সুলতান মনসুরের শপথ : আস্থার সংকটে ঐক্যফ্রন্ট?
ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করে জিতলেও, সেই প্রতীকের দল বিএনপি এবং নিজের দলের সিদ্ধান্ত, অনুরোধ, হুমকি উপেক্ষা করে গণফোরাম নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বৃহস্পতিবার এমপি হিসেবে শপথ নিয়েছেন।
সপ্তাহখানেক আগে গণফোরামের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ এবং আরেকজন নেতা মোকাব্বির খান স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরিকে জানিয়েছিলেন যে আজ অর্থাৎ ৭ই মার্চ তারা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে চান।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার কিছু পরে মি. আহমেদ সংসদ ভবনে স্পিকারের কাছে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন। যদিও মোকাব্বির খান শপথ নেননি।
তাঁর এই সিদ্ধান্ত গণফোরামের সাথে বিএনপির সম্পর্ক কতটা টানাপোড়েনের সৃষ্টি করবে?
বিএনপির একজন নেত্রী রুমিন ফারহানা বলছিলেন, যিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটা তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। এর সাথে গণফোরাম বা ঐক্যফ্রন্টের সাথে বিএনপির সম্পর্কের উপর কোন প্রভাব পড়ার অবকাশ নেই।
“ভরসা না করার মতো অবস্থা তো তৈরি হয়নি। গণফোরামতো এই দুজনের শপথ নেয়ার সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানায়নি।”
মিজ: ফারহানা বলেন, “গণফোরামের প্রধান নেতা, সাধারণ সম্পাদক প্রত্যেকে একই ভাষায় শক্তভাবে বলছেন।…সুতরাং এখানে গণফোরাম বা ঐক্যফ্রন্টের ভাঙ্গন বা ফাটল বা ভুল বুঝাবুঝির কোন অবকাশ নেই।”
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণফোরাম, বিএনপিসহ ২০ দলীয় ঐক্যজোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নেয়।
সেই নির্বাচনে গণফোরাম এবং বিএনপি মোট সাতটি আসন পায়।
ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করে জিতলেও, সেই প্রতীকের ধারক বিএনপি এবং নিজের দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে গণফোরাম নেতা সুলতান মোহম্মদ মনসুর আহমেদের আজ এমপি হিসাবে শপথ নেয়াতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা, মেজর (অব) হাফিজুদ্দিন আহমেদ কট্টর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন।
“এতে করে ঐক্যফ্রন্টের সাথে বিএনপির টানাপোড়েনের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে,” বলেন তিনি।
মি: আহমেদ বলেছেন, “নিশ্চয়ই প্রভাব পড়বে। একটা দলের প্রতীক ব্যবহার করে নির্বাচনের পর সেই দলকে অস্বীকার করা একেবারেই অনৈতিক।”
“এর ফলে বিএনপির সাথে ঐক্যফ্রন্টের টানাপোড়েন দেখা দিচ্ছে। আমরা আশা করি যে গণফোরাম সুলতান মনসুরের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে।”
এদিকে শপথ নেয়ার আগে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ বিবিসিকে বলেছিলেন, তার সংসদীয় এলাকার জনগণ চান তিনি শপথ নেন।
“সংসদে যাওয়ার জন্যই তো এমপি ইলেকশনে” প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি।
তার এই সিদ্ধান্তকে গণফোরাম কঠোরভাবে নাকচ করে দিয়েছিল এবং দলীয় নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছিল।
বিএনপির আরেকজন নেত্রী শামা ওবায়েদ মনে করেন, তারা একটা বৃহত্তর স্বার্থে এক হয়েছিলেন, সেখানে কেউ যদি তাদের সাথে না থাকেন তাহলেও তারা তাদের মূল আদর্শ থেকে সরে যাবেন না।
“রাজনীতিতে এমন হতে পারে। অনেকে আসবে, অনেকে যাবে। সেটার জন্য আমাদের মূল লক্ষ্য, মূল আদর্শ থেকে বিচ্যুত হবো না।”
“সেটাইতো রাজনীতি। দেশের জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য যে সংগ্রাম সেখানে যদি আমাদের সাথে কেউ থাকে, তাহলে ভালো আর না থাকলে আমরা সেই সংগ্রাম চালিয়ে যাবো,” বলেছেন মিজ: ওবায়েদ।
এদিকে নানা জল্পনা -কল্পনার পর গতকাল গণফোরামের আরেক নেতা যিনি উদীয়মান সূর্য নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন সেই মোকাব্বির খান নিশ্চিত করেন তিনি শপথ নেবেন না।
এদিকে মি. আহমেদ শপথ নেয়ার বিষয়ে অটল থাকেন। তবে তার বিষয়ে দলীয় ভাবে কি সিদ্ধান্ত আসে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন