আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী এখনও বাংলাদেশ সীমান্তে স্থল মাইন পুঁতে রাখছে। এরফলে সেখান থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবন মারাত্মক হুমকির মধ্যে পড়েছে।

একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে সংস্থাটি জানায়, গত কয়েক সপ্তাহে এসব মাইন পাতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করে।
সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে শনিবার বলা হয়, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে এর কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে মিয়ানমারের কাছে। তবে কার্যত ফল মেলেনি।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে সংস্থাটি জানায়, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মূল পয়েন্টগুলোতে এসব ল্যান্ডমাইন পুঁতেছে। এমনকি উত্তর রাখাইনের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে হামলার আগে সেখানকার রাস্তায়ও ল্যান্ডমাইন পুঁতে রাখা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেছেন, সৈন্যরা যে মাইন স্থাপন করছেন সেটাও তারা দেখেছেন। বিশেষ করে বুথিডং, টং পিও লেট ইয়ার সীমান্ত, এমনকি তারা নো ম্যানস ল্যান্ডেও মাইন পুঁতে রাখতে দেখেছেন অনেকে।

বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবির বরাত দিয়ে বলা হয়, ল্যান্ডমাইনের আঘাতে এ পর্যন্ত ৫ জন নিহত এবং ১২জন আহত হয়েছে। বলা হচ্ছে, মূলত বাংলাদেশের তমরু সীমান্ত দিয়েই ল্যান্ডমাইনে আহত রোহিঙ্গারা বেশি ঢুকছে।

বিজিবিও বলছে, প্রথমদিকে প্রায় রোজই হাঁটুর নিচ থেকে বা পা উড়ে গেছে এমন মানুষ পেয়েছেন তারা। এই আহতদের দেখে বোঝা গেছে যে, স্থল মাইন বিস্ফোরণে তারা আহত হয়েছেন।

রোহিঙ্গাদের নির্মূলের জন্য ল্যান্ডমাইন বসানোর ঘটনাকে ‘হৃদয়হীন কাজ’ বলে অভিহিত করে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ অবিলম্বে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে অ্যান্টি-পার্সোনেল ল্যান্ডমাইন ব্যবহার বন্ধ করে, ১৯৯৭ সালের মাইন নিষিদ্ধ সংক্রান্ত অটোয়া চুক্তিতে যোগ দেবার আহ্বান জানিয়েছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মিয়ানমারের সরকার পাল্টা অভিযোগ করছে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভ্যাশন আর্মি আরসা দেশটির অবকাঠামো এবং নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস ব্যবহার করছে।