত ২৭ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এক চিঠির মাধ্যমে দেশের সকল শিক্ষা অফিস এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোকে চিঠি দিয়ে নির্দেশনা জানিয়ে দেওয়া হয়। চিঠির নির্দেশনা মোতাবেক সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারের তত্ত্বাবধানে বিষয় শিক্ষকের মাধ্যমে জ্ঞান অনুধাবন ও প্রয়োগমূলক শিক্ষা ক্ষেত্রে বিবেচনায় ক্লাসটার ভিত্তিক প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করতে হবে।

মূল্যায়ন কার্যক্রম সম্পন্নের জন্য শিক্ষার্থী বা অভিভাবকদের নিকট হতে কোন ফি গ্রহণ করা যাবে না। সেই মোতাবেক উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান উপজেলার ১৩৮ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ৬টি ক্লাস্টারে বিভক্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পালন করার জন্য জানিয়ে দিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্লাসটার ভিত্তিক উপজেলায় সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষকদের জানিয়ে দেওয়া হয়।

উক্ত নির্দেশনা সকল স্কুল মেনে চললেও বাগ বসন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষকসহ সকল শিক্ষক ও শিক্ষিকাগণ এ নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজেদের ইচ্ছামতো তৈরি করা প্রশ্ন বানিয়ে পরীক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

এরমধ্যে মথুরেশপুর এবং মৌতলা ইউনিয়নের ১৯ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিয়ে মডেল ক্লাসটার হিসাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক গত ৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের মূল্যায়ন পরীক্ষা এইভাবে চালিয়ে যাচ্ছে অত্র প্রাথমিকের শিক্ষক- শিক্ষিকারা। এরমধ্যে কোচিং বাণিজ্যের কারণে পঞ্চম শ্রেণীর ৮০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৯ জন শিক্ষার্থীকে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করাবে বলে তাদেরকে পরীক্ষা থেকে বিরত রাখা হয়েছে। এখন যে শিক্ষার্থীরা বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষা বা সমাপনী পরীক্ষা দিল না তাদেরকে কিভাবে মেধা যাচাই করে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করাবে সে প্রশ্ন এলাকার অভিভাবক ও সচেতন মহলের।

সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে সরেজমিনে অত্র স্কুলে গেলে স্কুলের শিক্ষার্থীদের সরকারের নির্দেশনা ছাড়া ভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিতে দেখা গেছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা জুড়ে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের মধ্যে চলছে নানান আলোচনা সমালোচনা।

এ বিষয়ে অত্র স্কুলের প্রধান শিক্ষক অনুপ কুমার ঘোষের নিকট জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, প্রথমে পরীক্ষা হবে না বলে জানা থাকলেও পরবর্তীতে পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। তার আগেই বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়ার জন্য আমি প্রশ্নপত্র তৈরি করে ফেলি। যেহেতু শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে প্রশ্ন ফি নেওয়া যাবে না সে কারণে পরবর্তীতে ক্লাস্টারের প্রশ্ন ছাপানো সম্ভব হয়নি।
বিষয়টি পত্রপত্রিকায় না দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান।

এ প্রসঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত অত্র ক্লাসটারের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা প্রকাশ চন্দ্র মন্ডল এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে সাংবাদিকদের জানান।

অনুরূপভাবে উপজেলা ভাবপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, বিষয়টি আমার জানা নাই তবে এইমাত্র আমি জেনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।