সুনামগঞ্জে পাঁচারকৃত ২কোটি টাকার মালামালসহ ৫ জন গ্রেফতার
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর ও মধ্যনগর উপজেলার সীমান্তকে চোরাচালানের নিরাপদ রোড হিসেবে দীর্ঘদিন যাবত ব্যবহার করছে চোরাকারবারী ও সোর্স পরিচয়ধারীরা। তারা ভারত থেকে প্রতিদিন কোটিকোটি টাকার পন্য-সামগ্রী ও মাদকদ্রব্য পাচাঁর করছে।
এরফলে একদিকে রাতারাতি কোটিপতি হচ্ছে সোর্স ও চোরাকারবারীরা, অন্যদিকে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। তাই কোটিপতি সীমান্ত সোর্স ও চোরাকারবারীদের গ্রেফতারের জন্য সেনাবাহিনীর অভিযান জরুরী প্রয়োজন।
জানা গেছে- গতকাল বৃহস্পতিবার (৫ই ডিসেম্ভর) সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টায় পর্যন্ত সুনামগঞ্জ পৌরশহরের পুরাতন বাসস্টেশন এলাকায় অবস্থিত এসএ পরিবহণের কার্যালয়ে সেনাবাহিনী অভিযান চালায়।
ওই সময় ভারত থেকে পাচাঁরকৃত ৭হাজার ৯২০পিস মেহেদী, ৭২০পিস জনসন শ্যাম্পু, ২হাজার ৪শ পিস কেবিজল সাবান, ৮হাজার ১শ ৮৪পিস কিটকেট চকোলেট, ১হাজার ৬শ পিস ডক্টর বিশ্বাস হেলথ প্রোডাক্ট, ৮শ ৬৪পিস জনসন বেবি লোশন ও ৬রোল বড় ফ্লোর কার্পেট জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মালামালের আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা।
এসব অবৈধ মালামাল এসএ পরিবহণের গাড়িতে তোলার সময় অভিযান চালিয়ে জব্দ করার পর, পাচাঁরের সাথে জড়িত থাকার অপরাধে এসএ পরিবহণের সুনামগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক আতাউর রহমান (৪০), পার্সেল সহকারী আব্দুর রহমান (২৬), ক্যাশ অফিসার ফয়সাল কবির (৩৬), গাড়ি চালক দেলোয়ার মিয়া (৫৫) ও হেলপার জুবায়ের মিয়া (২৫) কে গ্রেফতার করা হয়।
জেলার তাহিরপুর উপজেলার চাঁনপুর, লাউড়গড়, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মাছিমপুর, চিনাকান্দি, ডলুরা ও দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ও বাগানবাড়িসহ একাধিক সীমান্ত এলাকা দিয়ে সোর্স পরিচয়ধারী একাধিক মামলার আসামীরা ও চোরাকারবারীরা মিলে গত ৩দিনে ভারত থেকে পাচাঁরকৃত ওই সব অবৈধ মালামাল মজুত করে।
পরে এসএ পরিবহণের সুনামগঞ্জ শাখা কার্যালয়ের দায়িত্বে থাকা গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির সাথে গোপনে চুক্তি করে ঢাকা পাঠানোর উদ্যোগ নেয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এখবর জানতে পেরে সেনাবাহিনী অভিযান চালায়।
অন্যদিকে গত ২দিনে তাহিরপুর উপজেলার চাঁনপুর সীমান্তের বারেকটিলার আনন্দপুর, ১২০৩পিলার, কড়ইগড়া, রাজাই এলাকাসহ পাশের লাউড়গড় সীমান্তের জাদুকাটা নদী দিয়ে কয়েক কোটি টাকার কয়লা, পাথর, ফুছকা, চিনি, নাসির উদ্দিন বিড়ি, ঘোড়া, কমলা, কম্বল ও কসমেটিকস পাচাঁর করাসহ টেকেরঘাট সীমান্তের নীলাদ্রী লেকপাড়, বুরুঙ্গা ছড়া, বালিয়াঘাট সীমান্তের লাকমা, লালঘাট, চারাগাঁও সীমান্তের বাঁশতলা, এলসি পয়েন্ট।
কলাগাঁও, জঙ্গলবাড়ি এলাকা দিয়ে কয়লা, সুপারী, চিনি ও বীরেন্দ্রনগর সীমান্তের কঢ়ুয়াছড়া, মধ্যনগর উপজেলার বাঙ্গালভিটা ও মাটিরাবন এলাকা দিয়ে প্রতিদিন গরু, মহিষ, চিনি, শাড়ি, কসমেটিস পাচারের খবর পাওয়া গেছে। কিন্তু পাচাঁরকৃত অবৈধ মালামালের বড় কোন চালান আটকের খবর পাওয়া যায়নি।
তাই চোরাচালান নিয়ন্ত্রণকারী সীমান্ত কিংখ্যাত সোর্স পরিচয়ধারী ও চোরাকারবারীদের গ্রেফতার করাসহ তাদের কোটিকোটি টাকার অবৈধ সম্পদ ও পাচাঁরকৃত মালামাল জব্দ করার জন্য সীমান্ত এলাকায় সেনা বাহিনীর বিশেষ অভিযান জরুরী প্রয়োজন।
এব্যাপারে অভিযান পরিচালনাকারী সেনাবাহিনীর লেফটেন্যোন্ট ইফতেয়ার মতিন ও পুলিশের উপ-পরিদশক আব্দুল্লাহ আল রিফাত সাংবাদিকদের জানান- সীমান্ত দিয়ে অবৈধ ভাবে আসা ভারতীয় পণ্য প্যাকেটজাত করে এসএ পরিবহণের গাড়িতে তুলার আগে অভিযান চালিয়ে ২ কোটি টাকার পণ্য সামগ্রী জব্দ করাসহ এসব অবৈধ মালামাল পাচাঁরে সহযোগীতা করার জন্য ৫জনকে গ্রেফতার করে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন