সারাক্ষণ এসি রুমে থাকলে যে ১০ সমস্যা হতে পারে
গরমকালে সূর্য যখন আগুন ঝরাচ্ছে, তখন এয়ারকন্ডিশনড ঘরের চেয়ে আরামের আর কী-ই বা হতে পারে! কিন্তু জানেন কী, দিনের পর দিন এসি ঘরে (সেটা বাড়ি কিংবা অফিস, যেখানেই হোক না কেন) থাকার বেশ কিছু খারাপ প্রভাব দেখা দেয় শরীরে? চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নিয়মিত এসি ঘরে থাকলে বেশ কিছু কুপ্রভাবে আক্রান্ত হতে পারে আপনার শরীর। কোন কোন সমস্যা গুলি হতে পারে তা জেনে নেওয়া যাক—
১. এসি ঘরের তাপমাত্রা প্রাকৃতিক তাপমাত্রার চেয়ে কম হয়। এমন পরিবেশে মানবশরীরকে তার স্বাভাবিক তাপমাত্রা ধরে রাখার জন্য অধিক পরিশ্রম করতে হয়। তার ফলে শরীর দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়ে।
২. সারাক্ষণ এসি-তে থাকলে শরীরে রক্তসঞ্চালনে বিঘ্ন ঘটে। এর ফলে বিভিন্ন অংশের মাংসপেশিতে ক্র্যাম্প সৃষ্টি হয়, এবং মাথা ব্যথা দেখা দিতে পারে।
৩. এসি ঘরে তাপমাত্রার অদলবদল হয় না। ফলে এসি ঘরে থাকতে থাকতে শরীরও এক ধরনের তাপমাত্রায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। কোনও কারণে সেই তাপমাত্রার চেয়ে গরম বা ঠান্ডা অবস্থায় থাকতে হলে শরীর সেই তাপমাত্রার সঙ্গে চট করে মানিয়ে নিতে পারে না। এর ফলে উদ্বেগ কিংবা স্ট্রেসের মতো সমস্যা দেখা দেয়।
৪. দিনে অন্তত চার ঘণ্টা এসি ঘরে থাকা যাঁদের অভ্যেস, তাঁদের মিউকাস গ্ল্যান্ড স্বাভাবিক অবস্থার তুলনায় শক্ত হয়ে যায়। এর ফলে তাঁদের সাইনাসের সমস্যা দেখা দেয়।
৫. এসি-র ফিল্টার যদি অনেক দিন পরিষ্কার করা না হয়, তা হলে এসি থেকে নির্গত হাওয়ায় অনেক সময়ে ধুলোবালি কিংবা ব্যাকটেরিয়া মিশে যায়। এর ফলে সর্দি-কাশি কিংবা ভাইরাল ফিভারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
৬. এসি ঘরে স্বাভাবিকের তুলনায় আর্দ্রতা কম থাকে। এর ফলে স্কিনের ড্রাইনেস বা শুষ্কতার সমস্যা দেখা দেয়।
৭. এসি শুধু ত্বক নয়, চোখকেও শুষ্ক করে দেয়। এর ফলে চোখে চুলকানি, চোখ লাল হওয়া, চোখ থেকে জল ঝরা— প্রভৃতি রোগের সৃষ্টি হয়।
৮. এসি ঘরে থাকলে হাঁটু, কোমর, কনুই কিংবা ঘাড়ের কার্যকারিতাও প্রভাবিত হয়। সাধারণত এই সমস্ত জয়েন্টে এসি-র হাওয়ার প্রভাবে যন্ত্রণা দেখা দেয়।
৯. দীর্ঘ সময় ধরে এসি ঘরে থাকলে অ্যাজমা অর্থাৎ হাঁপানির সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যদি আপনার ঘন ঘন সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হওয়ার রোগ কিংবা ধুলোর অ্যালার্জি থেকে থাকে, তা হলে এসি ঘরে না থাকাই ভাল।
১০. এসি ঘরে থাকা হলে ধমনী বা শিরা সংকুচিত হয়ে যায়। এর ফলে দেহে রক্ত সঞ্চালন প্রভাবিত হয়।
এ তো গেল সমস্যা। কিন্তু গরম কালে এসি না চালিয়ে থাকাও তো সম্ভব নয়। আর অফিস যদি এয়ারকন্ডিশনড হয়, তা হলে তো এসি বন্ধ করার কোনো উপায়ই নেই। তা হলে কী ভাবে নিজেকে রক্ষা করা যাবে এসি-র কুপ্রভাব থেকে। এর জন্য কয়েকটি কৌশল অনুসরণ করা যেতে পারে। যেমন—
১. অফিসে যদি এসি থাকে, তা হলে এক-দু’ঘন্টা পর পর এসি ঘর থেকে বেরিয়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রা সম্পন্ন কোনো জায়গায় পাঁচ-সাত মিনিট কাটিয়ে আসুন।
২. বাড়িতে এসি থাকলে ঘন্টা খানেক পর পর পাঁচ-সাত মিনিটের জন্য এসি অফ করে দিন।
৩. বাড়ি হোক বা অফিস— চেষ্টা করুন, এসি-র হাওয়ার এক্সপোজার যেন সরাসরি মাথায় না লাগে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন