সুন্দরবন বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছি : প্রধানমন্ত্রী
সুন্দরবনের কারণে বাংলাদেশ টিকে আছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সুন্দরবন যাতে বৃদ্ধি পায়, সে জন্য কৃত্রিম ম্যানগ্রোভ করার উদ্যোগ দিয়েছে সরকার। তিনি বলেন, ‘সমগ্র উপকূলীয় অঞ্চলে যেন বিস্তৃতি ঘটে সে জন্য নির্দেশনা দেয়া আছে’। পাশাপাশি সুন্দরবনে জীববৈচিত্র্য রক্ষায়ও সরকারের পদক্ষেপ রয়েছে।
রবিবার আন্তর্জাতিক পরিবেশ দিবস ও বৃক্ষরোপন অভিযান ও বৃক্ষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
সুন্দরবনের অদূরে বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ার বিরোধিতার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবন নিয়ে এই কথা বললেন। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতাকারীরা দাবি করছেন, স্থাপনাটি সুন্দরবনের ক্ষতি করবে। তবে প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার বলেছেন, এই সংশয় অমূলক।
পরিবেশে দিবসের অনুষ্ঠানে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে কিছু না বললেও প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সুন্দরবনের যেন কোনো ক্ষতি না হয়, সে দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিয়েই কিন্তু আমরা প্রকল্প গ্রহণ করি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সুন্দরবন আমাদের ভাল পর্যটন আকর্ষণের জায়গা। ১৯৯৭ সালে আমি যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলাম তখন সুন্দরবনের একটি এলাকাকে ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ এলাকা হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলাম এবং সেটাকে সংরক্ষণ করে যাচ্ছি।’
বন অপরাধ দমনের জন্য স্মার্ট পেট্রলিং এর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বনের ওপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকার জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে বৃক্ষ নিধন কমবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ছোট্ট ভৌগলিক সীমানার মধ্যে বৃহৎ জনগোষ্ঠী। এদের খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা, উন্নত জীবনমানের ব্যবস্থা করতে হবে। তারা যেন নাগরিক সুবিধা পায়, সে জন্য আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। তিনি বলেন, ‘আধুনিকায়নের যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে পরিবেশ যেন নষ্ট না করি, প্রতিবেশ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে দিকেও বিশেষভাবে নজরে রেখে উন্নয়নের পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে। আর সে দিকে সরকার বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খাদ্য উৎপাদন করতে গিয়ে অতিরিক্ত মাত্রায় রাসায়নিক সার বা কীটনাশকের ব্যবহার ক্ষতিকর প্রমাণ হয়েছে। আবার নগরায়ন করতে গিয়ে অনেক সময় বনকে গ্রাস করে খাচ্ছে। তবে নগরায়ন প্রয়োজন আছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রামবাংলায় মানুষ যারা বাস করে তারাও নাগরিক সুবিধা পাক। সেটাও সরকার যেমন চায়, তেমনি প্রাকৃতিক ভারসাম্য যেন বজায় থাকে, সে দিকেওর সরকার বিশেষভাবে দৃষ্টি দিচ্ছে।’
যেখানে সেখানে শিল্প গড়া যাবে না
শিল্পায়নের জন্য সরকার যে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে, সেখানেই শিল্প গড়তে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যেখানে সেখানে জমি কিনেই একটা শিল্প প্রতিষ্ঠা করবে আর আমাদের পরিবেশ নষ্ট হবে, সেটা যেন না হয়, সে দিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদের পদক্ষেপ।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের শিল্পায়ন হবে, কর্মসংস্থান হবে, উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, অর্থনৈতিক সাবলম্বী হব, অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হবে। আবার পরিবেশটাও যেন ঠিক থাকে।’
পোড়ানো ইটে পরিবেশ দূষণ হয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ধরনের ইট ব্যবহার নিরুৎসাহিত করে ব্লক ইটের ব্যবহার বাড়ানোর চেষ্টা করছে সরকার।
ঢাকার চার নদী দূষণমুক্ত করা হবে
ঢাকার চার নদী কীভাবে দূষণমুক্ত করা যায়, সরকার সে পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যতগুলো এলাকায় বাসস্থান থেকে শিল্পায়ন গড়ে উঠছে সেখানে বর্জ্য নিষ্কাষণ ব্যবস্থা যেন আধুনিক পদ্ধতিতে হয় তার জন্য আমরা যথাযথ নির্দেশনা দিচ্ছি এবং এটা যেন আরও ভালভাবে কার্যকর হয়, সে পদক্ষেপ আমরা নেব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিল্প মালিকরা ইটিপি ব্যবহার করতে চায় না, যদি আমরা পরিদর্শনে পাঠাই, তখন কেবল ব্যবহার হয়। এ জন্য আমরা সেন্ট্রাললি তৈরি করে সবাইকে বাধ্যতামূলক করে দিচ্ছি, যে এগুলো ব্যবহার করতেই হবে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন