সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত
সাতক্ষীরার কালীগঞ্জের মথুরেশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাতের প্রমান পেয়েছে উপজেলা নিবার্হী অফিসার।
ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ২০১৬-২০২০ সাল পর্যন্ত ৯ লক্ষ ২৭ হাজার ৮’শ টাকা সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের প্রামান মিলেছে বলে জানাযায় ইউএনওর তদন্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে।
কালীগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম চেয়ারম্যানের দূর্নীতির বিষয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এবিষয়ে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে গত সোমবার (০৪-অক্টোবর) বেলা ১২ টার সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলাম সরেজমিনে প্রকল্পের অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত করেন।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, মথুরেশপুর ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান প্রকল্পের কাজ না করে এলজি এস পি, এজিএসপি, টিআর, কাবিখা সহ বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
এরমধ্যে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এলজিএসপি-৩ এর
আওতায় ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মনোরঞ্জন ঘোষের বাড়ি থেকে নীলকমল ঘোষের বাড়ি পর্যন্ত ইটের সলিং রাস্তা নির্মাণে এক লক্ষ টাকা, একই অর্থবছরে এজিএসপি -৩ কাজের আওতায় ৫ নম্বর ওয়ার্ডের দেয়া পিচের রাস্তা হতে বজলু সরদারের বাড়ি পর্যন্ত নতুন রাস্তার ১ লক্ষ টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এলজিএসপি-৩ এর আওতায় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের উজয়মারি জয়দেবের বাড়ি হতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার ৮৯ হাজার ৮’শ টাকা ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে এলজিএসপি-৩ এর আওতায় জুলু সরদারের বাড়ী হতে কোমলের বাড়ী পর্যন্ত ইটসোলিং নির্মাণ ৪১ হাজার টাকার কাজ না করে আত্নসাত করেছে বলে প্রমাণিত হয়েছে।
এছাড়া আংশিক প্রমাণিত হয়েছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে এলজিএসপি-৩ এর আওতায় ১ নম্বর ওয়ার্ডের হাবি মোল্লার বাড়ী হতে ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলামের বাড়ি পর্যন্ত পানি নিষ্কাশনের আউট ড্রেন নির্মাণ বাবদ ২ লক্ষ টাকা, একই প্রকল্প ও অর্থবছরে ২ নম্বর ওয়ার্ডের হাড়দ্দাহ কলগেট হতে রমি পুটের বাড়ি পর্যন্ত মাটির রাস্তা নির্মাণ ২লক্ষ টাকা আত্মসাতের বিষয়ে আংশিক প্রামানিত হয়েছে।
প্রকল্প বাস্তবায়ন সঠিক নিরূপণ করেননি, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নিজদেবপুর জসীমউদ্দীনের বাড়ি হতে মুজিবরের বাড়ি পর্যন্ত মাটি দিয়ে পুনরায় রাস্তা নির্মাণ ২ লক্ষ ৭ হাজার টাকা, একই অর্থবছরে কাবিখার আওতায় ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নিজদেবপুর মসজিদের সামনে হতে মহিলা ইউপি সদস্যের বাড়ি পযন্ত ৮ মেট্রিক টন চাউলের প্রকল্পের কাজ নিরুপন করা হয়নি।
এছাড়া ৪ টি বিষয়ে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে উল্লেখ করেছেন উপজেলা নির্বাহি অফিসার। প্রকল্পের অনিয়মমের বিষয় জানতে চাইলেও ইউএনওর কাছে সন্তোষ জনক ব্যাখা দিতে পারেননি প্রকল্প সভাপতি ইউপি সদস্য কলিম গাজী, মনিরুজ্জামান ও প্রকল্প সদস্য ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান গাইন বলে উল্লেখ আছে তদন্ত প্রতিবেদনে।
তবে এ বিষয়ে মথুরেশপুর ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের নিকট সরকারি অর্থ আত্মসাৎ প্রমাণিত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযোগের কোনো সত্যতা পায়নি। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বলেন ইউএনও সাহেব অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন আমি জানিনা আপনারা জানলেন কিভাবে? আমার কাছে ফোন দিয়েছেন কেন ইউএনও সাহেবকে ফোন দিয়ে যা লেখার লেখেন।
কালিগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বিষয়টি তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন ডিসি স্যার বরাবর দাখিল করেছি।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবীর এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি, তদন্ত প্রতিবেদনটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রেরণ করা হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন