সৌদি জোটের ১৩ শর্তের জবাব দিল কাতার

সৌদি আরব ও এর মিত্র দেশগুলোর বেঁধে দেয়া ১৩ দফা শর্তের জবাব দিয়েছে কাতার। সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন ও ইরান ঘনিষ্ঠতার অভিযোগসহ ওই ১৩ শর্তের জবাবের জন্য কাতারকে ১০ দিনের সময় দেয়া হয়েছিল। রোববার সেই সময় শেষ হওয়ার পর কাতারের অবস্থান জানাতে সৌদি নেতৃত্বাধীন সম্পর্কচ্ছেদকারী দেশগুলো দোহাকে আরও ৪৮ ঘণ্টার অতিরিক্ত সময় দেয়।

অবস্থান পরিষ্কার করতে ও অভিযোগের জবাব দিতে সোমবার কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতিবেশী কুয়েতে পৌঁছেছেন। সেখানে তিনি কাতারের অবস্থান তুলে ধরেছেন। কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কী ধরনের জবাব দিয়েছেন সে বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি।

তবে আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের এক কর্মকর্তা ফরাসী বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল-থানি কুয়েতে সংক্ষিপ্ত সফরে গিয়ে ১৩ শর্তের জবাব হস্তান্তর করেছেন। কাতারের সঙ্গে সৌদি নেতৃত্বাধীন ৪টি দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কচ্ছেদের জেরে মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে কুয়েত।

এদিকে সোমবার সকালের দিকে কুয়েতের অনুরোধে কাতারের জবাব জানতে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিসর গত ২২ জুন যে ১০ দিনের সময় দিয়েছিল তা আরও ৪৮ ঘণ্টা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এক যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, রোববার আল্টিমেটামের সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় কুয়েতি আমিরের অনুরোধে তারা আল্টিমেটামের সময় বাড়িয়েছেন।

সৌদি জোটের দেয়া ১৩ দফা শর্তের অন্যতম হচ্ছে মিসরের নিষিদ্ধ রাজনৈতিক সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুডকে সমর্থন দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে দোহাকে। একই সঙ্গে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ, ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক কমিয়ে আনা এবং দোহায় তুরস্কের যে সামরিক ঘাঁটি আছে তা বন্ধ করতে হবে।

এর আগে কাতারের এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৩ দফা শর্তের তালিকা প্রত্যাখ্যান হওয়ার জন্যই তৈরি করেছে সৌদি জোট। গত ৫ জুন সৌদি আরব ও এর মিত্র দেশগুলো উপসাগরীয় প্রতিবেশি কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দেয়। এর জেরে গত দশকের মধ্যে নজিরবিহীন কূটনৈতিক সংকট দেখা দেয় মধ্যপ্রাচ্যে।

কাতারে বিরুদ্ধে চরমপন্থা সমর্থন ও সৌদি আরবের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরান ঘণিষ্ঠতার অভিযোগ আনা হয়। তবে কাতার এ অভিযোগ প্রত্যাখান করে আসছে। ওই অঞ্চলের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনায় উদ্বেগ দেখা দেয় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও। বিশ্ব বাজারে সর্বোচ্চ জ্বালানি সরবরাহ হয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে। এছাড়া পশ্চিমা বেশ কয়েকটি মিত্র দেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিও রয়েছে।