সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেছেন।
বৃহস্পতিবার বিশ্বের একক বৃহত্তম প্রাকৃতিক ম্যানগ্রোভ বনের সর্বশেষ ছয়টি বাহিনীও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে অস্ত্রসমর্পণ করার প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী এ ঘোষণা দিলেন।
বাগেরহাটের শেখ হেলাল উদ্দিন স্টেডিয়ামে ছয়টি বাহিনীর আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সকালে ঢাকায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা সময় সুন্দরবনকে ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় যেতে হয়েছে।
কিন্তু র্যাবের প্রচেষ্টায় সুন্দরবনের অনেক দস্যু আত্মসমর্পণ করেছে। তাই আমি এ মুহূর্তে সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করলাম।
প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণার মাধ্যমে সুন্দরবনে আশির দশক থেকে শুরু হওয়া চাঁদাবাজি ও অপহরণের কলঙ্কিত অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল।
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ২০১২ সালে উপকূলীয় এলাকায় বনদস্যু, জলদস্যুদের দমনের জন্য র্যাব, পুলিশ, কোস্টগার্ড, বিজিবি ও বন বিভাগের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়।
তারপর থেকে বেগবান হয় সুন্দরবনে র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে র্যাব এ পর্যন্ত ২২৩টি সফল অভিযানে ৫০৭ জলদস্যু ও বনদস্যু গ্রেফতার, ১ হাজার ৫৫৬টি অস্ত্র এবং ৩৩ হাজার ৩২৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে।
১৩৫ জন জলদস্যু ও বনদস্যু র্যাবের সঙ্গে গুলি বিনিময়ে নিহত হয়েছে। র্যাবের ক্রমাগত সাঁড়াশি অভিযানে জলদস্যুরা ফেরারি জীবনের অবসান ঘটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার পথ খুঁজতে থাকে। পরে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতিতে ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় র্যাবের পক্ষ থেকে সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চলের জলদস্যুদের বিনাশর্তে আত্মসমর্পণ করানো ছিল যুগান্তকারী ঘটনা।
র্যাবের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চলে ২০১৬ সালের ৩১ মে মাস্টার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে এ অগ্রযাত্রার শুভ সূচনা হয়। এ পর্যন্ত ২৬টি বাহিনীর ২৭৪ জন সুন্দরবন অঞ্চলের জলদস্যু ও বনদস্যু অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করেছে। এদের আর্থিক সহায়তা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, আত্মসমর্পণকারী আরও ৯টি বাহিনীর সাবেক ৮৪ জলদস্যুকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে এক লাখ টাকা করে আর্থিক অনুদান দেয়া হবে। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান যুগান্তরকে বলেন, সুন্দরবনের মূর্তিমান আতঙ্ক জলদস্যু ও বনদস্যু মুক্ত হওয়ার মাধ্যমে আজ এক অভিশপ্ত যুগের অবসান হবে।
আবার যেন জলদস্যু ও বনদস্যুর অধ্যায় ফিরে না আসে সে জন্য সুন্দরবন ও উপকূলীয় অঞ্চলে র্যাব ফোর্সেস টহল নজরদারি ও অভিযান অব্যাহত রাখবে। এ অঞ্চলে ৪টি র্যাব ক্যাম্প স্থাপনের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন