সুর্যের আলো সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির পরিচালক কয়েক কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা
বগুড়ার শিবগঞ্জে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে দেশবন্ধু সোলার এন্ড ইলেকট্রনিক্স এবং সূর্যের আলো সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম।
সে তার শশুরবাড়ী শিবগঞ্জ ইউনিয়নের হুদাবালা দক্ষিণপাড়ায় অবস্থান করে দেশবন্ধু ও সূর্যের আলো সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড পরিচালনা করে আসছে।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিনে গেলে গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, জাহাঙ্গীর শিবগঞ্জের নারী মাঠকর্মীদের দিয়ে ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে চুক্তিনামা করে প্রতি মাসে ডিপোজিট এর মাধ্যমে লাখে ২হাজার টাকা লাভে লোভনীয় প্রলোভন দিয়ে আমাদের নিকট থেকে প্রায় ৪০ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে। সমবায় সমিতির কোন সাইনবোর্ড না লাগিয়ে দেশবন্ধুর সাইন বোর্ড লাগিয়ে এ প্রতারণা করেছে।
এই প্রতিষ্ঠানটির শিবগঞ্জ সদর ইউনিয়নের গুজিয়ায় ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। দেশবন্ধু সোলার এন্ড ইলেকট্রনিক্স তার ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান হলেও কৌশলে সমবায় থেকে রেজিষ্ট্রেশন নেওয়া সুর্যের আলো সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডকে সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করে এ প্রতারণা করেছে। যাহার রেজি নং- বগুড়া/৪৯/২০১৭। প্রতিষ্ঠানটির সারা উপজেলায় ৬/৭ শাখা রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির নারী মাঠকর্মী ফেন্সি ও রাজিয়া বলেন, গত এক সপ্তাহ যাবৎ জাহাঙ্গীর লাপাত্তা হয়ে যায়। সে আমাদের সাথে সকল ধরনণের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এদিকে গ্রাহকরা তাদের ডিপোজিটের লাভের টাকা না পেয়ে আমাদের চাপ দিতে থাকলে আমরা নিরুপায় হয়ে যাই। সাধারণ গ্রাহকরা প্রতিষ্ঠানটির সকল শাখায় তালা ঝুলিয়ে দেয়। সে শিবগঞ্জের গুজিয়াতে সিটি ব্যাংক ও মিডল্যান্ড ব্যাংক এর এজেন্ট শাখা পরিচালনা করে।
অপর নারী কর্মী রাফিয়া বেগম বলেন, আমি প্রায় ৩৫ লক্ষাধিক টাকা জাহাঙ্গীর হোসেনকে মাঠ পর্যায় থেকে এনে দিয়েছি। সে আমাদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। গ্রাহকরা আমাদের নিকট টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে। এমডি একজন প্রতারক। সে আমাদের সাথে ও সাধারণ গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা করেছে।
ঐ প্রতিষ্ঠানে ৭ লক্ষ টাকা ডিপোজিট রাখা ভূক্তভোগী রেকসোনা বেগম, ৫লক্ষ ৩০হাজার টাকা ডিপোজিট রাখা জাহেদুল ইসলাম, ৩লক্ষ টাকা ডিপোজিট রাখা আবু মুসা, ৪লক্ষ টাকা ডিপোজিট রাখা আজগর আলী ও ৪০হাজার টাকা ডিপোজিট রাখা ভূক্তভোগী শিউলী বেগম বলেন, আমাদের আমানতের লাভ না দিয়ে প্রতিষ্ঠানের পরিচালক জাহাঙ্গীর লাপাত্তা হয়েছে।
আমাদের এখন আসল টাকা হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। গুজিয়া বন্দরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবু জাফর মন্ডল বলেন, প্রায় ৩বছর আগে দেশবন্ধু নামের একটি প্রতিষ্ঠান খোলে। পরে সমবায় থেকে রেজিষ্ট্রেশন নিয়ে অবৈধভাবে নিরীহ ও অসহায় মানুষদের প্রায় ৪ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে। তার স্ত্রী পলি শিবগঞ্জের হুদাবালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। সেও কৌশলে পালিয়ে গিয়েছে।
শিবগঞ্জ উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা বলেন, সমবায় সমিতির আইনে ফিক্সড ডিপোজিট রাখার কোন নিয়ম নেই। সে সমিতির সদস্যদের বাহিরে কোন কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেনা। সমিতি রেজিষ্ট্রেশনের সময় যে সদস্য দেখিয়েছে তারা অভিযোগ করলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু যারা সদস্য নয় তাদের দায় আমাদের না।
সুর্যের আলো সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিঃ এর পরিচালক জাহাঙ্গীর আলমের সাথে সরাসরি কথা বলার জন্য তার শশুর বাড়ীতে গেলে বাড়িতে তালা ঝুলানো দেখা যায়।
প্রতিবেশিরা জানান, কিছু দিন যাবৎ তাদেকে বাড়িতে দেখা যাচ্ছেনা। তারা গাঁ ঢাকা দিয়েছে। পরবতীতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন