সালাহউদ্দিন আহমেদকে দেশে আনার চেষ্টায় সরকার
ভারতের শিলং আদালত থেকে বেকসুর খালাস পাওয়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদকে দেশে ফেরাতে কাজ করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পুলিশ জানিয়েছে, দেশে ফিরলেই তাকে গ্রেপ্তার করবে পুলিশ। কারণ, তার বিরুদ্ধে নয়টি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।
বিএনপির এই নেতা ইন্টারপোলের মাধ্যমে ফেরানোর মতো আসামি না হওয়ায় মূলত দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আলোচনায় ফেরানোর চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
২০১৫ সালের মার্চ মাসে নিখোঁজ হন সালাহ উদ্দিন আহমেদ। দুইমাস পর (মে মাস) ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ের একটি রাস্তা থেকে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ। ওই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলা হয়। সাড়ে তিন বছর পর গত ২৬ অক্টোবর তিনি ওই মামলায় বেকসুর খালাস পান। তবে পাসপোর্ট ও ভিসা না থাকলেও এখনও ভারতেই অবস্থান করছেন তিনি।
সালাহউদ্দিনকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়ায় পুলিশের কী ভূমিকা থাকবে- জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, ‘বিদেশ থেকে আসামি ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পুলিশ ইন্টারপোলের সহায়তা নিয়ে থাকে। বিদেশে লুকিয়ে থাকা কোনো আসামির অবস্থান শনাক্ত করতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করা হয়। এক্ষেত্রে এনসিবি (ইন্টারপোল), ঢাকা সংশ্লিষ্ট দেশের ইন্টারপোলের সাথে প্রয়োজনীয় সমন্বয় করে।’
‘আসামির অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে কাজ করে। কিন্তু সালাহউদ্দিন আহমেদকে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি ভিন্ন। এখানে কাজ করছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা লিয়াজোঁর মাধ্যমে তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।’
‘এখানে বাংলাদেশ পুলিশ সম্পৃক্ত না। তবে দেশে ফেরার পর তার (সালাহ উদ্দিন) বিরুদ্ধে মামলা বা ওয়ারেন্ট থাকলে তিনি অবশ্যই গ্রেপ্তার হবেন।’
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু বলেন, ‘যেহেতু তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে, স্বাভাবিক তাকে গ্রেপ্তার করবে পুলিশ। তাকে গ্রেপ্তার করার পরে এখানে তার বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো আছে সেগুলোর বিচার চলবে।’
বিএনপির এই নেতার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় রয়েছে ২৭টি মামলা। এর মধ্যে ১৮টি মামলায় তিনি জামিনে আছেন। আর নয়টি মামলায় তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ আছে আদালতের।
বিষ্ফোরক দ্রব্য, বিশেষ ক্ষমতা আইন ও হত্যার অভিযোগে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় তিনটি, বিষ্ফোরক আইন ও হত্যার ঘটনায় রামপুরা থানায় দুটি, বিষ্ফোরক আইন ও পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার ঘটনায় ভাটারা থানায় দুটি এবং হত্যা ও বিষ্ফোরক আইন ও হত্যার ঘটনায় কুমিল্লায় আরও দুটি মামলায় এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। ২০১৫ সালে অবরোধের সময় এসব মামলা হয়।
সালাহউদ্দিনের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেসবাহ বলেন, ‘২০১৫ সালে অবরোধের সময় আমাদের জানা মতে, মোট নয়টি মামলা হয়েছিল। এই মামলাগুলোর সবকটিতেই চার্জশিট (অভিযোগপত্র) হয়ে গেছে। তাকে (সালাহউদ্দিন) পলাতক দেখিয়ে ওয়ারেন্ট দিয়েছে।’
সালাহউদ্দিন আহমেদ নিখোঁজ হওয়ার সময় দলের যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন। পরে দলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটিতে পদোন্নতি পান। চারদলীয় জোট ক্ষমতায় থাকাকালে তিনি সরকারের যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন