স্কুলছাত্রীর সঙ্গে রাস্তায় কথা বলায় কিশোরকে এমন শাস্তি!
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় পারভেজ হোসেন (১৪) নামের এক কিশোরের ওপর অমানুষিক নির্যাতন করে দুর্বৃত্তরা। প্রায় একদিন নির্যাতন করার পর রাস্তার ধারে পারভেজকে ফেলে রাখা হয়। গায়ে মল-মূত্র মাখা অবস্থায় অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় বাসিন্দারা।
এই ঘটনায় সোমবার পারভেজের মা পারভিনা খাতুন কালীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। পারভিনার অভিযোগ, ওই ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা দায়ী এবং থানায় মামলা নিতে এতদিন গড়িমসি করা হয়েছে।
পারভেজ বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পারভেজ মাগুরার শালিখা উপজেলার সীমাখালীর পিয়ারপুর গ্রামের বাসিন্দা। তবে তারা কালীগঞ্জ উপজেলার দামোদরপুর গ্রামে পারভেজের নানা জিল্লুর রহমানের বাড়িতে থাকে। পারভেজের বাবার নাম শিমুল হোসেন। পারভেজের মা ও বাবা দুজনই শ্রমিক।
পারভিনা খাতুন অভিযোগ করেন, আজিজুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির মেয়ের সঙ্গে কথা বলায় পারভেজকে এভাবে মারধর করে ফেলে রাখা হয়। আজিজুল ইসলাম আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে নেতা হিসেবেই চেনেন। আজিজুলের মেয়ে স্থানীয় একটি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে।
পারভিনা খাতুন জানান, পারভেজ ও তার চাচাতো ভাই নাজমুল গত ২২ জুন বিকেল ৫টার দিকে কালীগঞ্জের দাসবায়সা গ্রামের আজিজুল ইসলামের মেয়ের সঙ্গে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলছিল। এ সময় আজিজুল ও তাঁর লোকজন এসে পারভেজকে মারধর করে ধরে নিয়ে যান। চাচাতো ভাই নাজমুল পালিয়ে এসে বাড়িতে এ খবর দেয়। পরিবারের লোকজন দাসবায়সা গ্রামে গিয়ে পারভেজকে খুঁজে না পেয়ে ফিরে আসে।
পারভিনা বেগম আরো জানান, আজিজুল ও তাঁর লোকজন অমানুষিক নির্যাতন করে পরের দিন দুপুর ১২টার সময় ফোনে পারভেজকে পাওয়া গেছে বলে খবর দেন।
ঘটনাস্থলে গিয়ে পারভেজকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। তার শরীরে মলমূত্র মাখানো ছিল। ওই দিনই প্রথমে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় পারভেজকে। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে সেখান থেকে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পারভিনা জানান, ঘটনার প্রায় সাতদিন পর পারভেজের চেতনা ফেরে। কয়েক দফা অস্ত্রোপচারও করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
পারভিনা জানান, পারভেজের যৌনাঙ্গে পেরেক দিয়ে আঘাত করে তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেছেন, ‘আজই পারভেজ হোসেনের মা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। এ মামলায় আটজনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের ধরার চেষ্টা চলছে।’
একটি মেয়ের সঙ্গে কথা বলার কারণেই পারভেজের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে বলে জানান ওসি আমিনুল। মারধরের ঘটনা সত্য হলেও পারভেজের পুরুষাঙ্গে পেরেক দিয়ে আঘাত করার বিষয়টি সত্য নয় বলে দাবি করেন তিনি।
এদিকে ঘটনা জানাজানির পর এবং মামলা দায়েরের পর আজিজুল ইসলামকে এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে না।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন