সেই রাতে আরও ৩ জনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটিয়েছিল ধর্ষক সাফাত
বনানীর রেইনট্রি হোটেলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের রাতে আরও তিন তরুণীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটিয়েছিল সাফাত আহমেদ। এজন্য শরীরে শক্তি বাড়াতে আগে ইয়াবা সেবন করে নেয়। শুধু তাই নয়, এমন আরো অনেক তরুণীর সঙ্গে সময়ে-অসময়ে মিলিত হতো। রিমান্ডে থাকা বনানীর নির্যাতন মামলার প্রধান আসামি সাফাত গোয়েন্দাদের নানা তথ্য দিচ্ছে। পুলিশকে জানিয়েছে, তার অগণিত বান্ধবীর কথা। যাদের সঙ্গে সময়ে-অসময়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে মিলিত হতো সাফাত ও বুধবার রাতে মুন্সীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার হওয়ার তার বন্ধু নাঈম আশরাফ।
জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, বান্ধবীদের সবাই মডেল, উপস্থাপক, অভিনেত্রী, শিল্পী কিংবা সুন্দরী তরুণী। তবে শুধু সাফাত নিজে নয়, তার বেপরোয়া জীবনযাপন সম্পর্কে গাড়িচালক বিল্লালও চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে বলে জানা গেছে। সেই সঙ্গে সাফাতের বডিগার্ড রহমতের কাছ থেকে ওই রাতের ঘটনার সত্যতা পেয়েছে গোয়েন্দারা।
এর আগে, সোমবার রাতে সাফাত আহমেদ ও তার গাড়িচালক বিল্লালকে কিছু সময়ের জন্য মুখোমুখি করেছিলেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। তখন সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল জানান, সেই রাতে সাফাত আহমেদ নিজেই বিল্লালকে উপরের রুমে ডেকে নেন। এসময় সাফাত আহমেদ তাকে (বিল্লাল) বাথরুম সংলগ্ন ড্রেসিং রুমে গিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের চিত্র ভিডিও করতে বলেন।
বিল্লাল আরও জানায়, সাফাত এবং তার বন্ধু পলাতক নাঈম আশরাফ যখন দুই তরুণীকে নির্যাতন করেন, তখন পুরো দৃশ্য সে (বিল্লাল) মোবাইল ফোনে ধারণ করেছিল। পরে এ ঘটনায় মামলা দায়ের ও মিডিয়ায় একের পর এক খবর ছাপা হতে থাকলে সাফাতের নির্দেশেই তিনি (বিল্লাল) ওই ভিডিও ডিলিট করে দেয়।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, ঘটনার রাতে অস্ত্র নিয়েই হোটেলটিতে (দ্য রেইনট্রি) প্রবেশ করেছিলেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন সাফাতের বডিগার্ড রহমত আলী। পুলিশ ইতিমধ্যেই গাড়িচালক বিল্লালের ওই মোবাইল ফোনটি জব্দ করেছে। একই সঙ্গে ডিলেট করা ওই ভিডিও পুনরুদ্ধারের জন্য তদন্ত সংশ্লিষ্টরা সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে পাঠিয়েছে।
নির্যাতনের আগে ভিডিও ধারণের কথা স্বীকার করে গত রবিবার সাফাত আহমেদ গোয়েন্দাদের জানিয়েছিল, অভিযোগকারী দুই ছাত্রীর সঙ্গে আসা শাহরিয়ার নামে এক চিকিৎসককে মারধরের দৃশ্য তারা ভিডিও করেছে। আর নির্যাতন করার আগে গাড়ি চালক বিল্লাল হোসেন ওই দুই ছাত্রীর সঙ্গে তাদের ওঠাবসার দৃশ্য ভিডিও করেছেন। তবে এর বাইরে নির্যাতন করার সময় সেই দৃশ্য গাড়িচালক ভিডিও করেছে কি না তার জানা নেই।
যদিও রেইনট্রি হোলেটের ৭০১ নম্বর কক্ষে মোবাইল ফোনে ভিডিও করার দৃশ্য এখনও পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি।
প্রসঙ্গত, ২৮ মার্চ বন্ধুর সঙ্গে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়ে বনানীর ‘দ্য রেইনট্রি’ হোটেলে নির্যাতনের শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই তরুণী। ওই ঘটনায় ৬ মে রাজধানীর বনানী থানায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ (সিরাজগঞ্জের আবদুল হালিম) ও সাদমান সাকিফসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তারা। যাদের সবাইকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। এদের মধ্যে বুধবার রাতে মুন্সীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার হওয়া নাঈম আশরাফ ছাড়া বাকিরা সবাই রিমান্ডে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন