সাতক্ষীরার ডিবি গার্লস হাইস্কুলে ক্লাস নিলেন জার্মান প্রবাসী শিক্ষা গবেষক ড. আবুল আমানউল্যাহ

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে এসে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহর-ব্রহ্মরাজপুর (ডি. বি) গার্লস হাইস্কুলে ক্লাস নিলেন বরেণ্য শিক্ষা গবেষক কবি ও সাহিত্যিক ড. আবুল আমানউল্যাহ।

বৃহস্পতিবার দিনভর দিন তিনি বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেন এবং সার্বিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন।

এসময় তিনি শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের সাথে আন্তরিক পরিবেশে শিক্ষা ও সংস্কৃতি নিয়ে আলোচনা করেন।

প্রত্যেক ক্লাসে গিয়ে ড. আবুল আমানউল্যাহ শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেন।

জার্মানির শিক্ষা ও সংস্কৃতির সাথে শিক্ষার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন।

ড.আবুল আমানউল্যাহ জার্মানির জাতীয় সংগীত, খাদ্যাভ্যাস, সাংস্কৃতিক চর্চা, খেলাধুলা, বিনোদন ও নাগরিকদের দায়িত্ব-কর্তব্য তুলে ধরে বলেন, জার্মানিতে শিশুর বিকাশে সাধারণ শিক্ষার চেয়ে কারিগরি শিক্ষায় বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। যাতে ব্যবহারিক জীবনে অর্জিত জ্ঞান-দক্ষতাকে প্রয়োগ করে দেশের সেবায় ভূমিকা রাখতে পারে। জার্মানিতে শিক্ষার দায়িত্ব সরকারের, অভিভাবকের নয়। অভিভাবকের দায়িত্ব সন্তানকে স্কুলে পাঠানো। সেখানে প্রাইভেট কোচিং নেই। শিক্ষার্থীর বাড়ির কাজ বলে কিছু নেই। বাড়ির কাজ দিলে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে অমনোযোগি হয়। তখন সে শিক্ষকের প্লান আগাম জেনে যায়। তাই ক্লাসে শিক্ষার্থীর মনোযোগ ধরে রাখতে ক্লাসের পড়া ক্লাসেই আদায় করে নেওযা হয়। নাগরিকদের দায়িত্ব দেশকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। দেশের আইন-শৃঙ্খলা মেনে মানুষের সেবা করা। সকল ধর্মের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রেখে সম্প্রীতি অক্ষুন্ন রাখা। খেলাধুলার মধ্যে ফুটবল খুবই জনপ্রিয়।

তিনি আরো বলেন, কবি সাহিত্যিকদের ব্যাপক সমাদর করা হয় জার্মানিতে। বিশ্বের কবি, সাহিত্যিক ও লেখকদের জন্য জার্মানিতে রয়েছে বিশ্ববিখ্যাত পেন ক্লাব। জার্মানিরা সময়কে ব্যাপক গুরুত্ব দেয়। আমাদের বাংলাদেশের শিশুদের বিশ্ব দরবারে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হলে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ হতে হবে। সময়কে কাজে লাগাতে হবে।

ড. আবুল আমানউল্যাহ এসময় শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষায় দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে বিশ্ব দরবারে যোগ্য ব্যক্তি হিসেবে গড়ে উঠার আহবান জানান।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বীরমুক্তিযোদ্ধা এবিএম জালালউদ্দীন, ধুলিহর-ব্রহ্মরাজপুর (ডি. বি) গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. এমাদুল ইসলাম, সহকারী প্রধান শিক্ষক অনুজিৎ কুমার মন্ডল, সহকারী শিক্ষক এসএম শহীদুল ইসলাম, শামীমা আক্তার, মো. নজিবুল ইসলাম, অরুন কুমার মন্ডল, কনক কুমার ঘোষ, মো. হাফিজুল ইসলাম, আজহারুল ইসলাম, গীতা রানী সাহা, ভানুবতী সরকার, খালেদা খাতুন, আসমাতারা জাহান, দেবব্রত ঘোষ, শাহানারা খাতুন, হারুন উর রশিদ প্রমুখ।

প্রসঙ্গত: বরেণ্য শিক্ষা গবেষক কবি ও সাহিত্যিক ড. আবুল আমানউল্যাহর জন্ম সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলায়। তিনি জার্মানিতে সপরিবারে নাগরিকত্ব নিয়ে দীর্ঘদিন বসবাস করেন। ড. আবুল আমানউল্যাহ একাধারে শিক্ষা গবেষক, কবি, সাহিত্যিক ও লেখক।