সিটি নির্বাচনেও যাবে না বিএনপি
জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের পর অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করেনি রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। এরই মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন করার প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আগামী ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আয়োজন চলছে। সেক্ষেত্রে আগামী বছরের জানুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে এমন তথ্যই পাওয়া গেছে। তবে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও অংশ নেবে না বিএনপি। এ বিষয়ে দলটির দায়িত্বশীলরা জানান, ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পরিষদ বা স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে আর কোনো নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী কোনো নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি। একই সিদ্ধান্তের আলোকে আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও অংশ নেবে না বিএনপি। জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ও দলটির মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার বিষয়ে বিএনপির অতীতের নেওয়া সিদ্ধান্ত এখন পর্যন্ত বহাল রয়েছে। আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যাওয়ার নতুন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নির্বাচন নিয়ে তেমন কোনো আগ্রহ কিংবা উত্তাপ নেই বিএনপিতে। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে এখনো অটল বিএনপি। এই ইস্যুতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনও বয়কট করে তারা। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও যায়নি। নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর যারা দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ভোট করেছেন, সবাইকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাই আসন্ন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উল্লেখযোগ্য কোনো বিএনপি নেতার স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ারও সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
কারণ দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করলে অতীতের মতোই দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু জানান, বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে শুধু বিএনপির নেতা-কর্মী নয়, সাধারণ জনগণও আগ্রহ হারিয়েছে। জানা যায়, সর্বশেষ ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে ইভিএমে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে লড়াই হয়েছিল প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের প্রতীক নৌকা ও ধানের শীষের মধ্যে।
ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান রয়েছে। আর আইন অনুযায়ী করপোরেশনের প্রথম বৈঠক থেকে এর মেয়াদ গণনা শুরু হয়। এ ক্ষেত্রে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২০ সালের ২ জুন। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ২০২০ সালের ৩ জুন।
সেই হিসাবে ঢাকা উত্তর সিটির নির্বাচনি ক্ষণগণনা শুরু হবে চলতি বছরের ৪ ডিসেম্বর থেকে। আর দক্ষিণ সিটির ক্ষণগণনা শুরু হবে ৫ ডিসেম্বর। দুই সিটির মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছরের ১ ও ২ জুন। দিন গণনার শুরুর দিন থেকে যে কোনো দিন ভোট গ্রহণ করতে পারবে ইসি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন