সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় যুবক খুন

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের গাবী গ্রাম সংলগ্ন পরিত্যক্ত সুনেত্র গ্যাস ফিল্ড এলাকায় দুই বন্ধুর ঝগড়া থামাতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে হৃদয় হাসান (২৩) নামের এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে।

এ সময় ছুরিকাহাত অন্তর মিয়া (১৮) ও শামীম আহমেদ (১৯) নামের দুইজন তরুণ গুরুতর আহত হয়েছেন। নিহতের বাড়ি উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের গাবী গ্রামে। সে ওই গ্রামের কৃষক আক্কাস মিয়ার ছেলে। পূর্ব বিরোধের জের ধরে শনিবার (৭ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

ধর্মপাশা থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের গাবী হিফজুল কোরআন আশরাফিয়া মাদ্রাসা মাঠে শনিবার সন্ধ্যায় বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল শুরু হয়।

উপজেলার গাবী গ্রামের অন্তর মিয়া (১৮), শামীম আহমেদ (১৯), হৃদয় হাসান (২৩) ও সাজন মিয়া (১৬)সহ আরও পাঁচ থেকে ছয়জন ওইদিন সন্ধা সাতটার দিকে ওয়াজ শুনতে মাদ্রাসার মাঠে আসেন। রাত নয়টার দিকে একই উপজেলার মীর্জাপুর গ্রামের তাইন তালুকদার (১৮), সজীব মিয়া (১৬), রিফাত মিয়া (১৬), ও পাশের নেত্রকোনার বারহাট্রা উপজেলার ইসপিনজাপুর গ্রামের মাসুদ রানা(২১)সহ ছয় -সাতজন সেখানে ওয়াজ শুনতে আসেন।

তাইন তালুকদার ও অন্তর মিয়া দুইজন বন্ধু। বেশ কিছুদিন আগে তাদের দুইজনের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে ঝগড়া হয় এবং বিষয়টি মিটমাটও হয়। গাবী হিফজুল কোরআন আশরাফিয়া মাদ্রাসার মাঠের খানিকটা পূর্বদিকে সুনেত্র গ্যাস ফিল্ডের পরিত্যক্ত এলাকায় ফুসকার দোকানের সামনে ওইদিন রাত ১০টার দিকে তাইন তালুকদারকে দেখতে পেয়ে অন্তর মিয়া তাকে চড় থাপ্পড় মারেন।

এ সময় দুই বন্ধুর ঝগড়া থামাতে চেষ্ঠা করেন হৃদয় হাসান। এ সময় অন্তর মিয়া ও তাইন তালুকদারের লোকজনদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে ধারালো চোরার এলোপাতাড়ি আঘাতে হৃদয় হাসানের বুকের বাম পাশে এবং অন্তর মিয়া, ও শামীম আহমেদের পেঠে গুরুতর আহত হন।

আহত তিনজকে রাত সোয়া ১১টার দিকে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগে আনা হলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসা কর্মকর্তা আওলাদ হোসেন গুরুতর আহত হৃদয় হাসানকে মৃত ঘোষনা করেন। গুরুতর আহত দুইজনকে রাতেই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করেন তাদের স্বজনেরা।

ঘটনার পর পরই এ ঘটনায় জড়িত চারজনকে আটক করেন স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে ধর্মপাশা থানা পুলিশ রাত ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে এই চারজনকে উদ্ধার করে ধর্মপাশা থানায় নিয়ে আসেন।

ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহাম্মদ এনামুল হক বলেন, এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাইন তালুকদারসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। নিহত হৃদয় হাসানের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রবিবার সকালে সুনামগঞ্জ জেলা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।