সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে চাচা চাচীকে মা বাবা বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি চাকরি!
সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে জাতীয় পরিচয় পত্রে ও স্কুল কলেজের সনদে চাচাকে বাবা ও চাচীকে মা বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি চাকরি করছেন ও তাদের সম্পতি দখল করার চেষ্টা করছেন মেহেরাব আলী মধু নামের এক ব্যক্তি।
মেহেরার আলী মধু তিনি উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের মৃত বুজরুত আলী শেখের ছেলে। তবে বর্তমানে মেহরাব আলী মধু তার বাবার নাম আব্দুল করিম শেখ ও মাতার নাম ফরিদা বেগম দাবী করে আসছেন কিন্তু তারা সম্পর্কে তার চাচা ও চাচী হন। আব্দুল করিম শেখ একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মেহরাব আলী মধু বর্তমানে বড় বেড়াখারুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মেহেরাব আলী মধু সরকারি চাকরির আশায় উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিম শেখকে বাবা ও তার স্ত্রী ফরিদা বেগমকে মা বানানোর কৌশন নেন। এর পর শিক্ষাসনদ ও জাতীয় পরিচয় পত্রে বাবা মৃত বুজরুত আলীর জায়গায় চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিমের নাম বসান এবং মাতা সারা বানুর জায়গায় ফরিদা বেগম বসিয়ে নেন। এর পর আব্দুর কাদেরের ছেলে সেজে ৮ মার্চ ২০২০ সালের মুক্তিযোদ্ধা কোটায় প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি নেন। শুধু তাই নয় বীর মুক্তিযোদ্ধার পুত্র সন্তান না থাকায় তাদের সম্পত্তি দখল করারও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আব্দুল কাদের স্ত্রী ফরিদা বেগম বলেন, মেহেরাবব আলী মধু সম্পর্কে আমার ভাতিজা হয়। কিন্তু চাকরির নেওয়ার লোভে আমার স্বামীকে তার বাবা ও আমাকে তার মা বানিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রে ও স্কুল সনদে অন্তর্ভুক্ত করেন। এছাড়াও আমার পুত্র সন্তান না থাকার কারনে আমার স্বামীর বসত ভিটা জোর পুর্বক দখল করার চেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে ইতি মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
নাম গোপন রাখার শর্তে এলাকাবাসীর অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, মেহেরাব আলী মধু মূলত জালিয়াতি করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সেজে মুক্তিযোদ্ধার কোটায় সরকারি চাকরি ও সকল সুযোগ সুবিধা নিচ্ছেন। তিনি বর্তমানে সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি করছেন।
এ বিষয়ে মেহেরাব আলী মধু বলেন, চাচা মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি চাকরি নেয়ার জন্য আমার জাতীয় পরিচয়পত্রে ও স্কুল কলেজের সনদে চাচাকে বাবা বানিয়েছি। এর জন্য যদি চাকরি চলে যায় যাক আমার আর চাকরি করার ইচ্ছে নাই।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান জানান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। তদন্ত করে প্রতিবেদন জেলায় পাঠিয়ে দেয়া হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম মন্ডল জানান, জাতীয় পরিচয়পত্র ও স্কুল কলেজের সনদে বাবা মায়ের নাম জালিয়াতি করে চাকরি নেয়ার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন