সুন্দরবন থেকে আসা দুটি হরিণ ফিরে গেল বনে

সুন্দরবনের নদী সাঁতরে লোকালয়ে আসা দুটি চিত্রল হরিণ বনে ফিরিয়ে দিয়েছে গ্রামবাসী। এর মধ্যে একটি হরিণ স্থানীয়রা ধরে বনে অবমুক্ত করে। অন্যটি তাড়া খেয়ে নদী পার হয়ে আবার বনে ফিরে যায়। বুধবার (১২ জুন) রাত ১১টার দিকে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সুন্দরবনসংলগ্ন দক্ষিণ চালিতাবুনিয়া গ্রামে ঢুকে পড়েছিল হরিণ দুটি।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের পর সুন্দরবনে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। বনের ডোবা-নালায় রিমালের জলোচ্ছাসের পানি আটকে তাতে প্রচুর পরিমাণে মশা জন্ম নিয়েছে। মাশার কামড়ে বনরক্ষীরাই টিকতে পারছে না। ধারণা করা হচ্ছে মশার কামড়ে অতিষ্ট হয়ে হরিণ দুটিও লোকালয়ে চলে গেছে। বনবিভাগ ও বনসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদেও কাছ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ওয়াইল টিমের শরণখোলার দায়িত্বপ্রাপ্ত মাঠ কর্মী আলম হাওলাদার জানান, রাতে হরিণ দুটি বগী-শরণখোলা ভারাণী নদী সাঁতরে দক্ষিণ চালিতাবুনিয়া গ্রামের শাহ আলমের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। খবর পেয়ে পরে ওয়াইল্ড টিম ও ভিলেজ টাইগার টিমের (ভিটিআরটি) সদস্যসহ গ্রামবাসী মিলে একটি হরিণ ধরা হয়। রাতেই সেটি পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের বগী স্টেশনের বনরক্ষীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

অন্যটিকে ধরার চেষ্টা করলে সেটি নিজেই নদী সাঁতরে ওপারে (বনে) চলে যায়। স্ত্রী হরিণ দুটির বয়স এক বছর হবে বলে জানান ওয়াইল্ড টিমের ওই মাঠকর্মী।

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শেখ মাহাবুব হাসান বলেন, রাতের অন্ধকারে নদী সাঁতরে দুটি হরিণ বনের পাশের গ্রামে চলে যায়। হরিণ দুটিকে স্থানীয়দের সহযোগীতায় বনে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

এসিএফ বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের জলোচ্ছাসে বনের ডোবা-নালায় পানি জমে আছে। ঝড়ের পর বৃষ্টি না হওয়া এবং জোয়ারের পানি প্রবেশ না করায় সেই বদ্ধ পানিতে প্রচুর পরিমাণে মশার জন্ম হয়েছে।

মশার উৎপাতে আমরাই টিকতে পারছি না। ধারণা করা হচ্ছে হরিণ দুটিও মশার কামড়ে টিকতে না পেরে লোকালয়ে চলে গিয়েছিল।

পরবর্তীতে বনের হরিণ বা অন্য কোনো বন্যপ্রাণি লোকালয়ে গেলে তাদের না মেরে যাতে নিরাপদে বনে ফিরিয়ে দেওয়া হয়, সেব্যাপারে এলাকাবাসীকে সতর্ক করা হয়েছে। তাছাড়া লোকালয় সংলগ্ন বন অফিসগুলোর বনরক্ষীদেরও নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।