সিলেটের জৈন্তাপুরে আলোচিত ডালিম হত্যার রহস্য উদঘাটন
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2022/03/123-900x450.jpg)
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2025/02/475351977_1256003665483861_2959209934144112011_n.jpg)
কত কয়েক দিনের টানা আলোচনার ঝড় সিলেটের জৈন্তাপুরে নিখোজ হওয়া রাজমিস্ত্রী ডলিম কে নিয়ে। পরে লাশ উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ এর রহস্য উদঘাটন করতে মাঠে নামে মাথা বেধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অবশেষে তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ডালিম হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়। আসামী ফজর আলী ওরফে ফখর (৩৫) একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সোমবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যায় সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তি দেয় ডালিম হত্যার রহস্য নিয়ে আসামী। আদালতের বিচারক নুশরাত শারমিন তার জবানবন্দি রেকর্ডের পর কারাগারে প্রেরণের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন।
এর আগে বিকেলে তাকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জৈন্তাপুর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম।
ফজর আলীর জবানবন্দির বরাত দিয়ে আদালত সূত্র জানায়, তার কিছু গোপন তথ্য জানতো ডালিম। এটাকে ইস্যু করে টাকা আদায় করে আসছিল। তথ্য ফাঁস করে দেওয়ার কথা বলে যথারীতি ব্লাকমেইল করে টাকা আদায় করতো সে। এ কারণে নিজের সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়।
তার ভাষ্যমতে, একজন ট্রান্সজেন্টার তথা হিজড়ার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। এটাকে ইস্যু করে মাসের পর মাস টাকা নিচ্ছিল। এক পর্যায়ে ডালিমকে পাশ কাটিয়ে চলায় সে ওই হিজড়াকে তার বাসার সামনে নিয়ে আসে। বিষয়টি জানাজানি হলে চাকরি হারানোর শঙ্কায় পড়েন ফজর আলী। তার কাছে আরও ৩০ হাজার দাবি করে ডালিম। ঘটনার রাতে ৫ মার্চ ৫ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলে ফোনে ডেকে এনে তাকে ছুরিকাঘাত করে জবাই করে হত্যা করেন।
হত্যাকাণ্ডের সময় ধস্তাধস্তি করতে গিয়ে নিজের হাতও কেটে যায়। হত্যার পর ডালিমের ওয়ালি সিটির একটি প্লটে বিদ্যুতের খুঁটি সংলগ্ন জমির আইলের পাশে মাটিতে পুতে ফেলেন।
পুলিশ জানায়, রাজমিস্ত্রী ডালিম আহমদ নিখোঁজের ঘটনায় তার বাবা বাচ্চু মিয়া ৬ মার্চ জৈন্তাপুর মডেল থানায় একটি জিডি করেন। তাতে তিনি তার ছেলে ডালিম মিয়া ৫ মার্চ থেকে নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তার অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা করে।
৭ মার্চ উপজেলার দেও চাপরা হাওরের সাহেব আলী ওরফে তারেক হাজির পুকুর হতে অর্ধ গলিত একটি মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে উপস্থিত লোকজন ডালিমের মরদেহ হিসেবে শনাক্ত করলে ময়না তদন্ত সম্পন্নের পর পুলিশ মরদেহ পরিবারের কাছে হস্থান্তর করলে দাফন করা হয়।
ওই রাতে ঘাটেরচটি নয়াটিলা জামে মসজিদের পাশে আরেকটি মরদেহ উদ্ধার করে জৈন্তাপুর থানা পুলিশ। সিআইডির এক্সপার্ট টিম মরদেহের ফিঙ্গার প্রিন্ট যাচাই করে মৃত দেহটি ডালিমের নিশ্চিত হয়।
ঘটনাচক্রে জৈন্তাপুর মডেল থানায় বাচ্চু মিয়া বাদী হয়ে একটি এবং সত্যানন্দ বাদী হয়ে আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। উভয় ঘটনার প্রকৃত আসামীদের খোঁজে বের করতে সিলেট জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিনের (পিপিএম) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মো. লুৎফর রহমানের তত্ত্বাবধানে দুটি টিম করে দেন।
পাশাপাশি জেলা গোয়েন্দা শাখার উত্তর এবং দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে বিশেষ টিম গঠন করে থানা পুলিশকে সহায়তা প্রদান করা হয়।
বিশেষ টিমের সদস্যরা গত ৯ মার্চ ডালিম হত্যাকান্ডের মূল হোতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতাল থেকে গ্রেফতার করেন। আসামি ফজর আলী ওরফে ফখর মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া ইউনিয়নের ভগতপুর কাজী গ্রামের মোসাদ্দেক আলীর ছেলে। সে সেনানীবাসে বাবুর্চির কাজ করতেন। গ্রেফতারের হত্যাকান্ডের বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2024/12/469719549_122234398946008134_2936380767280646127_n.jpg)
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন