‘সৌদির রাজ পরিবারকে যতোটা ভদ্র মনে করা হয়, বাস্তবতা উল্টো’

সৌদি আরবের রাজ পরিবারের সদস্যরা এখন নানান অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছেন। এতদিন না থাকলেও বর্তমানে সৌদি আরবের রাজ পরিবারে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব অনেকটা প্রকাশ্যে চলে এসেছে।

ব্যবসায়ী বিলিনিয়র আলওয়ালিদ বিন তালালসহ ১১ যুবরাজ, চার মন্ত্রী এবং সাবেক আরও ১০ মন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনার পরপর ইয়েমেন সীমান্তের কাছে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হয়েছেন এক যুবরাজ।

এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে বোমা ফাটিয়েছেন দুর্নীতির দায়ে সম্প্রতি আটক হওয়া সৌদি যুবরাজ আল ওয়ালিদ বিন তালালের স্ত্রী আমিরা বিনতে আইডেন বিন নায়েফ। জানিয়েছেন, সৌদির রাজ পরিবারকে বাইরে থেকে যতোটা ভদ্র ও ধর্মভীরু বলে মনে হয়, বাস্তবতা সম্পূর্ণ উল্টো। এক কথায় বলতে গেলে এহেন কোনো অপকর্ম নেই যা তারা করেন না।

আমিরা জানান, জেদ্দা শহরকে এরা দাস বাজারে পরিণত করেছেন। সেখানে অল্প বয়সী নারী বিক্রি থেকে শুরু করে মদ, সেক্স পার্টির মতো সব রকম ব্যভিচারই হয়ে থাকে। পুলিশ এসবের ব্যাপারে অবহিত থাকলেও শুধুমাত্র চাকরি হারানোর ভয়ে কোনো উদ্যোগ নেয় না। কেননা, শহরের সব অপরাধের পেছনে সৌদি রাজ পরিবারের সদস্যরা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।

সম্প্রতি হেলোউইন পার্টির উদাহরণ তুলে আমিরা বলেন, সেই পার্টিতে সর্বসাকুল্যে দেড়শ’ মানুষ জড়ো হয়েছিলেন।
যাদের ভেতরে কূটনৈতিক কর্মকর্তারাও ছিলেন। সেখানে সেদিন যা হয়েছে তা বাইরের দেশের কোনো নাইট ক্লাবের থেকে আলাদা ছিল না। সৌদি আরবে মদ নিষিদ্ধ হলেও সেই পার্টিতে তরল পদার্থটির বন্যা বয়ে গিয়েছিল। সেই ডিজে পার্টিতে ওয়াইন, জুটিদের নাচ, নানান ধরনের পোশাক পরা সবই হয়েছিল।

সৌদি আরবে দাসপ্রথা এখনও রয়েছে জানিয়ে আমিরা বলেন, রাজপরিবারের কিছু সুবিধাভোগী ব্যক্তি সেখানে দাস বিক্রি করে থাকেন। আর এসব দাস বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আনা হয় শ্রীলংকা, বাংলাদেশ, ফিলিপাইন, সোমালিয়া, নাইজেরিয়া, রোমানিয়া এবং বুলগেরিয়া থেকে। যেসব শিশুকে এখানে বিক্রি করা হয় তারা কখনই মালিকের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোথাও যেতে পারে না। এমনকি এশিয়ার দাসীরা প্রায় ক্ষেত্রেই নিজেদের বন্দি বলেই মনে করেন। তাদের উপর যৌন নিপীড়ন চালানো হয়।

উল্লেখ্য, আমিরা তালালের সাবেক স্ত্রী, যুবরাজের কর্মকাণ্ডের কারণে আগেই সম্পর্ক ত্যাগ করেছেন।