সিলেটে হাওর ও নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে

গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির পানি ও ভারতের উজান থেকে আসা বন্যার পানি সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজারে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে ছিলো। মুনু নদী দিয়ে বন্যার পানি ভারত থেকে আসতে থাকে, ভোর ৬ টার দিকে মুনু নদী স্বাভাবিক থাকলেও বেলা বাড়তে না বাড়তে মুহুর্তে নদীর আশ পাশা এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। এ দিকে বৃষ্টি অন্য দিকে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানিতে জন জীবন দুর্বিসহ করে তুলে।

শুক্রবার (২৩ আগষ্ট) দুপুর থেকে ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় সিলেটে নদ-নদীর পানি কিছুটা কমেছে। তবে এখনো জেলার কুশিয়ারা নদীর চার পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, টানা ভারী বৃষ্টি ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গত দুই দিন সিলেটের নদ-নদীর পানি বেড়েছে। তবে জেলার কোথাও বনা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি।

শুক্রবার (২৩ আগষ্ট) সকাল নয়টা পর্যন্ত সিলেটের কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ, শেওলা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও শেরপুর পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বৃহস্পতিবারও ওই চার পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপরে ছিল। তবে শুক্রবার (২৩ আগষ্ট) পানি কিছুটা কমেছে।

এদিকে গত কয়েক দিনের তুলনায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অনেকটাই কমেছে বলে সিলেট আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। তাদের সূত্র অনুযায়ী, শনিবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর আগে গত সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে গত মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৮ ঘণ্টায় জেলায় ২১৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ ছাড়া গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।

স্থানীয় প্রশাসন ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভারী বৃষ্টি ও ঢলের কারণে সিলেটে বিভিন্ন নদ-নদীর পানি কিছুটা বেড়েছিল। তবে তা আশঙ্কাজনক নয়। শুকবার বিকেল থেকে বৃষ্টিপাত খুব বেশি না হওয়ায় পানি কমতে শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। তবে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যার শঙ্কা রয়েছে।

পাউবো সূত্রে জানা গেছে, সুরমা, কুশিয়ারা, লুভা, সারি, ডাউকি, সারি- গোয়াইন, ধলাইসহ জেলার সব কটি নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। এর মধ্যে শনিবার সকাল নয়টা পর্যন্ত কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা থেকে শূন্য দশমিক ২১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। নদীটির শেওলা পয়েন্টে শূন্য দশমিক ০২ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে শূন্য দশমিক ৭৪ সেন্টিমিটার এবং শেরপুর পয়েন্টে শূন্য দশমিক ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, নদ-–নদীতে পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এখনো কুশিয়ারা নদীর চার পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার কোথাও বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি।