সাতক্ষীরার রমজাননগর মাদ্রাসায় দাখিল পরীক্ষার্থীদের বিদায় ও দোয়া অনুষ্ঠান

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর দারুস সুন্নাহ আদর্শ দাখিল মাদ্রাসায় ২০২৫ সালের দাখিল পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার, (৭ এপ্রিল) সকাল ১০টায় মাদ্রাসা মিলনায়তনে ‘স্পেশাল ব্যাচ’-এর উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি এক আবেগঘন পরিবেশে শুরু হয়। শুরুতেই পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর একে একে বক্তব্য পর্ব শুরু হলে মিলনায়তনজুড়ে একটি আন্তরিক পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাসার সহকারী মৌলভী মাওলানা হুসাইন বিন আফতাব। তিনি পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন এবং বলেন, “আসন্ন দাখিল পরীক্ষার জন্য তোমাদের আত্মবিশ্বাস, অধ্যবসায় ও নিয়মিত পড়াশোনার বিকল্প নেই। সর্বোপরি, আল্লাহর ওপর ভরসা রাখলে নিশ্চয়ই সফলতা অর্জন সম্ভব।”

ইংরেজি শিক্ষক ইমরান বাহার ও গণিত শিক্ষক আব্দুর রহিম বিএসসি পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে শিক্ষাজীবনের গুরুত্ব, সময় ব্যবস্থাপনা ও আত্মনিবেদনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তাঁরা ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বলেন, শিক্ষা শুধুমাত্র পরীক্ষার জন্য নয়, এটি পুরো জীবনের জন্য পথনির্দেশক।

বিদায়ী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইমরান হোসেন ও রাকিব হাসান বক্তব্য প্রদান করেন। তাঁরা তাঁদের ছাত্রজীবনের স্মৃতিচারণ করেন এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বক্তৃতার একপর্যায়ে অনেকের চোখে জল দেখা যায়, যা অনুষ্ঠানটিকে আরও আবেগঘন করে তোলে।

অনুষ্ঠানে বিদায়ী ছাত্রদের পক্ষ থেকে শিক্ষকদের হাতে সম্মাননা স্মারক ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি ‘স্পেশাল ব্যাচ’-এর পক্ষ থেকে প্রতিটি পরীক্ষার্থীর জন্য একটি করে ফাইল ও কলম উপহার হিসেবে প্রদান করা হয়, যা শিক্ষার্থীদের স্মৃতির পাতায় চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে।

সবশেষে মাওলানা হুসাইন বিন আফতাবের পরিচালনায় দোয়া ও মুনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। তিনি ছাত্রদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ, উত্তম চরিত্র ও সমাজে সফলতা অর্জনের জন্য দোয়া করেন।

পুরো অনুষ্ঠানজুড়ে এক হৃদয়স্পর্শী ও প্রাণবন্ত পরিবেশ বিরাজ করছিল। শিক্ষকবৃন্দ বিদায়ী পরীক্ষার্থীদের জন্য আন্তরিক শুভকামনা জানান এবং আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, এই শিক্ষার্থীরাই ভবিষ্যতে দেশ ও জাতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষার্থীদের মাঝে একধরনের আবেগ ও অনুপ্রেরণার মিশ্র অনুভূতি লক্ষ্য করা যায়। বিদায়ী এই দিনটি মাদ্রাসার ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে বলে অভিমত প্রকাশ করেন উপস্থিত শিক্ষক ও অভিভাবকবৃন্দ।