সাবেক ২৫ মন্ত্রী ও ৪০ এমপির অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে আবেদন

গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এবার সামনে আসতে শুরু করেছে তাদের শাসনামলের ভয়াবহ দুর্নীতির চিত্র। শেখ হাসিনা সরকারের সাবেক ২৫ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং বিলুপ্ত সংসদের অন্তত ৪০ জন সংসদ সদস্যের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান চেয়ে এবার দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) আবেদন করেছেন সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী।

রোববার (১৮ আগস্ট) দুদক চেয়ারম্যান বরাবর আবেদনটি করেন আইনজীবী এম সরোয়ার হোসেন।

লিখিত আবেদনে আইনজীবী বলেন, আমি বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী, একজন সচেতন নাগরিক এবং মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। ২০২৩ সালের ২৭ ডিসেম্বর একটি পত্রিকায় শিরোনাম ‘অকল্পনীয় সম্পদ বৃদ্ধি মন্ত্রী-এমপিদের’ প্রকাশিত হয়। উক্ত সংবাদের মাধ্যমে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর আয় বেড়েছে সীমাহীনভাবে। দুর্নীতি ব্যতীত এ রকম সম্পদ বৃদ্ধি সম্ভব নয়।

টিআইবি আয়োজিত ‘নির্বাচনী হলফনামায় তথ্যচিত্র জনগণের কী বার্তা দিচ্ছে?’ শীর্ষক শিরোনামে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী-এমপিদের উক্ত দুর্নীতির তথ্য তুলে ধরা হয়। উক্ত সম্মেলনে আলোচকরা বলেন যে, অনেক মন্ত্রী-এমপিদের সম্পদ বৃদ্ধির চিত্র রূপকথার গল্পকেও হার মানিয়েছে।

আবেদনে বলা হয়, অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, জাতীয় দৈনিকের পাতা জুড়ে উক্ত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরও অনুসন্ধানের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করে নাই, যা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান যেমন দুর্নীতি দমন কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠানের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস ক্ষুণ্ন করে এবং জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। দুদক থেকে ইতিপূর্বে বলা হয়েছিল যে, দুদক মন্ত্রী-এমপিদের এই অস্বাভাবিক সম্পদ বৃদ্ধির ব্যাপারে অনুসন্ধান করবেন। আমার জানামতে দুদক এখন পর্যন্ত অনুসন্ধান শুরু করেনি। তাই আমরা চাই দ্রুত এদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করুক সংস্থাটি।

তবে আইনজীবী আবেদনে সাবেক কোন কোন মন্ত্রী এবং এমপির নাম উল্লেখ করেছেন সে সম্পর্কে জানা যায়নি।

এদিকে মালয়েশিয়া শ্রমবাজারে চক্র কায়েম করে অবৈধভাবে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, তার স্ত্রী কাশমিরী, মেয়ে নাফিসা কামাল ও ফেনী-২ আসনের সাবেক এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনী-৩ আসনের মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এবং ঢাকা-২০ আসনের সাবেক এমপি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

ইতোমধ্যে এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে সংস্থাটি। অভিযোগটি অনুসন্ধানের জন্য দুদকের উপপরিচালক মোহা. নূরুল হুদার নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়েছে।