সিলেট সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে

সোমবার (১৭ জুন) পবিত্র ঈদুল আজহা। সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় নিন্ম এলাকায় বন্যায় আক্রান্তদের মাঝে নেই ঈদের আনন্দ। দফায় দফায় বন্যায় মানুষের বাড়ি ঘরের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হলে পশু কোরবানী দিতে অনেকের অনীহা। বৃহস্পতিবার (১৩ জনু) ভোর থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টি ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত চলমান থাকায় সিলেটের নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। আর এই ঈদের খুশির সঙ্গে সিলেটবাসী দুয়ারে কড়া নাড়ছে বন্যা আতঙ্ক।
শুক্রবার (১৪ জুন) দিনে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিছুটা কমলেও সন্ধ্যার পর থেকে আবারও শুরু হয় বৃষ্টি। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার (১৫ জুন) বেলা ১২টা পর্যন্ত টানা বৃষ্টির কারণে নদ নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
ইতোমধ্যে কুশিয়ারা নদীর পানি ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ও সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) বৃষ্টিপাত হয়েছে ৬২ মিলিমিটার। শনিবার (১৫ জুন) সকাল ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত সিলেটে বৃষ্টিপাত হয়েছে ৪৫ মিলিমিটার। সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে ১১ মিলিমিটার। কিন্তু রোববার সকাল ১০ টা পর্যন্ত কত মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত তথ্য দিতে পারেনি আবহাওয়া অফিস।

এদিকে ভারতের আবহাওয়া বিভাগের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত) ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৫১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যার ফলে সিলেটের সবকটি নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে।
অপর দিকে পাঁচদিন সিলেট অঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট কার্যালয়ের তথ্য মতে, বর্ষাকালে সুরমা নদীর কানাইঘাট এলাকার ডেঞ্জার লেভেল ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার। শুক্রবার এই পয়েন্টে পানি ছিল ১১ দশমিক ৮৫ সেন্টিমিটার। শনিবার দুপুর ৩টায় এই পয়েন্টে পানি ১৩ দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবহিত হচ্ছে।
সিলেট পয়েন্টে সুরমা নদীর ডেঞ্জার লেভেল ১০ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। শুক্রবার এই পয়েন্টে নদীর পানি ছিল ৯ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার। শনিবার দুপুর ৩টায় এই পয়েন্টে পানি ১০ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার।

কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশিদ পয়েন্টে ডেঞ্জার লেভেল হচ্ছে ১৫ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার। শুক্রবার এই পয়েন্টে নদীর পানি ছিল ১৩ দশমিক ৫৯ সেন্টিমিটার। শনিবার দুপুর ৩টায় এই পয়েন্টে পানি ১৪ দশমিক ৫২ সেন্টিমিটার।

কুশিয়ারা নদী ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানির ডেঞ্জার লেভেল ৯ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার। শনিবার এই পয়েন্টে পানি ছিল ৯ দশমিক ৯৪ সেন্টিমিটার। শনিবার দুপুর ৩টায় এই পয়েন্টে পানি ১০ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবহিত হচ্ছে।

সারি নদীর সারিঘাট পয়েন্টে ডেঞ্জার লেভেল হল ১২ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার। শুক্রবার এই পয়েন্টে নদীর পানি ছিল ১০ দশমিক ৫৮ সেন্টিমিটার। শনিবার দুপুর ৩টায় এই পয়েন্টে পানি ১২ দশমিক ১৯ সেন্টিমিটার। সারিগোয়াইন নদীর গোয়াইনঘাট পয়েন্টে ডেঞ্জার লেভেল হলো ১০ দশমিক ৮২ সেন্টিমিটার। শুক্রবার এই পয়েন্টে নদীর পানি ছিল ৯ দশমিক ৪৩ সেন্টিমিটার। শনিবার দুপুর ৩টায় এই পয়েন্টে পানি ১০ দশমিক ১২ সেন্টিমিটার। পিয়াইন (ডাউকি) নদীর জাফলং পয়েন্টে ডেঞ্জার লেভেল হল ১৩ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার। শনিবার এই পয়েন্টে পানি ছিল ৯ দশমিক ৭৩ সেন্টিমিটার। শনিবার দুপুর ৩টায় এই পয়েন্টে পানি ১০ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার। সকল নদ নদীদের পানি বৃদ্ধির পফে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ঈদে সবাইকে বন্যা মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে।