সৈয়দ আব্দুল্লাহ সংবর্ধনা উদযাপন কমিটি গঠন

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উপর ঐতিহাসিক রাজনৈতিক দলিল “সিলেটে বঙ্গবন্ধু’ গ্রন্থ রচনা করায় বাহুবলের গর্বিত কৃতি সন্তান, বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান ইতিহাসবিদ, জাতীয় ইতিহাসবেত্তা, বঙ্গবন্ধু গবেষক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক তরফরত্ন সৈয়দ আব্দুল্লাহকে এক বর্ণাঢ্য নাগরিক সংবর্ধনা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।এলক্ষে গতকাল সন্ধ্যা ৭ঘটিকায় বাহুবল উপজেলা চেয়ারম্যান এর বাসভবনে এক সভা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো আব্দুল হাইর সভাপত্তিত্বে বাহুবল প্রেসক্লাব সভাপতি সৈয়দ আব্দুল মান্নান এর পরিচালনায় অনুষ্টিত হয়। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে বাহুবল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো আব্দুল হাইকে আহব্বায়ক, সাপ্তাহিক হবিগঞ্জ সংবাদের সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুহেল আহমদ কুটিকে যুগ্ম আহব্বায়ক ও জাতীয় শ্রমিক লীগ বাহুবল উপজেলা সাধারন সম্পাদক সৈয়দ এনামুল হককে সদস্য সচীব করে উপজেলার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সমন্নয় ৩৫সদস্য বিশিষ্ট “তরফরত্ন সৈয়দ আব্দুল্লাহ সংবর্ধনা উদযাপন কমিটি” গঠন করা হয়। আগামি ২৮ মার্চ বুধবার বাহুবল উপজেলা মাঠে বাংলাদেশ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ ও জাতীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে এই বর্নাঢ্য সংবর্ধনা প্রদান করা হবে।

উল্লেখ্য যে, বাংলা সাহিত্যের খ্যতিমান ইতিহাসবিদ, পুরাতত্ব গবেষক, বহু কালজয়ী গবেষনা গ্রন্থের লেখক, শেকড় সন্ধানী সাহিত্যিক, তরফরত্ন সৈয়দ আবদুল্লাহ আজীবন বাহুবলের এক নিভৃত গ্রামে বাস করেও এদেশে বাংলা সাহিত্য ভূবনে আলো ছড়াচ্ছেন যে কয়জন মনীষাদীপ্ত গুনীজন সৈয়দ আব্দুল্লাহ তাদের মাধ্যে অন্যতম। ৬৯ এর গনআন্দোলন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক হিসাবে তিনি পরিচিত। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখালেখি ও গবেষনা করছেন দীর্ঘদিন ধরে। ১৭৫৭সালের পলাশি যুদ্ধ থেকে শুরু করে ৭১’র মুক্তিযোদ্ধ পর্যন্ত জাতীয় জীবনের সকল স্বাধীনতা সংগ্রাম নিয়ে তিনি প্রবন্ধ ও গ্রন্থ রচনা করেছেন।

হবিগন্জ জেলার বাহুবল উপজেলার নিভৃত পল্লী উত্তরসুর গ্রামে আজীবন বাস করে বাংলা রম্য গদ্যের স্বার্থক নির্মাতা বহুভাষাবিদ পণ্ডিত ড. সৈয়দ মুজতবা আলীর রক্তধারার এই কর্মবীর মানুষটি কাজ করেছেন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। ইতিহাস গবেষনায় পেয়য়েছেন জাতীয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বহু স্বীকৃতি। পেয়েছেন এশিয়া প্রেস ফাউন্ডেশনের এশিয়ার সেরা একশো পন্ডিত মনীষীর স্বীকৃতি। বিএনএসএ ইইংল্যান্ড আন্তর্জাতিক স্বর্ণ পদক। বিশ্বকোষ ও ওয়াল্ড মিডিয়াতে তার জীবনী স্থান করে নিয়েছে। লিখেছেন গবেষনালব্দ ইতিহাস ঐতিহ্য মুক্তিযুদ্ধ ও আত্নজীবনীমূলক বিশটি গ্রন্থ। সম্প্রতি লিখেছেন সাড়া জাগানো গবেষনা গ্রন্থ “সিলেটে বঙ্গবন্ধু”।

সৈয়দ আব্দুল্লাহ’র গবেষনার বড় একটা দিক মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের স্থপতি মুসলিম কবি ও আরকান রাজসভা। মহাকবি সৈয়দ সুলতান আরকানের প্রধান মন্ত্রী কবি সৈয়দ মুসা, মহাকবি কোরাইশ মাগন ঠাকুর, কবি শেখ চান্দ, মহাকবি আলাওয়াল, সিলেটের নাগরি লিপি, হযরত শাহজালাল বিষয়ক তার গবেষনা ইতিহাস গবেষকদের কাছে ব্যাপক সমাদৃত। অনাদর অবহেলায় আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত পল্লীর নিভৃত কোনের এক পাড়া গায়ে আজীবন পড়ে থাকা আমাদের এই মনীষী কেবল নিরলস সাধনার ধারা আজ আপন মহিমায় দেশ বিদেশে খ্যাত।

তার লিখিত গবেষনা গ্রন্থ “রক্তস্নাত পলাশী” উভয় বাংলায় সমানভাবে জনপ্রিয়। এক সময় সরকারি চাকুরি করতেন। পেনশের সব টাকা দিয়ে সাহিত্য পাগল এই মানুষটি বেশ কয়েকটি গবেষনা গ্রন্থ প্রকাশ করে জাতীকে চির ঋনে আবদ্ধ করে রেখেছেন।

সাহিত্যের পাশাপাশি তিনি একজন দক্ষ সাহিত্য সংগঠক। ঐতিহ্যবাহি তরফ সাহিত্য পরিষদের তিনি প্রতিষ্টাতা সভাপতি। ঢাকা সিলেটের বহু সাহিত্য গবেষনা প্রতিষ্টানের সাথে জড়িত। একসময় বাংলা একাডেমির ফলো ছিলেন। কাজ করেছেন, বিশ্বকোষ, এশিয়াটিক সোসাইটির বাংলা মিডিয়ার মতো অনেক গবেষনা প্রতিষ্টানের সাথে। তার জীবন কর্ম নিয়ে কাজ করেছে সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্টান “তরফরত্ন ফাউন্ডেশন”। তাঁর জীবন কর্মের উপর দীর্ঘ প্রমান্যচিত্র তৈরি করেছে ব্রিটেনের আন্তর্জাতিক গনমাধ্যম “চ্যনেল এস”। গতবছর সিলেট সিটি কর্পোরেশন এর সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানসহ সিলেটবাসী নিভৃতচারী শেকড় সন্ধানী এই গুনী লেখককে একুশে পদকে ভুষিত করার জোড় দাবী জানান।