সিলেটের বিশ্বনাথে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দুর্নীতির প্রতিবাদে এলাকাবাসীর সংবাদ সম্মেলন

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ দেলোয়ার হোসেন কর্তৃক দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও লুটপাটের প্রতিবাদে বিশ্বনাথ উপজেলাবাসীর উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
(১৮ অক্টোবর) শনিবার বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অদ্য ১৮ অক্টোবর শনিবার এরপর থেকে যদি তাকে উক্ত পদ থেকে অপসারণ করা না হয় তাহলে আগামী পহেলা নভেম্বর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মানববন্ধন ও এর পরবর্তী সপ্তাহ থেকে অবস্থান কর্মসূচি চলমান থাকবে বলে জানানো হয়। বিশ্বনাথ উপজেলাবাসীর পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন সাবেক মেম্বার ও বিশিষ্ট সমাজসেবী মোঃ আনিসুজ্জামান খান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন,বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সমস্ত বিশ্বনাথবাসীর চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তির একমাত্র আশা-ভরসার স্থল। দারিদ্র পীড়িত এক বিরাট অঞ্চলের মানুষ এখানে স্বাস্থ্য সেবা পেতে প্রতিদিন ভীড় জমায়। কিন্তু ডাক্তার নাই, ঔষধ নাই, এ পরিস্থিতিতে পড়ে প্রতিদিন রোগীদের ভোগান্তি বাড়ছে এবং অহরহ রোগীদের দুর্ঘটনা ঘটছে।
বিশেষ করে ভারপ্রাপ্ত টি,এইচ,ও ডাঃ দেলোয়ার হোসেন দায়িত্ব নেওয়ার পর হাসপাতালে স্বাস্থ্য সেবা একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে যা দ্রুত প্রতিকার না হলে জনতা সংঘবদ্ধ হয়ে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে।
তিনি আরো বলেন, কয়েকমাস পূর্বে মহিলাদের জরায়ু-মুখের ক্যান্সার পরীক্ষা কর্মসূচিতে ডাঃ দেলোয়ার হোসেন সুমন বিশ্বনাথের প্রায় কয়েক হাজার মহিলার জরায়ু-মুখের ক্যান্সার পরীক্ষা হয়েছে বলে যে তথ্য দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ ভূয়া, মনগড়া ও বানোয়াট বটে।
তিনি বিভিন্ন কায়দায় মহিলাদের এনআইডি কার্ড সংগ্রহ করে সম্পূর্ণ ভুয়া তথ্য দিয়ে একই মোবাইল নম্বর একাধিক মহিলার নামে দেখিয়ে এবং ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে এ তথ্য দেখিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন এবং জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। এই কার্যক্রম ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা ও সাজানো।
বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিজে প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখাকে গুরুত্ব দিয়ে হাসপাতালে অনুপস্থিত থাকেন। তাহার ইচ্ছামতো অফিসে আসেন। জরুরী বিভাগে ও ডাক্তার পাওয়া যায় না। অন্যান্য কর্মচারীরা জরুরি বিভাগ চালান।
হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি একটি বড় বিষয়। এক্ষেত্রে অফিস সহকারী আলী আহমদ (ভারপ্রাপ্ত ক্যাশিয়ার) অবৈধ অর্থ সংগ্রহে প্রধান ভূমিকা রাখেন। বেতন থেকে পার্সেন্টেজ, নিয়োগ বাণিজ্য, ঘুষ, ঔষধ ক্রয়ে অনিয়ম, মালামাল বিক্রি, ভুয়া ভাউচার ইত্যাদির মাধ্যমে ডাঃ দেলোয়ার হোসেন ও আলী আহমদ বর্তমানে কোটি কোটি টাকার মালিক। প্রতিদিন হাসপাতালে আসা রোগি ও গার্জিয়ানের প্রতি এদের রূঢ় আচরণ, হুমকি-দামকি সর্বজনবিদিত।
লিখিত স়ংবাদ সম্মেলনে হাসপাতালের দুর্নীতি ও অনিয়মের কিছু তথ্য সম্বলিত স্মারকলিপি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবরে গত ৯ অক্টোবর প্রদান করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন এবং এর কপি সাংবাদিকদের সরবরাহ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অদ্য ১৮ অক্টোবর এরপর থেকে এই হাসপাতাল থেকে যদি ডাঃ দেলোয়ার হোসেনকে অপসারণ করা না হয় তাহলে আগামী ০১/১১/২৫ ইং থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মানববন্ধন এবং পরবর্তী সপ্তাহ থেকে অবস্থান কর্মসূচী চলমান থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত এই চিকিৎসককে সেখান থেকে অপসারিত করা না হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবক ,বশির আহমদ, মনির আহমদ, এ.কে. এম হেকিম উদ্দিন মাষ্টার, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোঃ রজু মিয়া,এলাকার বিশিষ্ট মুরব্বী হুসিয়ার আলী, মোঃ সোনা উদ্দিন, মোঃ চমক আলী,আব্দুল শহীদ প্রমূখ।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন