সুপার ওভারেও টাই, প্রথমবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড

ক্রিকেটের ইতিহাসে এমন রোমাঞ্চকর ম্যাচ হয়েছে কি না, তা বোদ্ধারাই বলতে পারবেন। তবে লর্ডস যে নিঃসন্দেহে একটা ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সেই ঐতিহাসিক ম্যাচে শেষ হাসি হাসল ইংল্যান্ড। সেই সুবাদে প্রথমবারের মতো আইসিসি বিশ্বকাপ ঘরে তুলতে সক্ষম হলো ক্রিকেটের উদ্ভাবক এই জাতি।

লর্ডসে রবিবার টস জিতে শুরুতে ব্যাট করে নিউজিল্যান্ড নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেটে ২৪১ রান করে। জবাবে ৫০ ওভারে সবক’টি উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ডও করে সমান রান।

তাই নিয়ম অনুযায়ী ম্যাচটি করে গড়ায় সুপার ওভারে। সুপার ওভারেও দুই দল সমান ১৫ রান করে সংগ্রহ করে। তাই সুপার ওভারের খেলাও টাই হয়। তবে বাউন্ডারি বেশি থাকায় ইংল্যান্ড জিতে নেয় শিরোপা। মূল ইনিংস ও সুপার ওভার মিলে ইংল্যান্ড ২৬ ও নিউজিল্যান্ড ১৭টি বাউন্ডারি হাঁকায়। সেই ২৬-১৭ ব্যবধানেই জয় নিশ্চিত হলো ইংলিশদের।

তাই চতুর্থবারের মতো ফাইনালে ওঠে শিরোপা জিততে সক্ষম হলো ইংল্যান্ড। এর আগে ১৯৭৯, ১৯৮৭ ও ১৯৯২ সালে ফাইনালে ওঠলেও এবারই প্রথম শিরোপার মুখ দেখল তারা। আর গত আসরে রানার্সআপ নিউজিল্যান্ডকে এবারও ফিরতে হলো একই ফল নিয়ে।

লর্ডসে রবিবার টস জিতে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ড নির্ধারিত ওভার শেষে ৮ উইকেটে ২৪১ রান করেছে। হেনরি নিকোলস সর্বোচ্চ ৫৫, টম লাথাম ৪৭ ও কেন উইলিয়ামসন ৩০ রান করে। ইংলিশ বোলারদের মধ্যে ক্রিস ওকস ও লিয়াম প্লাঙ্কেট তিনটি করে উইকেট নেন।

জয়ের জন্য ২৪২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৮৬ রানের মধ্যে চার উইকেট হারিয়ে চরম বিপদে পড়ে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। সেখান থেকে জোস বাটলার ও বেন স্টোকসের ১১০ রানের জুটিতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। এই দুজন পঞ্চম উইকেটে ১১০ রানের জুটি গড়ে দলকে লড়াইয়ে রাখতে সক্ষম হন। তবে এরপর ৫৯ করে বাটলার ফিরে গেলেও শেষ পর্বযন্ত থাকেন স্টোকস। ৮৪ রানের দারুণ ইনিংস খেলৈ হয়েছেন ম্যাচসেরাও। ৩৬ রান করেছেন জনি বেয়ারস্ট। তিনটি করে উইকেট নেন জিমি নিশাম ও লুকি ফার্গুসন।

বেন স্টোকস টিকে থাকায় শেষ বল পর্যন্ত খেলায় টিকে থাকে ইংল্যান্ড। তবে ইনিংস শেষে ‍দুই দলের স্কোর সমান হয়ে যাওয়ায় ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। সুপার ওভারে শুরুতে ব্যাট হাতে নেমে এক ওভারে ১৫ রান করেন দুই ইংলিশ ব্যাটসম্যান জোস বাটলার ও বেন স্টোকস। ৬ বল থেকে তারা করেন যথাক্রমে ৩, ১, ৪, ১, ২ ও ৪।

জয়ের জন্য ১৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামে দুই কিউই ব্যাটসম্যান মার্টিন গাপটিল ও জিমি নিশাম। আর বল করেন ইংল্যান্ডের জোফ্রা আর্চার। প্রথম তিন বল থেকে ১১ রান করা নিউজিল্যান্ড তিন বলে আর সেভাবে আগাতে পারেনি। যে কারণে শেষ পর্যন্ত সমান ১৫ রানে থেমেছে কিউইরাও। আর তাই আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী ফাইনালে সর্বোচ্চ বাউন্ডারি হাঁকানো দল হিসেবে ইংল্যান্ড জিতে নেয় শিরোপা।

স্কোর:
নিউজিল্যান্ড ২৪১/৮ (৫০)
মার্টিন গাপটিল ১৯ (১৮)
হেনরি নিকোলস ৫৫ (৭৭)
কেন উইলিয়ামসন ৩০ (৫৩)
রস টেইলর ১৫ (৩১)
টম লাথাম ৪৭ (৫৬)
জেমস নিশাম ১৯ (২৫)
কলিন ডি গ্রান্ডহোম ১৬ (২৮)
মিচেল স্যাটনার ৫* (৯)
ম্যাট হেনরি ৪ (২)
ট্রেন্ট বোল্ট ১* (২)

বোলার
ক্রিস ওকস ৯-০-৩৭-৩
জোফরে আর্চার ১০-০-৪২-১
লিয়াম প্লাঙ্কেট ১০-০-৪২-৩
মার্ক উড ১০-১-৪৯-১
আদিল রশিদ ৮-০-৩৯-০
জেন স্টোকস ৩-০-২০-০

ইংল্যান্ড ২৪১/১০ (৫০)
জেসন রয় ১৭ (২০)
জনি বেয়ারস্টো ৩৬ (৫৫)
জোর রুট ৭ (৩০)
ইয়ন মরগান ৯ (২২)
বেন স্টোকস ৮৪* (৯৮)
জস বাটলার ৫৯ (৬০)
ক্রিস ওকস ২ (৪)
লিয়াম প্লাঙ্কেট ১০ (১০)
জোফরে আর্চার ০ (১)
আদিল রশিদ ০ (০)
মার্ক উড ০ (০)

বোলার
ট্রেন্ট বোল্ট ১০-০-৬৭-০
ম্যাট হেনরি ১০-২-৪০-১
কলিন ডি গ্রান্ডহোম ১০-২-২৫-১
লোকি ফার্গুসন ১০-০-৫০-৩
জেমস নিশাম ৭-০-৪৩-৩
মিচেল স্যাটনার ৩-০-১১-০

ম্যাচ টাই।