‘সারা জীবনেও ৭ কোটি টাকা লেনদেন করছি কিনা জানি না’

বিএনপির ৯ নেতার বিরুদ্ধে ব্যাংক হিসাবে ১২৫ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

দুদকের অনুসন্ধানের কঠোর সমালোচনা করে মোশাররফ হোসেন বলেন, সক্রিয় নেতাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই সরকারের এমন চক্রান্ত। সামনে নির্বাচন তাই অশুভ মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন করছে সরকার। এর আগেও খালেদা জিয়াসহ অনেকের নামে মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছেন তারা।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, খালেদা জিয়া থেকে শুরু করে দলের নেতাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য নীলনকশার অংশ হিসেবে এই অপপ্রচার। সরকারের এই নীলনকশা বাস্তবায়িত হবে না।

সরকার দুদককে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমি সারা জীবনেও ৭ কোটি টাকা লেনদেন করছি কিনা জানি না। এটা সরকারের নোংরা রসিকতা, সম্মানহানির প্রয়াস।

তিনি বলেন, সরকার হুকুম করেছে, যারা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের বিরত রাখো, ভয় দেখাও, থামাও। আর দুদক দাবি করে, তারা স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। অথচ তারা সরকারের হাতের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, ‘অনলাইন পত্রিকা বা মিডিয়া আছে বলে যা খুশি তা লেখার অধিকার কারও নেই। আমাদেরও পরিবার-পরিজন আছে, আত্মীয়স্বজন আছে। দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি-সংগ্রাম করে এই জায়গায় এসেছি। আমি চাইব, হয় তারা ক্ষমা প্রার্থনা করবে, না হয় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নেয়া লাগবে।’

আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সরকার জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নেয়ার জন্য মিথ্যাচারের মাধ্যমে জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। দৃষ্টি অন্যদিকে নিয়ে যেতে হলে তাদের এ ধরনের কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, মিথ্যা নিউজ করার জন্য আওয়ামী লীগ ২৫টি পোর্টাল করেছে। প্রতিনিয়ত তাদের যে মিথ্যাচার, তার মধ্যে এই নিউজ একটি। এটাই শেষ নয়; ভবিষ্যতে আরও অনেক নিউজ দেখা যাবে।

সরকার দুদকের মতো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের গ্রহণযোগ্যতা ধ্বংস করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, আমি ব্যবসা করি, লেনদেন হতে পারে। এখানে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট লিখেছে, আমি সব কটি দেখিনি। এমনও দেখানো হয়েছে, যেখানে আমার কোনো অ্যাকাউন্টই নেই। সংবাদটা পুরোপুরি মনগড়া।

সন্দেহজনক লেনদেন, অর্থপাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সোমবার বিএনপির শীর্ষ ৮ নেতাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।

দলটির যেসব নেতার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে তারা হলেন- ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নজরুল ইসলামখান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, ও তার ছেলে তাবিথ আউয়াল, এম মোর্শেদ খান ও তার ছেলে ফয়সাল মোর্শেদ খান, হাবিবুন্নবী খান সোহেল।