সীমান্তে উত্তেজনা: ভারতীয়দের ছোড়া পাথরে ৩ বাংলাদেশি আহত

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চৌকা সীমান্তে গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের নাগরিকদের মধ্যে আবারও উত্তেজনা শুরু হয়েছে। এ সময় ভারতীয়দের ছোড়া পাথরের আঘাতে তিন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন।

শনিবার শূন্যরেখায় দফায় দফায় দুই দেশের নাগরিকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটেছে।

ভারতীয়দের হামলায় আহত হয়েছেন বিনোদপুর ইউনিয়নের কালীগঞ্জ নামোটোলা এলাকার যুবক মেসবাহুল হক, বিশ্বনাথপুর গ্রামের মো. রনি ও মো. ফারুক।

স্থানীয়রা জানায়, সকালে ভারতের কয়েকজন নাগরিক সীমান্তের শূন্যরেখায় বাংলাদেশ অংশে এসে আমগাছের ডালপালা কাটছিল। এ সময় বাংলাদেশিরা বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়।

পরবর্তীতে দুই দেশের নাগরিকরা সংঘবদ্ধ হয়ে শূন্যরেখার কাছাকাছি অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া হয়। এতে ভারতীয়দের হামলায় তিন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ভারতীয়রা ইটপাটকেল ও পাথরের পাশাপাশি ককটেল বিস্ফোরণও ঘটিয়েছে। দুপুর পর্যন্ত বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।

এ বিষয়ে বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. বাদশা বলেন, সীমান্তে গম কাটা নিয়ে উত্তেজনা শুরু হয়। ভারতীয় লোকজন বাংলাদেশ অংশে ঢুকে পড়লে উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। এতে তিন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া জানান, উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত বিজিবি সদস্য কাজ করছে। দুই পক্ষকে সীমান্ত থেকে সরিয়ে দিতে বিজিবি সদস্যরা কাজ করছেন।

পরবর্তীতে আজ বিকেলে এক ব্রিফিংয়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, চৌকা ও কিরণগঞ্জ ক্যাম্পের মাঝামাঝি সীমান্ত পিলার ১৭৭ বরাবর বাংলাদেশের ভেতরে কিছু আমগাছ ছিল। ওই আমগাছ কাটা নিয়ে ভারতীয় নাগরিক ও বাংলাদেশি নাগরিকের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। তখন শূন্যরেখা বরাবর দুই দেশের নাগরিকেরা দাঁড়িয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে বিজিবির জনবল বাড়ানো হয় এবং তারা ঘটনাস্থলে চলে আসেন।

পরে বিকেল চারটা ১০ মিনিটে বিজিবি ও বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ে একটি পতাকা বৈঠক হয়। যেখানে এ ঘটনার জন্য বিএসএফের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করার পাশাপাশি গাছ কাটার বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে।

এ ঘটনার সম্পূর্ণ বিচার না হওয়া পর্যন্ত বিজিবি মাঠে আছে এবং কেউ যাতে শূন্য রেখা অতিক্রম না করে এবং উত্তেজনা প্রশমিত করতে বিজিবি প্রস্তুত আছে। বিজিবির পাশে দেশপ্রেমিক জনগণও আছেন বলে জানান এই কমান্ডার।

এর আগে, গত ৫ জানুয়ারী থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত টানা চারদিন একই ইউনিয়নের চৌকা সীমান্তে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করে। বিএসএফ স্থানীয়দের সহায়তায় আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করে অবৈধস্থানে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করলে এ উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তবে বিজিবি ও স্থানীয় বাংলাদেশিদের বাধার মুখে বিএসএফ কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়।