সাতক্ষীরায় এসএসসি ৮২ ব্যাচের বনভোজন

সারাদিন বর্ণিল ও জাঁকজমকপূর্ণ আনন্দ উল্লাসের মধ্য
দিয়ে শেষ হলো সাতক্ষীরা জেলার সব স্কুলের এসএসসি-৮২ ব্যাচ এর তৃতীয়বারের মতো শিক্ষার্থী বন্ধুদের পিকনিক ও মিলন মেলা।

শনিবার (১৮ ফেব্রয়িারি) সকাল থেকে সাতক্ষীরা শহরের অভিজাত বিনোদন স্থল খড়িবিলা মন্টু মিয়ার বাগান
বাড়ির ভিআইপি স্পটে নানা আয়োজনে জাঁকজমক ও বর্ণিল উৎসব মূখর পরিবেশে এই তৃতীয় পুনর্মিলনী পিকনিক ও মিলনমেলায় অংশ নেয় সাতক্ষীরা জেলার সব স্কুলের এসএসসি-৮২ ব্যাচ এর শিক্ষার্থীরা।

‘বন্ধু’ শব্দটা ছোট হলেও এর পরিধি এতটাই বিস্তৃত যে পরিমাপ করার সাধ্য কারো নেই। বলতে গেলে বন্ধু মানেই আত্মার টান, ভালোবাসার বন্ধন, হৃদয়ের স্পর্শ, একেকটা বন্ধুই অন্য বন্ধুর জন্যই ছায়া হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা। স্কুল-কলেজ জীবনের হারিয়ে যাওয়া বাঁধভাঙা
বন্ধুত্বের এক একটা পরিচ্ছেদকে আরেকবার ঝালিয়ে নেয়ার সুযোগ মেলে এই আয়োজনে। বন্ধুত্বের সীমানা ছাড়িয়ে যায় উপজেলার সব শিক্ষার্থী।

এদের মধ্যে অনেকে ডাক্তার, প্রকৌশলী, আইনজীবী, রোটারীয়ান, ব্যাংকার, সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তা, বড় রাজনীতিবিদ, সামরিক ও বেসামরিক অফিসার, কেউবা আবার শিক্ষক কিংবা ব্যবসায়ী। কেউ বা আবার প্রবাসী। কিন্তু পরিচয় সবার যেন একটা সেটা হলো আমরা স্কুল বন্ধু।

পিকনিক ও মিলনমেলা দীর্ঘদিন যোগাযোগ না থাকা
বন্ধুরা একে অপরকে পেয়ে অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। খোঁজ নেন পরিবার-পরিজনের। অনেকের চেহারা চেনা চেনা লাগলেও পরিচয় জেনেই নিশ্চিত হই তিনিই সেই স্কুল বন্ধু। এভাবে খড়িবিলা মন্টু মিয়ার বাগান বাড়ি পিকনিক স্পট যেন এক মিলনমেলায় পরিণত হয়। যেখানে এই সাবেক শিক্ষার্থীরা শৈশবের উৎসবে মেতে ওঠেন।

এসময় অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বনভোজন ও মিলনমেলা আয়োজক কমিটির অন্যতম সদস্য সাতক্ষীরা নবারুণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ম্যানেজিং
কমিটির সভাপতি ও রোটারী ক্লাব অব জাহাঙ্গীরনগর ঢাকা ডিস্ট্রিক ৩২৮১ এর এ্যাসিস্টেন গর্ভণর রোটারী ক্লাব অব জাহাঙ্গীরনগর ঢাকা’র আইপিপি রোটারীয়ান নাজনীন আরা নাজু, মিলনমেলা আয়োজক কমিটির আহবায়ক মিনহাজ আহমেদ ও সেক্রেটারী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন জসি। এসময় উপস্থিত ছিলেন মিলনমেলা আয়োজক কমিটির ট্রেজারার মাহফুজার রহমান, এস.কে আজিম, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপী, সাতক্ষীরা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাহাদাৎ হোসেন, সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আবুল হাসান, লাবসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আছপিয়ারা খাতুন, জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য মীর মোশারফ হোসেন মন্টু, মো. ইয়াকুব আলী, সৈয়দ একতিয়ার আলী তিতু, ডা. রেজা, বকুল, মো. আব্দুল্লাহ, শেখ মাসুদ আলী, মো. বাবর আলী, রবীন মন্ডল, গৌতম, বিদ্যুৎ, নন্দসহ আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থী মিলনমেলায় একত্রিত হয়ে অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তোলে।

প্রাইমারী পেরিয়ে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক, স্নাতকোত্তর শেষ করতেও অনেক নাম না জানা মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্বের আর্বিভাব হয়ে থাকাটাই বন্ধুত্বের পরিচয়। আবার জীবনের তাগিদের জন্য কেউ কেউ ব্যস্ত সময় পার করে আসছি আবার উচ্চতর ডিগ্রির জন্য দেশ ছেড়ে ভিনদেশে বসবাস করছি, সবাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও মনের সেই টানটা আগের মতই রয়ে গেছে। সবার ব্যস্ততার মধ্যেও যেন একই প্ল্যাটফর্মে থাকতে পারি, একে-অন্যের পাশে পরিপক্ব হিসেবে আমরা
সবাই দাঁড়াতে পারি, সেই উদ্যোগে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এসএসসি ১৯৮২ ব্যাচের বন্ধু-বান্ধবীদের নিয়ে প্রতিবছর যেন একটি গাছের নিচে যেন থাকতে পারি।

সাতক্ষীরা জেলা থেকে এসএসসি-৮২ ব্যাচ এর আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থী নারী-পুরুষ অংশ নেয় তৃতীয় বারের মত এই আয়োজনে।

আয়োজনে ছিল বিভিন্ন খেলাধুলা, দুপুরের লাঞ্চ, নাচ, গান, পুরষ্কার বিতরনী, মনোজ্ঞ সাংস্কুতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সব শেষে থাকবে র‌্যাফেল ড্র। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এসএসসি-৮২ ব্যাচ এর সাইরুল ইসলাম।