সিরিয়ায় কেন স্থায়ী ঘাঁটি রাখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র?

যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ায় স্থায়ী সামরিক ঘাঁটি রাখতে চায়। কিন্তু কেন মার্কিন প্রশাসন এ ঘাঁটি রাখতে চাইছে? এমন প্রশ্নের জবাবে মার্কিন সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা জেমস জাত্রাস জনিয়েছেন, ইরাক ও সিরিয়া থেকে শুরু করে লেবানন পর্যন্ত ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রভাব ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র এ ঘাঁটি রাখতে চায়। ইরানের প্রেস টিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জাত্রাস এ মন্তব্য করেছেন।

রাসায়নিক অস্ত্রের অজুহাতে সিরিয়ায় মার্কিন সরকার সামরিক হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে বলে বৃহস্পতিবার খবর প্রকাশ হয়। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে জেমস জাত্রাস বলেন, “আমি এ কথা নিশ্চিত করতে পারছি না যে, রাসায়নিক অস্ত্রের অভিযোগে মার্কিন সরকার সিরিয়ার হামলার কথা বিবেচনা করছে। তবে এমন হামলা যদি হয় তবে তা মোটেই বিস্ময়কর হবে না।”

জাত্রাস বলেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন যে, তিনি সিরিয়ায় উগ্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দায়েশকে পরাজিত করবেন এবং এখন আমরা কী দেখছি। অবশ্য এটা খুবই স্পষ্ট যে, ট্রাম্পের চারপাশ ঘিরে যে জাতীয় নিরাপত্তা টিম রয়েছে তাদের আলাদা লক্ষ্য রয়েছে। তারা এখনো আগের প্রশাসনের ধারণাতেই বদ্ধমূল রয়েছেন যে, প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদকে অবশ্যই ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হবে।”

সিরিয়ায় হামলার আশঙ্কা প্রসঙ্গে জাত্রাস বলেন, “এটা অত্যন্ত বিপজ্জক ঘটনা এবং আমি মনে করে এটা ট্রাম্পের ক্ষমতায় আসার আগের প্রতিশ্রুতির বিপরীত নীতি। কিন্তু আমরা এখন তাই দেখছি এবং এটা খুবই বিপজ্জনক ও বিরক্তিকর বিষয়।”

মার্কিন সরকারের শীর্ষপর্যায়ের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, সিরিয়া সম্ভবত নতুন ধরনের রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি করছে। এ কারণে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সিরিয়ায় সামরিক অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

সিরিয়া সংকট শুরু দিকেই সিরিয়া আন্তর্জাতিক নজরদারিতে তার সব রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস করেছে। বিষয়টিতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার বিশেষজ্ঞরা জড়িত ছিলেন। এরপরও নতুন করে সিরিয়ার বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র তৈরির অভিযোগ আনা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে- সিরিয়ায় হামলা চালানোর ক্ষেত্রে এ অভিযোগ নিতান্তই অজুহাত মাত্র।

এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষয়িষ্ণু প্রভাব ধরে রাখার লক্ষ্যে ট্রাম্প প্রশাসন অনেকটা মরিয়া হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নারী কেলেংকারিসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। সম্প্রতি জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালির সঙ্গেও ট্রাম্পের যৌন সম্পর্কের খবর বের হয়েছে। এ অবস্থায় দেশের মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নিতে ট্রাম্প প্রশাসন সিরিয়ায় হামলার চিন্তা করছে বলে ধারণা করা যায়।