সাতক্ষীরার সেই শিশু মারিয়াকে দত্তক নিতে চান ডাকসু’র সাবেক জিএস গোলাম রাব্বানী

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একই পরিবারের ৪জনকে হত্যার পর জীবিত একমাত্র শিশু মারিয়াকে দত্তক নিতে চান বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধরণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক জিএস গোলাম রব্বানী। গোলাম রব্বানী বর্তমানে টিম পজিটিভ বাংলাদেশের মুখপাত্র।

রবিবার (৮নভেম্বর) মধ্যরাতে তিনি কলারোয়ার চার খুনের ঘটনাস্থল হেলাতলায় যান এবং একমাত্র বেঁচে যাওয়া শিশু মারিয়ার সাথে বেশকিছু সময় কাটান। তিনি মারিয়াকে দত্তক নেওয়ারও আগ্রহ ব্যক্ত করেন। সেখান থেকে মোবাইল ফোনে কলারোয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টুর সাথে কথা বলে শিশু মারিয়াকে দত্তক নেয়ার আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান।

পিতা-মাতা-ভাই-বোনকে হারিয়ে সাড়ে ৬মাসের শিশু মারিয়া এখন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের তত্বাবধায়নে কলারোয়ার হেলাতলা ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্যের কাছে রয়েছে।

এর আগে গোলাম রব্বানী জেলার তালা উপজেলায় দলীয় পদ না পেয়ে অভিমানে আত্মহননকারী ছাত্রলীগ কর্মীর পরিবারকে সান্তনা দিতে ছুটে যান। রবিবার বিকেলে তালার খলিলনগর ইউনিয়নের হরিশচন্দ্রকাটি গ্রামে শোকাহত বাড়িতে যান ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতা। সেসময় তিনি শোকাহত পরিবারকে সান্তনা দেন এবং পরিবারটির পাশে থাকবেন বলে ঘোষণা দেন।
আত্মহত্যা করা ইউনিয়ন ছাত্রলীগকর্মী শেখ রিয়াদ হোসেন বাবুর বাবা শেখ মনজুর রহমান জানান, ছাত্রলীগ করার জন্য বিভিন্ন সময় তার কাছ থেকে টাকা নিতো বাবু। সব টাকা দলের পেছনে খরচ করতো। তবে কোনো পদ না পাওয়ায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আত্মহত্যার আগে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বাবু এসব লিখে গেছে। আমি চাই বাংলাদেশে যেন এমন ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ছাত্রলীগকর্মী বাবুর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন ও সার্বিক খোঁজখবর নেন গোলাম রাব্বানী। আলাপকালে ছাত্রলীগ কর্মী বাবুর বাবা মনজুর রহমান ছোট ছেলে শেখ রিফাতের লেখাপড়া শেষে একটি সরকারি চাকরির দাবি করেন। এ সময় রাব্বানী সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

টিম পজিটিভ বাংলাদেশের মুখপাত্র গোলাম রাব্বানী বলেন, টাকার জন্য পদ না পেয়ে একজন ছাত্রলীগকর্মী আত্মহত্যা করবে এটি হতে পারে না। দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আমি ছুটে এসেছি। এই পরিবারটির পাশে আমি থাকবো। তারা যে ধরনের সহযোগিতা চায় সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। বাবুর ছোট ভাই শেখ রিফাতের একটি চাকরির ব্যবস্থাও করা হবে।

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সব ছাত্রলীগ কর্মীকে মনে রাখতে হবে আগে লেখাপড়া তারপর রাজনীতি। লেখাপড়া বাদ দিয়ে রাজনীতি করা যাবে না। জীবনে সফল হতে হলে এটিকে মনে প্রাণে ধারণ করতে হবে। নেতাকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে আত্মহত্যা করা ছাত্রলীগকর্মী শেখ রিয়াদ বাবুর কবরস্থান জিয়ারত করেন গোলাম রাব্বানী। প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার বিকেলে নিজ বাড়িতে বিষপান করেন শেখ রিয়াদ হোসেন বাবু। পরে তাকে উদ্ধার করে তালা হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। মৃত্যুর আগে নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন বাবু।