সুনামগঞ্জের মধ্যনগর সীমান্তে চোরাকারবারীদের সিন্ডিকেট অতীতের চেয়ে বেপরোয়া
সুনামগঞ্জের নবগঠিত মধ্যনগর উপজেলার সীমান্তে এখন চোরাচালান ও মাদকের অভয়ারণ্য পরিণত হয়েছে। মাঝখানে কিছুদিন থেমে থাকলেও আগের চেয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চোরাকারবারি সিন্ডিকেট। রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে প্রতি রাতে চোরা কারবারিরা সীমান্তের কাঁটাতার অতিক্রম করে ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু, মহিষ, চিনি, কম্বল, বিভিন্ন মাদকদ্রব্য, কসমেটিকস, শাড়ি কাপড়, কাঁচা সুপারি, চা পাতাসহ বিভিন্ন পণ্য প্রতিদিন আমদানি করছে।
অন্যদিকে এই সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে সুপারি, ছোলাবুট, শুকনো সুপারি, পটের দুধ, মটরশুটি ইত্যাদি পণ্য ভারতে পাচার হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্রটি বিজিবি ও মধ্যনগর থানাকে ম্যানেজ করে প্রকাশ্যে এসব পাচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ পুলিশ বাহিনী চোরাকারবাারিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার ভারতের সীমান্তবর্তী উত্তর বংশীকুন্ডা ইউনিয়নের আন্তরপুর গ্রাম, মহেষখলা, কাইটাকোনা, কড়ইবাড়ী, গুলগাঁও, রূপনগর ও কান্দাপাড়া, বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের দাতিয়াপাড়া গ্রামের কয়েকটি সংঘবদ্ধ পাচারকারী পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রকাশ্যে এসব পাচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলার মহেষখলা, কাইটাকোনা, কড়ইবাড়ী (কড়ই চড়া), আমতলা, ঘিলাগড়া, বাঙ্গালভিটা সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার এসব ভারতীয় পণ্য ঢুকছে বাংলাদেশে আর বাংলাদেশি পণ্য পাচার হচ্ছে ভারতে। এসব চোরাকারবার রাতে ও দিনেও চলছে প্রতিনিয়ত। এককথায় চোরা কারবারিদের স্বর্গরাজ্য এখন মধ্যনগর সীমান্ত। আর আর্থিক সুবিধা নিয়ে নিরব রয়েছে পুলিশ বাহিনী।এমনকি মাঝে মধ্যে চোরাকারবারিদের পক্ষে নানা যুক্তি দিয়ে রাখছেন ভূমিকা।
প্রতি রাতেই কোটি কোটি টাকার গরু ও মহিষ চোরাই পথে ভারত থেকে আসছে। এসব গরু ও মহিষ রাতে এমনকি দিনের বেলায় প্রকাশ্যে পাচার করা হয় দেশের বিভিন্ন জায়গায়। বিশেষ করে সন্ধ্যার পরে উপজেলার মহিষখলা হতে নৌকা যুগে চোরাচালানের হাজার হাজার গরু, মহিষ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাচার করা হয়। এবং সুপারিসহ বিভিন্ন দ্রব্য ভারতে পাচারের জন্য শত শত সেলু ইঞ্জিনচালিত ট্রলি ওই রাস্তায় চলাচল করে।
বংশকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাসেল আহমেদ বলেন, মধ্যনগর থানার ওসি মো. সজীব রহমানের নিয়োজিত ল্যাইনম্যান বংশিকুন্ডা উওর ইউনিয়নের সাউথ পাড়া গ্রামের ইউপি সদস্য সাত্তারের ছেলে সাদ্দাম হোসেন ওসি সজীব রহমানের নামে চোরা কারবারিদের থেকে ভারতীয় গরু প্রতি ৪শ’ টাকা ও মহিষ প্রতি ৭০০শ’ত টাকা করে বখরা আদায় করে থাকেন। চোরাইপথে আনা চিনির প্রতি বস্তা প্রতি ১০০শ’ টাকা আদায় করেন।
সুপারির বস্তা প্রতি ১শত করেন টাকা করে বখরা আদায় করে থাকেন। সাদ্দাম হোসেন প্রতি সপ্তাহে মঙ্গলবার ওসি সজীব রহমানের নামে বখরা আদায়ের টাকা উত্তোলন করে প্রতি বুধবার থানার এএসআই মাহিনুর ও কনস্টেবল তাওহীদুল ইসলাম মাধ্যমে ওসি সজীব রহমানকে দিয়ে আসেন। ওসি সজীব রহমান গত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সালে মধ্যনগর থানায় যোগদানের পর আগের চেয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চোরাকারবারি সিন্ডিকেট। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এ ব্যাপারে মধ্যনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো, সজীব রহমানের মোবাইল ফোনে কল করলে বিষয়টি শুনে ফোন কেটে দেন। পরে একাধিক বার ফোন করলে রিসিভ করেন নি।
সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার আ. ফ. ম. আনোয়ার হোসেন খান বলেন, আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি, আমি তদন্ত করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রসাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, এই বিষয়ে আইন শৃঙ্খলা কমিটিতে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন