সেই ছোট্ট মোশের সঙ্গে দেখা হবে মোদির

তখন তার বয়স ছিল মাত্র দুই। ২৬/১১-র ভয়াল সন্ত্রাস কেড়ে নিয়েছিল ইসরায়েলি শিশুটির বাবা-মাকে। সেই ছোট্ট ছেলে, মোশে হোলৎসবার্গ পা দিয়েছে ১০ বছরে। আগামী সপ্তাহে ইসরায়েল সফরে আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সন্ত্রাসদীর্ণ পরিবারটির পাশে থাকার বার্তা দিতে মোশের সঙ্গেও দেখা করবেন তিনি। মোদির এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন মোশের দাদু দিদা ইয়েহুদিত ও শিমন রোসেনবার্গ। লস্কর-ই-তৈয়বার হামলায় ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর তছনছ হয়ে গিয়েছিল তাঁদের জীবন। তাঁদের সেই যন্ত্রণা ভারতের মতো দেশ ভাগ করে নিতে চাইছে, তাঁদের মনে রেখে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী মোশের সঙ্গে দেখা করতে আসছেন এ খবর জেনে অভিভূত শিমনরা।
মোশের দিদা শিমন বলছেন, ভারতীয় দূত যে মুহূর্তে ফোন করে জানালেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আসছেন, তখনই মনে হয়েছিল ভারত আমাদের কষ্ট ভাগ করে নিতে চায়। আমাদের কেউ ভুলে যায়নি। দাদু ইয়েহুদিতের কথায়, খুব ভালো লাগছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগে আমি কতটা খুশি বলে বোঝাতে পারব না। ওঁর সঙ্গে দেখা করার অপেক্ষায় আছি। শুধু মোশের দাদু-দিদা নন, ৫ জুলাই নরেন্দ্র মোদি দেখা করবেন ছোট্ট ছেলের ভারতীয় ন্যানি সান্দ্রা স্যামুয়েলসের সঙ্গেও। তবে কোথায়, তা এখনও জানায়নি ভারতীয় দূতাবাস। তবে সম্ভবত জেরুজালেমের কোথাও হতে চলেছে এই সাক্ষাৎ। ৯ বছর আগে মুম্বাইয়ের নরিম্যান হাউস থেকে কোনোমতে মোশেকে নিয়ে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন সান্দ্রা। সঙ্গে ছিলেন মোশের দাদু-দিদাও। ভেতরে তখনও চলছে জঙ্গিদের তাণ্ডব, গোলাগুলি। ঘরের একপাশে নিথর হয়ে পড়ে রয়েছেন মোশের বাবা-মা।
নিজের জীবন বিপন্ন করে যে ভাবে দুই বছরের মোশেকে সে দিন বাঁচিয়েছিলেন সান্দ্রা, তার জন্য ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে তাঁকে ইসরায়েলের নাগরিকত্ব দিয়ে সম্মান জানিয়েছিল এই দেশ। মোদির সঙ্গে দেখা হলে কী বলবেন মোশের দাদু-দিদা? তাঁরা বলছেন, ভারতীয় শিশুদের যেমন উপনয়ন হয়, তেমনই ইসরায়েলে বাড়ির ছেলে ১৩ বছরে পড়লে একটি অনুষ্ঠান হয় যাকে বলে বার-মিৎসবা। তিন বছর পরে আমরা মোশের সেই অনুষ্ঠানটি মুম্বাইয়ে গিয়ে করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সেখানে আমন্ত্রণও জানাতে চাই। ইয়েহুদিত বলে চলেন, আমাদের এখনও মনে হয় মুম্বাইয়ে আমাদের একটা বাড়ি আছে। ওখানে পরিবার আছে আমাদের।
নরিম্যান হাউসে (যা লোকমুখে পরিচিত চাবাড নামে) মোশের বাবা-মা রিভকা এবং গাব্রিয়েল হোলৎসবার্গ ইজরায়েলের কূটনৈতিক প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২৬/১১-য় আরও ছয়জন ইহুদির সঙ্গে জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারান তাঁরা। ১০ বছরের মোশে এখন স্কুলে যায়। ন্যানি সান্দ্রার সঙ্গে এখনও যোগাযোগ রয়েছে তাদের। সান্দ্রা ছোট শিশুদের নিয়ে কাজ করেন জেরুজালেমে। সপ্তাহান্তে চলে আসেন রোসেনবার্গ পরিবারের কাছে। মোশে ন্যানিকে দেখলেই মহাখুশি, বলছেন তার দাদু।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন