সিলেটের বিশ্বনাথে জামায়াত নেতা রব্বানী হত্যা: সাবেক মন্ত্রীসহ ৭২ জনের বিরুদ্ধে মামলা
সিলেটের বিশ্বনাথে ২০১৩ সালে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত জামায়াত নেতা গোলাম রব্বানীর হত্যার অভিযোগে সাবেক মন্ত্রীসহ ৭২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সিলেটের আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন তার চাচা ও বিশ্বনাথ উপজেলা জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান। মামলার নম্বর ২৬৮/২০২৪। আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত তাসনিম মামলাটি আমলে নিয়ে বিশ্বনাথ থানাকে আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেছেন।
মামলায় সাবেক প্রবাসী ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরী, বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়্যারম্যান এস.এম. নুনু মিয়া, তৎকালীন বিশ্বনাথ থানার ওসি মোঃ আবুল কালাম আজাদসহ মোট ৭২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও, পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং আওয়ামী লীগের আরও ১৫০-২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী মতিউর রহমান তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, ২০১৩ সালের ২০ মার্চ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের পূর্ব ঘোষিত হরতালকে কেন্দ্র করে বিশ্বনাথ উপজেলায় একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওইদিন সকালে বিশ্বনাথ উপজেলা সদরে মিছিল চলাকালে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে।
পুলিশের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগের কর্মীরা মিছিলে হামলা চালায়, এতে গোলাম রব্বানীসহ অনেকেই গুলিবিদ্ধ হন। পরে গোলাম রব্বানীকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃতুবরণ করেন।
মামলায় বাদী আরোও অভিযোগ করেন, তার ভাতিজা গোলাম রব্বানীর হত্যাকান্ড ছিল একটি পূর্বপরিকল্পিত হামলা, যা সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সংঘটিত হয়েছিল। মামলায় তদন্ত শেষে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির আবেদন জানান তিনি।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, সিলেট-২ আসনের সাবেক এমপি ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী (৫৫), বিশ্বনাথ পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আলতাব হোসেন (৪৮), দেওকলস ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ফখরুল আহমদ মতছিন (৫০), পূর্ব জানাইয়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে শামীম উরফে চাকু শামীম (৩২), বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমদ (৫০),
যুবলীগ নেতা মুহিবুর রহমান সুইট (৩৫), ভোলাগঞ্জ গ্রামের মৃত আং মুতলিবের ছেলে আং নূর (৫০), সাবেক বিশ্বনাথ উপজেলা চেয়ারম্যান এস.এম. নুনু মিয়া (৪৫), মোল্লারগাঁও গ্রামের মৃত ময়না মিয়ার ছেলে ফজর আলী (৩৫), টিমাইঘর গ্রামের এহিয়া মিয়ার ছেলে সাহাব উদ্দিন (৪০), সরিষপুর গ্রামের মৃত জয়ধুর ছেলে রফিক আলী (৩৮), দীপবন্দ গ্রামের আং রহমানের ছেলে গিয়াস উদ্দিন (৩৫),
তবলপুর (খাজাি) গ্রামের খুরশিদ আলীর ছেলে কালা দুদু (৩২), মোহাম্মদপুর (খাজাি) গ্রামের ধীরেন্দ্র ধরের ছেলে শংকর চন্দ্র ধর (৩৮), শাহজিরগাঁও গ্রামের রইছ আলীর ছেলে আং হক (৪০), পূর্ব চানশির কাপন গ্রামের তবারক আলীর ছেলে সিরাজুল ইসলাম রোকন (৩৬), শাহজিরগাঁও গ্রামের সোনাফর আলীর ছেলে ফয়জুল ইসলাম জয় (৩৮), রহিমপুর (মাঝপাড়া) গ্রামের ভুরু মিয়ার ছেলে মাতিন মিয়া (৩৫),
রাজনগর গ্রামের মৃত সমুজ আলীর ছেলে সুহেল মিয়া (৪০), কাউপুর গ্রামের মছদ্দর আলীর ছেলে শাহজাহান সিরাজ (৫০), সোনাপুর গ্রামের আং হান্নানের ছেলে ফয়সল আহমদ (৪৩), তেলিকুনা গ্রামের রুস্তম আলীর ছেলে মিজাজুল হোসেন (৪৫), লামার চক গ্রামের ওহাব আলীর ছেলে আং শহিদ (৪০), রাম চন্দ্রপুর গ্রামের সুফই মিয়ার ছেলে আহমদ শরীফ (৪৫), বড়খুরমা গ্রামের মৃত মাটিয়াপীরের ছেলে আইয়ুব আলী (৪০)।
ধর্মদা গ্রামের মৃত সমসু মোল্লার ছেলে শাহ আছাদুজ্জামান (৫০), শাহজিরগাঁও গ্রামের মৃত আরজান আলীর ছেলে রফিক আলী (৪৮), পাকিছিরি গ্রামের মৃত আফরোজ আলীর ছেলে নূর উদ্দিন উরফে সাজুর (৩৮), সরদার পাড়া, দেওকলস গ্রামের রমা কান্ত দের ছেলে রুনু কান্ত দে (৪৫), দৌলতপুর গ্রামের অজ্ঞাত পিতার ছেলে আলী আকবর মিলন (৫২), আটপাড়া গ্রামের মৃত আজম আলীর ছেলে মকসুদ (৫০), মিয়াজনের গাঁও গ্রামের মৃত সাজিদ মিয়ার ছেলে দবির মিয়া (৩৮)।
রশিদপুর গ্রামের মোবারকের ছেলে ফিরোজ (৫৪), কজাকাবাদ, দেওকলস গ্রামের মৃত মন্তাজ আলীর ছেলে দেলোয়ার হোসেন রুপন (৫২), মইজপুর গ্রামের গয়াছ মিয়ার ছেলে আং রউফ (৪৫), খাতুপুর ডাক: নতুন বাজার, থানা-ওসমানী নগরের আশরাফ আলীর ছেলে মবশীর আলী (৪৫), বিশ্বনাথ পুরান বাজারের আ: হাসিমের ছেলে শামসুল হক (৫৫), মাজরগাঁও, দেওকলস গ্রামের মৃত এলেমান খাঁনের ছেলে সুহেল খান (৪০)।
দেওকলস উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত ছৈদ উল্ল্যার ছেলে ইরন মিয়া (৫০), উত্তর ধর্মদা গ্রামের কলম মিয়ার ছেলে শেখ নূর মিয়া (৫০), রামপাশা গ্রামের মৃত সারংয়ের ছেলে রফিজ আলী (৪৫), রামপাশা গ্রামের মৃত মনির উদ্দিনের ছেলে ফখর উদ্দিন (৪৮), বেতসান্দি গ্রামের চান্দ আলীর ছেলে রফিক মিয়া (৫০), তৎকালীন বিশ্বনাথ থানার ওসি মোঃ আবুল কালাম আজাদ (বিপি নং ৬৫৮৮০৫২২৪২)।
এস.আই. জিয়া উদ্দিন উজ্জল, (বিপি নং ৭৫৯৬০১৬৬০৩), পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রুপক কুমার সাহা, (বিপি নং ৬৫৮৯১১৫২৭৫), এস.আই. মাজহারুল ইসলাম, কনস্টেবল/৬৬০ আবু মুসা, কনস্টেবল/৪১২ কবির হোসেন, কনস্টেবল/১১৫০ টিটু সিংহ, কনস্টেবল/৬৮৭ তৌফিক, কনস্টেবল/৩৩৮ মোস্তাক, কনস্টেবল/৭৮৭ আব্দুল্লা আল মামুন, কনস্টেবল/৭৬৫ শরিফ উদ্দিন, কনস্টেবল/৭৩০ কাউছার, কনস্টেবল/৬৭ কৃষ্ণ গোপাল।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন