সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় অল্প খরচে বস্তায় আদা চাষ: কৃষকের ব্যাপক সাফল্য

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় অল্প খরচে পরিত্যক্ত স্থানে বস্তায় আদা চাষাবাদ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে এক কৃষক। তার নাম মো: আলাউদ্দিন। তিনি উপজেলার সলঙ্গা ইউনিয়নের চক চৌবিলা গ্রামের বাসিন্দা। তার এমন সাফল্য এই চাষাবাদে কৃষকদের ব্যাপক লাভবানের সম্ভাবনা দেখছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

জানা যায়, উল্লাপাড়া কৃষি অফিসের পরার্মশে এবারই প্রথম বস্তায় আধুনিক পদ্ধতিতে আদা চাষাবাদ করেন কৃষক আলাউদ্দিন। বাড়ির সামনে পুকুরপাড়ে পরিত্যক্ত স্থানে ১শ’৬০টি বস্তায় তিনি এভাবে আদা চাষাবাদ করেছেন। প্লাস্টিকের বস্তা কেটে তাতে জৈব সারসহ বিভিন্ন সার মিশিয়ে ২০ কেজি মাটি ভরেন। এরপর তাতে আদা রোপণ করেন।

প্রতি বস্তায় এই আদা চাষাবাদ করতে তার মাত্র ১২ টাকা করে খরচ হয়েছে। ইতোমধ্যে সারি সারি বস্তার আদা গাছ অনেক বড় হয়েছে। তাতে প্রচুর আদা ধরতে শুরু করেছে। প্রতি বস্তা থেকে গড়ে ৩ কেজি করে আদা পাবার আশা করা হচ্ছে। এখান থেকে ৪শ’৮০কেজি আদা পাবার সম্ভাবনা রয়েছে। ১শ’ টাকা কেজি দরে যার বর্তমান বাজারমূল্যে দাঁড়ায় অর্ধ লক্ষাধিক টাকা।

অথচ এই পুরো চাষাবাদে তার খরচ হয়েছে মাত্র দুই হাজার টাকার নিচে। কৃষক আলাউদ্দিনের আদা চাষের এমন সাফল্য দেখতে প্রতিদিন ছুটে আসছে স্থানীয় অন্য কৃষকরা। তারাও এমন সাফল্য দেখে আদা চাষের আগ্রহী হচ্ছেন। অল্প খরচে এভাবে আদা চাষাবাদে কৃষকদের ব্যাপক লাভবান হবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি কৃষকদের বাড়ির পরিত্যক্ত, পতিত জমিও চাষাবাদের আওতায় আসবে।

কৃষক শামিম আহমেদ জানান, তিনি পুকুরে মাছ চাষ, বাড়িতে মুরগি পালন করেন। কৃষি চাষাবাদের পাশাপাশি এবারই প্রথম বস্তায় আদা চাষাবাদ করেছেন। বস্তায় আদা চাষ খুব সহজ এবং লাভজনক। এপ্রিল মাসে তিনি আদা লাগিয়েছেন।

জানুয়ারিতে বস্তা থেকে আদা তুলবেন। এখন পর্যন্ত তিনি ভাল ফলন পাবার আশা করছেন। সামনের বছর তিনি এক হাজার বস্তায় এই চাষাবাদ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকতা কৃষিবিদ সূর্বনা ইয়াসমিন সুমি জানান, আমরা কৃষক আলাউদ্দিনকে বস্তায় আদা চাষাবাদে সব রকম পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে আসছি। তিনি খুব অল্প খরচে এই চাষাবাদ থেকে অনেক টাকা লাভবান হবেন।

এ চাষাবাদে খরচ এবং পরিশ্রম একেবারের ঝামেলাবিহীন। বাড়ির সামনে পরিত্যক্ত, পতিত স্থানে আমরা আদা চাষাবাদে কৃষকদের তাগাদা দিচ্ছি। আশা করছি চলতি বছরেই উপজেলা জুড়ে অনেক কৃষককে এই চাষাবাদ যুক্ত হবেন।

এতে কৃষকরা যেমন লাভবান হবেন তেমনি দেশের বাইরে থেকে আদা আমদানি কমানো যাবে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় প্রতি ইঞ্চি জমি চাষাবাদের আওতায় আনা যাবে।